× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দেশে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভ

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৪ ১৭:২৯ পিএম

আপডেট : ০৪ মে ২০২৪ ১৯:২৯ পিএম

ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ২৯ এপ্রিল অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তোলা। ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ২৯ এপ্রিল অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তোলা। ছবি : সংগৃহীত

গাজায় দ্রুত যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বিক্ষোভের সূচনা হয়েছে তা দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, কানাডা, ভারত ও লেবাননে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। 

নিউইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পোর্টল্যান্ড স্টেট ও ইউসিএলএ বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ চড়াও হলে তা সবার মনোযোগ কাড়ে। অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দেশটির নেতারাও। পরিস্থিতি সমাল দিতে হিমশিম খাওয়া পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন দুই হাজার জনেরও বেশি। 

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা শুরু হওয়ার কয়েক মাসের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গত ১৮ এপ্রিল বিক্ষোভ শুরু হয়। ১৯৬০ এর দশকে দেশটির বিশ্ববিদ্যালগুলো সর্বশেষ এত বড় শিক্ষার্থী বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল। প্রায় দুই দশকের ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে সেই বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা যুদ্ধবন্ধের আহ্বান জানাচ্ছেন। তা ছাড়া তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইসরায়েলকে সহায়তাকারী কোম্পানিগুলোর অনুদান গ্রহণ বাতিলেরও দাবিও তুলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যুদ্ধবন্ধের দাবিতে যে বিক্ষোভ চলছে, সেগুলোর আয়োজকদের কয়েকটি ইহুদি শিক্ষার্থীদের। বিক্ষোভ আয়োজকদের দাবি, তাদের প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ। ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষার জন্য এ আন্দোলন। 

তবে বিক্ষোভে মাঝে-মধ্যে ইহুদিবিরোধী স্লোগান শোনা গেছে। কিন্তু তা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। তা সত্ত্বেও চলমান আন্দোলনকে ইহুদিবিদ্বেষমূলক বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ দেশটির একাধিক শীর্ষ রাজনীতিবিদ। সম্প্রতি শিক্ষার্থী বিক্ষোভ নিয়ে ‘সতর্ক’ মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন,  ‘সম্পদ নষ্ট করা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নয়। এটি আইনবিরোধী। ভাঙচুর, অনুপ্রবেশ, ক্যাম্পস বন্ধ রাখা, ক্লাস বন্ধ রাখতে চাপ প্রয়োগ করা-এগুলোর কোনটাই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নয়।’

অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ায় গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ ছড়িয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণপূর্বের মেলবোর্ন ও সিডনি, কেন্দ্রের অ্যাডিলেড এবং পশ্চিম উপকূলের পার্থ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। 

ব্রিসবেনের কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র ১০০ মিটার ব্যবধানে পরস্পর বিরোধী দুই পক্ষের শিক্ষার্থীদের অবস্থান দেখা গেছে। তাদের মধ্যে ফিলিস্তিনপন্থী শিবির জনবহুল।

গত শুক্রবার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইউনিভার্সিটি অব সিডনি) তাঁবু স্থাপন করে অবস্থান নেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। সেসময় তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

বিক্ষোভকারীরা অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও তার সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের দাবি, অস্ট্রেলিয়ান সরকার গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি।

অস্ট্রেলিয়ার বিরোধীনেতা ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদেরকে ‘বর্ণবাদী’ ও ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করেছেন।  

তবে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সহিংস দৃশ্য দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ায় তা ঘটেনি। 

যুক্তরাজ্য

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের শুরু থেকেই যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে কিছু শিবির স্থাপন করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলোর সামনের একটি লনে ফিলিস্তিনপন্থীদের একটি ছোট শিবির স্থাপন করা হয়েছে।

ইসরায়েলকে প্রতিরক্ষা সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীদারত্বের অবসান চান শিক্ষার্থীরা।

লিডস, ব্রিস্টল এবং ওয়ারউইকে বিশ্ববিদ্যালয় ভবনগুলোর বাইরেও তাঁবু বসিয়ে গাজায় যুদ্ধের প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা ইহুদি ছাত্র গ্রুপগুলোর সমালোচনার শিকার হচ্ছে।      

ফ্রান্স 

এপ্রিলের শেষের দিকে প্যারিসে সায়েন্সেস পো বিশ্ববিদ্যালয় ও সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভ শুরু হয়।

২৯ এপ্রিল ফরাসি পুলিশ দেশের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয় সরবোন থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। ভিডিওতে দেখা গেছে, কর্মকর্তারা দুইজন বিক্ষোভকারীকে তাঁবু থেকে বের করে মাটিতে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। 

সায়েন্সেস পোর শিক্ষার্থী লুইস সিএনএনকে বলেন, ‘আমরা কলম্বিয়া, হার্ভার্ড, ইয়েল, ইউএনসি, ভ্যান্ডারবিল্ট থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমাদের সংহতি সর্বাগ্রে ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে রয়েছে।’

ফ্রান্সের ইহুদি শিক্ষার্থীদের ইউনিয়নের সভাপতি স্যামুয়েল লেজোয়াক্স মতাদর্শগত বিভাজনের উভয় পক্ষের বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আরও সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন।

কানাডা 

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে কানাডার বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

মন্ট্রিয়লের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী ছাত্র বিক্ষোভকারীরা সামনের লনে একটি শিবির স্থাপন করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে মতো, শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সংস্থাগুলো থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার দাবি করছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে বলেছে, ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা কোনো সমাধানে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার পর তারা পুলিশের সহায়তা চেয়েছে।

ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরা টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাউনটাউন ক্যাম্পাস ও ভ্যাঙ্কুভারের ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির স্থাপন করেছে।

ভারত

কলম্বিয়ায় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএনইউ) বিক্ষোভ হয়েছে। ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটির প্রত্যাশিত ক্যাম্পাস পরিদর্শনের মধ্যেই এই বিক্ষোভ হয়।

২৯ এপ্রিল জেএনইউয়ের ছাত্র ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘জেএনইউ চত্বর ইসরায়েলের দ্বারা সংঘটিত সন্ত্রাসবাদ ও গণহত্যায় জড়িত দেশগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী প্রশাসন ও কর্মীদের জন্য কোনও প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করবে না।’ তারা কলম্বিয়ার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গেও একাত্মতা প্রকাশ করেছে।

লেবানন

এপ্রিলের শেষের দিকে শত শত শিক্ষার্থী লেবাননের ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে বিক্ষোভ করে। আর তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইসরায়েলে ব্যবসা করা কোম্পানিগুলোকে বয়কট করার দাবি জানায়। 

আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুতের শিক্ষার্থীদের গেটের বাইরে গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে। কিছু বিক্ষোভকারী জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসের বিক্ষোভকারীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

১৯ বছর বয়সী আলী আল-মুসলেম রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা পুরো বিশ্বকে দেখাতে চাই যে আমরা ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ ভুলে যাইনি। সচেতন ও সংস্কৃতিবান তরুণ প্রজন্ম এখনও ফিলিস্তিনিদের পক্ষে রয়েছে।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ১২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে এবং ২০০ জনেরও বেশি লোককে জিম্মি করে। এ হামলায় ইসরায়েলের সামরিক প্রতিক্রিয়া গাজায় একটি মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। যা বিশ্বব্যাপী জনগণকে উস্কে দিয়েছে।

সূত্র : সিএনএন 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা