× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা

খালাসের পর মুক্তির অপেক্ষায় বাবর

পারভেজ খান

প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:০৭ এএম

গ্রাফিক্স : প্রতিদিনের বাংলাদেশ

গ্রাফিক্স : প্রতিদিনের বাংলাদেশ

চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ পাঁচজন খালাস পেয়েছেন। একই মামলায় সাজা কমেছে উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়াসহ পাঁচজনের।

গতকাল মঙ্গলবার বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। প্রায় সাড়ে ১৭ বছর আগে গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপি নেতা বাবরের বিরুদ্ধে এটিই ছিল সবশেষ মামলা। ফলে আলোচিত এই মামলায় খালাসের পর তার এখন মুক্তি পেতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। অপরদিকে বাবরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও আইনজীবী শিশির মনির।

রায়ের পর লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘কোর্ট বলেছেন, একটি অ্যাডভান্স অর্ডার সই করে দেবেন। আমি আশা করি, আজই এই আদেশ পৌঁছানো হবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে তিনি জেল থেকে মুক্তি পাবেন। বাবর কেরানীগঞ্জ কারাগারে আছেন।’ 

বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ২০০১ সালে সরকার গঠন করার পর যে ক’জন ব্যক্তি নিজ গুণ আর পারদর্শিতা দেখিয়ে প্রবল ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন, তাদের মধ্যে লুৎফুজ্জামান বাবর ছিলেন অন্যতম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন তিনি। 

তবে দল আর দলের বাইরে গ্রহণযোগ্যতার মানদণ্ডে বাবর ছাপিয়ে গিয়েছিলেন তার দপ্তরের পূর্ণ মন্ত্রীকেও। ২০০৭ সালের ২৮ মে জরুরি অবস্থা চলাকালীন অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার জন্য গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই থেকে শুরু তার কারাগারের অন্ধকারে বসবাস। মাঝে বেশ কিছুদিন গুরুতর অসুস্থও ছিলেন তিনি। কিছুটা অসুস্থ এখনও। 

টানা এই সাড়ে ১৬ বছরের অধিক সময়ের বন্দিজীবনের অবসান ঘটিয়ে মুক্তির অপেক্ষায় বিএনপির এই নেতা। তার মুক্ত বাতাসে বেরিয়ে আসাটা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। 

আদালত সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় হাইকোর্ট বেঞ্চের আপিল শুনানি শেষে যাবজ্জীবন সাজা থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপি নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। গতকাল দুপুরে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরীন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন। 

রায়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর ছাড়া আরও চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- মহসীন তালুকদার, এনামুল হক, রেজ্জাকুল হায়দার ও নুরুল আমিন। তবে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ পাঁচজনের সাজা কমানো হয়েছে। গতকালের রায়ে পরেশ বড়ুয়াকে ১৪ বছর এবং আকবর হোসেন, লিয়াকত হোসেন, হাফিজুর রহমান ও শাহাবুদ্দিনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া মৃত্যুজনিত কারণে আপিল অ্যাবেটেড মতিউর রহমান নিজামী, দীন মোহাম্মদ, আব্দুর রহিম ও হাজি আব্দুস সোবহানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে রায়ে আদালত ১৪ আসামির মধ্যে পাঁচজনকে সাজা, পাঁচজনকে খালাস ও চারজন মারা যাওয়ায় তাদেরকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

বহুল আলোচিত এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর গত ৬ নভেম্বর শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষ প্রয়োজনীয় নথি উপস্থাপনের পর যুক্তি উপস্থাপন করেন। এরপর আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গতকাল এই রায় দেন।

খালাস পেলেন পাঁচজন

খালাসপ্রাপ্ত পাঁচজন হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার, তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব নুরুল আমিন।

মৃত চারজনের আপিলের পরিসমাপ্তি

এই মামলার আসামি মতিউর রহমান নিজামী খালাস পেয়েছেন। মারা যাওয়ায় তার আপিল অ্যাবেট (পরিসমাপ্তি) ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। মূল বিষয়বস্তু বিবেচনা করে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামীকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তবে অন্য মামলায় নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় এ মামলাটি তার ক্ষেত্রে বাদ (অ্যাবেটেড) হয়ে গেলেও অর্থদণ্ড থেকে যায়। হাইকোর্ট গতকাল নিজামীকে সেই অর্থদণ্ড থেকেও খালাস দিয়েছেন। 

নিজামী ছাড়া মারা যাওয়ার কারণে আরও তিনজনের আপিল অ্যাবেট (পরিসমাপ্তি) ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। তারা হলেন- এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রহিম, শ্রমিক সরবরাহকারী দ্বীন মোহাম্মদ ও ট্রলারমালিক হাজি সোবহান।

তবে মৃত্যুর কারণে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহীমের অর্থদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। অর্থদণ্ডের দায় নিয়ে কোনো আসামির মৃত্যু হলে সেই আসামির পরিবারকে তা পরিশোধ করতে হয় বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

সাজা কমল পাঁচজনের 

বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন পাওয়া ১৪ জনের মধ্যে পরেশ বড়ুয়াসহ পাঁচজনের সাজা কমানো হয়েছে। পরেশ বড়ুয়ার সাজা এখন ১৪ বছর করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও চারজন আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। তারা হলেন- জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তৎকালীন মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, এনএসআইয়ের সাবেক উপ-পরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, তৎকালীন পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ ও হাফিজুর রহমান।

বাবর মুক্তি পাবেন কখন?

বাবরের খালাস পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তার আইনজীবী শিশির মনির জানান, ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় দায়ের করা চোরাচালান মামলায় গত ১৮ ডিসেম্বর খালাস পান তিনি। এবার খালাস পেলেন অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায়। ফলে বাবরের মুক্তিতে এখন আর আইনগত কোনো বাধা নেই। 

তবে গতকাল বিকালে কারা অধিদপ্তর জানিয়েছে, আদেশের কপি না পাওয়ায় তিনি আজ মুক্তি পাচ্ছেন না। 

আলোচিত সেই মামলা

২০০৪ সালের ১ এপ্রিল। চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাক ভর্তি অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে অস্ত্র চোরাচালানের অভিযোগে দুটি মামলা হয়। মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। 

এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী (অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় একই আসামিদের।

অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া অন্য মামলাতেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পান একই আসামিরা। এ ছাড়া অস্ত্র আটক মামলার অপর ধারায় সাত বছর কারাদণ্ড দেন বিচারক। সে সময় দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।

মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অন্য ১১ জন ছিলেন- এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম, ডিজিএফআইর সাবেক পরিচালক (নিরাপত্তা) অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার সাহাবুদ্দিন আহমেদ, এনএসআইর সাবেক উপ-পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, এনএসআইর সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসিন উদ্দিন তালুকদার, সিইউএফএলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কেএম এনামুল হক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্প সচিব নুরুল আমিন, চোরাচালানি হিসেবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান, অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দীন মোহাম্মদ ও ট্রলার মালিক হাজী আবদুস সোবহান।

পরে নিয়ম অনুযায়ী, ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি কারাবন্দি আসামিরা আপিল করেন। এরপর পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়।

আদালতে আসামি পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, মোহাম্মদ আহসান প্রমুখ শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান।

পরেশ বড়ুয়া কোথায়?

আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ভারতের আসাম রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা)-এর সামরিক শাখার প্রধান পরেশ বড়ুয়ার সাজা কমিয়ে ১৪ বছর করা হয়েছে। এর আগের রায়ে ছিল যাবজ্জীবন এবং প্রথম রায়ে তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। তবে বহুল আলোচিত এই পরেশ বড়ুয়াকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। 

পরেশ বড়ুয়ার অবস্থান কোথায় এবং তিনি কীভাবে আছেন তার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর কাছে। তবে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ধারণা করছে, উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়া বর্তমানে তিব্বত অঞ্চলে বা চীনের সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করছেন।

গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের মতে, পরেশ বড়ুয়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সেভাবে কখনই অবস্থান করেননি। বেশিরভাগ সময় কেটেছে নিজ জন্মভূমি আসামসহ মিয়ানমার ও চীনের সীমান্তবর্তী এলাকায়। ২০১৮ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় পরেশ বড়ুয়া মারা গেছেন বলে তথ্য ছড়িয়েছিল। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে সে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করলেও পরবর্তী সময়ে সেটা সঠিক নয় বলে খবর মেলে। উলফার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া নিজেই সে সময় গণমাধ্যমকে বিষয়টি পরিষ্কার করেছিলেন।

আইনজীবীরা যা বলছেন

রায় ঘোষণার পর আসামি পক্ষের আইনজীবী এস এম শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলার শুরু থেকেই আদালতে প্রশ্ন তুলেছি- ১০ ট্রাক অস্ত্র কোত্থেকে এসেছে, কোথায় যাচ্ছিল এবং এগুলোর বাহক কারা? যদি চোরাচালানের অস্ত্র হয়ে থাকে তবে আইন অনুযায়ী প্রমাণ দেখাতে হবে। এর পেছনের আর্থিক লেনদেন দেখাতে হবে। কিন্তু এখানে বিচারিক আদালত রায়ে বলেছেন, অস্ত্রগুলো পার্শ্ববর্তী কোনো দেশে পাচার করার জন্য আনা হয়েছিল। যা-ই হোক, হাইকোর্টের কাছে ন্যায়বিচার পেয়েছি।’ 

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মতো এ মামলাতেও একাধিক তদন্ত হয়েছে জানিয়ে এই আইনজীবী বলেন, ‘অস্ত্রগুলো কারা এনেছে, এটা প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।’

লুত্ফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘দ্বিতীয় তদন্তের ভিত্তিতে তাকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছিল। হাইকোর্ট তাকে খালাস দিয়েছেন। আদালত বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ কেউ হাজির করতে পারেনি।’

অপেক্ষায় ভাটি এলাকার মানুষ

মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী- এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত নেত্রকোণা-৪ সংসদীয় আসন। এই আসন থেকে পঞ্চম, যষ্ঠ ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও অতি-জনপ্রিয় ব্যক্তি হিসেবে এলাকাবাসীর নয়নমণি হয়ে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। 

স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল রায় ঘোষণার পর এই খবর প্রচার পেলে নেত্রকোণার জেলাজুড়ে গ্রাম-মহল্লা, হাট-বাজার, বিশ্ববিদ্যালয়, ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ইনস্টাগ্রাম থেকে শুরু করে সব মহলে বা প্ল্যাটফর্মে চলছে একটাই আলোচনা। কবে এলাকায় ফিরবেন তাদের অতি আপনজন বাবর ভাই। 

এলাকাবাসীর মতে, বাবরের এই জনপ্রিয়তা প্রমাণ করেছে উনি সঠিক পথের পথিক ছিলেন এবং উনি একজন রাজনীতিবিদ। তিনি হচ্ছেন ভাটি বাংলার প্রবাদপুরুষ। মামলা থেকে খালাসের খবর জানতে পেরে এলাকাবাসীর মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। ঘরে ঘরে চলছে মিষ্টি বিতরণ। 

সাম্প্রতিক

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ডেথ রেফারেন্স নাকচ করে এবং আসামিদের আপিল মঞ্জুর করে এই রায় দেওয়া হয়। 

ফলে ওই মামলায় দণ্ডিত সব আসামির সঙ্গে লুৎফুজ্জামান বাবরও খালাস পান। এরপর গত ১৮ ডিসেম্বর ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় দায়ের করা চোরাচালান মামলাতেও খালাস পান তিনি। ২০২১ সালেও একটি দুর্নীতির মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবরকে আট বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। ওই মামলা থেকেও খালাস পান বাবর।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা