প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১০:২৭ এএম
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১১:১০ এএম
ফাইল ফটো
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও বিশিষ্টজনদের করা তিনটি আবেদন শুনানির জন্য ১৭ নভেম্বর তারিখ ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে সময় আবেদন করে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে যথাযথ প্রস্তুতির জন্য চার সপ্তাহ সময় প্রয়োজন। তাই আদালত আবেদনকারী আইনজীবীদের মতামত নিয়ে শুনানির জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
আদালতে রিভিউ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ড. শরীফ ভুঁইয়া, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনতে তিনটি পৃথক রিভিউ আবেদন দায়ের করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন দায়ের করেন।
এদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনসংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধন বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি রিভিউ আবেদনের শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।
গত ১৬ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনসংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধন বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এদিকে গত আগস্টে ত্রয়োদশ সংশোধন বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার পৃথক রিভিউ আবেদন দায়ের করেন।
২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধন অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে পরবর্তী দশম ও একাদশ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আদালত। রায়ে বলা হয়, এ ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
আদালত তার রায়ে বলেন, আপিল বিভাগের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই আবেদনটি গৃহীত হয়েছে। এর মাধ্যমে সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধন) আইন, ১৯৯৬ এ নির্দেশের পর থেকে অবৈধ ও সংবিধানবহির্ভূত ঘোষণা করা হলো। তবে আইনসম্মত না হলেও (প্রয়োজনের কারণে আইনসম্মত এবং জনগণের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন---সুপ্রাচীনকাল ধরে চলে আসা নীতিমালার ভিত্তিতে) দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করা ত্রয়োদশ সংশোধনের আওতায়ই হতে পারে।
এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতিদের মধ্য থেকে অথবা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে একজনকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিধানটি বাতিল করার পূর্ণ স্বাধীনতাও সংসদের থাকবে। একই সঙ্গে ২০০৫ সালে এ প্রসঙ্গে দায়ের করা লিভ টু আপিলটিও খারিজ করা হলো।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধন জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন।