প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৫২ পিএম
মঙ্গলবার ম্যানহাটনের একটি ফৌজদারি আদালতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনের একটি ফৌজদারি আদালতে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাশ মানি বা অভিযোগ ধামাচাপা দিতে অর্থ প্রদান বিষয়ক মামলার বিচার চলছে। শুনানির দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) নিউইয়র্কের একটি ট্যাবলয়েড ম্যাগাজিনের প্রকাশকের সঙ্গে ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। এবং অভিযোগকারী বা ট্রাম্প সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিবেদন ধামাচাপা দিতে ডেভিড পেকার নামের ওই প্রকাশক কীভাবে কাজ করতেন তা ওঠে এসেছে।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা বলেন, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে পর্নস্টার স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার হাশ মানি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এ পর্নস্টারের সঙ্গে ট্রাম্পের শারীরিক সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্ক গোপন করতেই নিজের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেনের মাধ্যমে স্টর্মিকে ট্রাম্প এ অর্থ প্রদান করেছিলেন।
এ মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি অভিযোগ রয়েছে। ট্রাম্প সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মঙ্গলবারের শুনানিতে দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়েছে ট্যাবলয়েড ম্যাগাজিন ‘ন্যাশনাল ইনকুইরারের’ প্রকাশক ডেভিড পেকারের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক নিয়ে।
জবানবন্দিতে পেকার জানান, ১৯৮০ এর দশক থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্ক। ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে তাদের মধ্যে এক ধরনের অলিখিত চুক্তি হয়। চুক্তির মধ্যস্থতাকারী ছিলেন ট্রাম্পের তৎকালীন আইনজীবী মাইকেল কোহেন।
চুক্তি অনুযায়ী ট্রাম্প সম্পর্কিত নানান নেতিবাচক গল্প বা প্রতিবেদন কিনে নিত ন্যাশনাল ইনকুইরার। এরপর তারা প্রতিবেদনগুলো আর প্রকাশ করতেন না।
পেকার স্বীকার করেন, তার ধারণা ছিল এতে করে ট্রাম্প উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি তার ম্যাগাজিনও বিখ্যাত হবে। কিন্তু দেখা গেল, তার কৌশল শুধু ট্রাম্পের উপকারে এসেছে। নিজের কোনো কাজে আসেনি। এ অবস্থায় ২০১৭ সাল, অর্থাৎ ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরের বছরের থেকে তাদের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি হয়।
এক সময়কার ডাকসাইটের মডেল কারেন ম্যাকডুগাল কীভাবে ন্যাশনাল ইনকুইরারের শরণাপন্ন হয়েছিলেন তাও জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন পেকার।
তিনি বলেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে ম্যাকডুগাল আমাদের জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ক ছিল। ম্যাকডুগালের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগের কথা জানার খবরে ট্রাম্প বিচলিত হয়ে পড়েন। তিনি সরাসরি আমাদের ফোন করেছিলেন। তার আইনজীবী মাইকেল কোহেনও আমাদের ফোন করেছিলেন।
মঙ্গলবারের শুনানিতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ আমান্য করারও অভিযোগ আনেন কৌঁসুলিরা। তারা বলেন, হাশ মানি মামলা বা মামলার সাক্ষীদের বিষয়ে মন্তব্য না করেতে ট্রাম্পকে নিষেধ করেছিলেন আদালত। ট্রাম্প সেই আদেশ ভঙ্গ করেছেন।
ট্রাম্পের আইনজীবী টড ব্লাঞ্চ এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প হাশ মানি মামলা নিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। জনসম্মুখে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তাই তিনি আদালতের নির্দেশ সরাসরি ভঙ্গ করেননি।
সূত্র : আলজাজিরা