প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৫ ১৫:১৪ পিএম
সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন চার-পাঁচ বছর আগে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষাও শেষ বহু আগেই। কিন্তু এখনও চূড়ান্ত ফল না পেয়ে দিশেহারা নিয়োগপ্রত্যাশীরা। তাই দাবি আদায়ে দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
বুধবার (১৮ জুন) সকালেও মাউশির প্রধান ফটকের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান করতে দেখা গেছে তাদের। এর আগে মঙ্গলবার (১৭ জুন) থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ভবনের সামনে অনশন শুরু করেন প্রদর্শক, গবেষণা সহকারী (কলেজ), ল্যাবরেটরি সহকারী এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদের নিয়োগপ্রত্যাশীরা।
অনশনকারীদের একজন সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘২০২১ সালে পরীক্ষা দিয়েছি, এখন ২০২৫। এই চার বছরে কত কিছু পাল্টে গেছে। শুধু আমাদের অবস্থানই বদলায়নি। শুধু একটা ফলাফলের অপেক্ষায় জীবনটা আটকে গেছে।’
প্রদর্শক পদে আবেদন করা সুমাইয়া আফরিন বলেন, ‘আমার বাবা নেই। সংসার আমার ওপর নির্ভরশীল। ভাইভা শেষ হয়েছে প্রায় এক বছর, অথচ আজও কোনো ফল নেই। মানসিকভাবে আমরা ভেঙে পড়েছি।’
অবশ্য, দ্রুত ফল প্রকাশের দাবি জানিয়ে এরইমধ্যে আন্দোলনকারীরা লিখিতভাবেও মাউশিতে আবেদন জানিয়েছেন। তবে কোন সাড়া মেলেনি। তাই প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তারা।
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ২০২০ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ২০২১ সালে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ বিলম্বে ২০২৪ সালের এপ্রিলে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় এবং মে-জুনে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এখন ২০২৫ সালের জুন, কিন্তু এখনও কোনো চূড়ান্ত ফল নেই। এতে চাকরির বয়সসীমা পার হওয়ার শঙ্কায়ও পড়েছেন অনেকেই।
এর আগে, মঙ্গলবার সকাল থেকে চাকরিপ্রত্যাশীরা মাউশি ভবনের সামনে অবস্থান শুরু করেন। তারা প্ল্যাকার্ড হাতে শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানান চূড়ান্ত ফল প্রকাশের। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস বা পদক্ষেপ না পেয়ে দুপুর থেকে তারা আমরণ অনশনে বসেন। পরে, সন্ধ্যা ৭টার দিকে অনশনরত এক ফলপ্রত্যাশী মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ জানান।
এসময় তারা অভিযোগ করেন, গত চার বছরে বিভিন্ন সময় মাউশির তৎকালীন মহাপরিচালক, কলেজ প্রশাসন ও উইংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর বা সমাধান পাওয়া যায়নি। চূড়ান্ত ফল প্রকাশ নিয়ে বছরের পর বছর ঝুলে থাকার কারণে অনেকের বয়স এখন চাকরির বয়সসীমা অতিক্রম করে যাচ্ছে। তাই প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তারা।