গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদ
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০২ মে ২০২৪ ১৭:৪০ পিএম
আপডেট : ০২ মে ২০২৪ ১৭:৪১ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখোমুখি অবস্থানে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারী ও দাঙ্গা পুলিশ। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। অন্যথায় তাদের গ্রেপ্তার করার হুমকি দিয়েছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দাঙ্গা পুলিশের ইতোমধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলেপন্থিরা। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়। ঘটনার সময় সাধারণ পুলিশ কাছেই ছিল। কিন্তু তারা হামলাকারীদের থামাতে কোনো চেষ্টাই করেনি বলে অভিযোগ ওঠেছে।
এ ঘটনার পরের দিন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিচ্ছে। সেখানে প্রায় হাজেরখানেক ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারী রয়েছে। তারা সেখানে অস্থায়ী তাঁবু তৈরি করেছে।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর জিন ব্লক এক বিবৃতিতে বলেন, মঙ্গলবার সন্ধায় একদল উচ্ছৃঙ্খল হামলা চালিয়েছে। কিন্তু হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা শুরু হওয়ার কয়েক মাসের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ শুরু হয়। কারণ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় সহায়তাকারী যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৬০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালগুলো সর্বশেষ এত বড় শিক্ষার্থী বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল। প্রায় দুই দশকের ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে সেই বিক্ষোভ হয়েছে।
গাজায় যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এমআইটি, ইয়েল, কলম্বিয়া থেকে শুরু দেশটির ২০টির বেশি শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ চলছে। এতে বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি সাবেকরাও যোগ দিচ্ছেন। বিক্ষোভ থেকে এর মধ্যে প্রায় ৩০০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বিক্ষোভকারীরা যুদ্ধবন্ধের আহ্বান জানাচ্ছেন। তাছাড়া তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইসরায়েলকে সহায়তাকারী কোম্পানিগুলোর অনুদান গ্রহণ বাতিলেরও দাবি জানাচ্ছেন।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আরব অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশিদ খালিদি বলেন, আমরা ইতিহাসের সঠিক পক্ষে রয়েছি। কিন্তু আমাদের নেতা ও প্রশাসনের জন্য লজ্জা হয়। তারা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ক্যাম্পাসে পুলিশ ডেকেছে। কিন্তু আমাদের ট্যাক্সেই টাকা দিয়েই যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে অস্ত্র, গোলা-বারুদ ও যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যুদ্ধবন্ধের দাবিতে যে বিক্ষোভ চলছে, সেগুলোর আয়োজকদের কয়েকটি ইহুদি শিক্ষার্থীদের। বিক্ষোভ আয়োজকদের দাবি, তাদের প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ। ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষার জন্য এ আন্দোলন।
তবে বিক্ষোভে মাঝে-মধ্যে ইহুদিবিরোধী স্লোগান শোনা গেছে। কিন্তু তা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। তা সত্ত্বেও চলমান আন্দোলনকে ইহুদিবিদ্বেষমূলক বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ দেশটির একাধিক শীর্ষ রাজনীতিবিদ।
সূত্র : গার্ডিয়ান