× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা কি আপাতত শেষ

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪ ১০:১১ এএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রতিদ্বন্দ্বিতা মনে হচ্ছে এবারকার মতো শেষ হলো। যদিও ইসরায়েল এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি যে শুক্রবার ভোরে ইরানে যে হামলা হয়েছে সেটি তারা করেছে। অন্যদিকে ইরানের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতারা বিষয়টিকে গুরুত্বহীন, এমনকি হাস্যরস পর্যন্ত করেছেন যে আদৌ কিছু হয়েছে কি না তা নিয়ে। তবে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে কী ধরনের অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছিল এবং তাতে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে এখনও অসম্পূর্ণ ও পরস্পরবিরোধী তথ্য আসছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা। কিন্তু ইরানের কর্মকর্তারা বলছেন মধ্যাঞ্চলীয় ইসফাহান প্রদেশের এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় তাবরিযে কয়েকটি ছোট ড্রোন বিস্ফোরিত হয়েছে। ভূপাতিত করা মাইক্রো এয়ার ভেহিক্যালের কারণে কোনো ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ান আধা-সরকারি তাসনিম নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন। কিন্তু এসব সাধারণ কোয়াডকপ্টার হলো ইসরায়েলের এক ধরনের কলিং কার্ড- যা তারা ইরানের অভ্যন্তরে গোপন কার্যক্রম চালাতে কয়েক বছর ধরে ব্যবহার করছিল। এবার তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিল ইসফাহান, যেখানে দেশটির চমৎকার ইসলামি ঐতিহ্য রয়েছে।

তবে এই প্রদেশটির বিশেষ পরিচিতি হলো নাতাঞ্জ পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য। দ্য ইসফাহান নিউক্লিয়ার টেকনোলজি সেন্টার এবং একটি বড় ধরনের বিমান ঘাঁটি সেখানে আছে যা গত ১৪ এপ্রিল ইসরায়েলে হামলায় ব্যবহার হয়েছে। এ ছাড়া এটি ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানারও একটি কেন্দ্র। সেখান থেকেই শত শত ক্ষেপণাস্ত্র উড়ে গেছে ইসরায়েলের দিকে।

সুতরাং সীমিত হলেও এটি ইরানের দিকে শক্ত বার্তা নিয়ে গেছে যে ইরানের প্রাণকেন্দ্রে আঘাত করার মতো গোয়েন্দা সামর্থ্য ও সক্ষমতা ইসরায়েলের আছে। ইসরায়েলের জন্য এই বার্তা দেওয়াটাই জরুরি ছিল এবং তারা সেটিই নিশ্চিত করতে চেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারাও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, নাতাঞ্জকে সুরক্ষা দেওয়া ইরানের এয়ার ডিফেন্স রাডার সিস্টেমের মতো কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু ছিল ইসরায়েলের। তবে এটা কতটা সফল হয়েছে তার কোনো নিশ্চয়তা এখনও পাওয়া যায়নি।

সুতরাং হতে পারে এই হামলা ছিল একেবারেই সিরিজের প্রথম পর্বের মতো বিষয়। তবে উদ্দেশ্যমূলক না হলেও এটা ছিল ওই সময়ে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ৮৫তম জন্মদিনের উপহার। ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের নীরবতা ইরানকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটি রাজনৈতিক সুযোগ দিয়েছে। আবার যখনই শত্রু আক্রমণ চালাবে তখনই সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি সঙ্গে নিয়েই ইরান পাল্টা শক্ত জবাব দেবে এই নীতির দিকেও যায়নি ইরান।

তারা বরং নিজেদের শক্তির প্রদর্শনকে উপভোগ করেছে। কট্টরপন্থি প্রেসিডেন্টি ইব্রাহিম রাইসি তার শুক্রবারের বক্তৃতায় এসব সাম্প্রতিক ঘটনার উল্লেখ করেননি। ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির জন্য তারা অঙ্গীকার অনুযায়ী অভিযান চালিয়েছে- রবিবার গভীর রাতে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলার মাধ্যমে। তিনি তার দেশের ইস্পাতকঠিন অঙ্গীকারের প্রশংসা করেছেন।

বিশেষ করে তাৎক্ষণিক প্রতিশোধ বা সরাসরি উত্তেজনার বদলে দীর্ঘমেয়াদি খেলার কৌশলগত ধৈর্যের জন্য ইরান গর্ব করেছে।

এখন তারা ‘কৌশলগত প্রতিরোধ’-এর কথা বলছে। নতুন এই নীতি তারা নিয়েছে দামেস্কে গত ১ এপ্রিল কূটনৈতিক কম্পাউন্ডে হামলার পর। ওই হামলায় কনস্যুলার ভবন ধ্বংস হয়েছে এবং ওই অঞ্চলের একজন সিনিয়র কমান্ডারসহ রেভল্যুশনারি গার্ডের সাতজন নিহত হয়েছেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা চাপের মুখে ছিলেন, কারণ গাজা যুদ্ধে ইসরায়েল গত ছয় মাসে তাদের লক্ষ্য আরও জোরদার করেছিল।

অস্ত্র রাখার গোপন জায়গাগুলো, ভবন, ঘাঁটির মতো তেহরানের নানা স্থাপনা এবং সিরিয়া ও লেবাননের যুদ্ধক্ষেত্রগুলোর সাপ্লাই রুটগুলোতেই হামলা নয়Ñ ইসরায়েল ইরানের পদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তাকেও হত্যা করেছে। কয়েক দশক ব্যাপী শত্রুতা, যার জের ধরে আগে দুই দেশের মধ্যে ছায়াযুদ্ধ ও গোপন অভিযান হতো, সেটিই এখন প্রকাশ্য সংঘাতে রূপ নিয়েছে।

সবশেষ আঘাত ও পাল্টা আঘাত যে প্রকৃতিরই হোক না কেন উভয়পক্ষের জন্য আরও কিছু মৌলিক অগ্রাধিকার রয়েছেÑ যেমন প্রতিরোধ, একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য যাতে নিজের মাটিতে আর হামলা না হয়। যদি হয় তাহলে মূল্য দিতে হবে এবং এটা হবে ক্ষতিকর।

সে কারণেই আপাতত ওই অঞ্চলে এবং কাছে ও দূরের রাজধানীগুলোতে একটি স্বস্তির নিঃশ্বাস বইছে। ইসরায়েলের সবশেষ পদক্ষেপ, নিজেদের সহযোগীদের দিক থেকে সীমিত প্রতিশোধের আহ্বান এখনকার জন্য উত্তেজনা কমিয়ে এনেছে। সবাই সর্বাত্মক যুদ্ধ বন্ধ চায়। কিন্তু এ শান্তি যে স্থায়ী হবে না- এমন সন্দেহের বাইরে কেউ নেই। অঞ্চলটিতে এখনও আগুন জ্বলছে।

গাজায় যুদ্ধ এখনও চলছে। অসংখ্য ফিলিস্তিনি হতাহতের শিকার হয়েছে। ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের চাপের মুখে ইসরায়েল বড় আকারে মানবিক সহায়তার সুযোগ দিতে রাজি হয়েছে। কিন্তু তারপরও বিপর্যস্ত ওই ভূখণ্ডটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।

হামাসের হাতে বন্দি জিম্মিরা এখনও ফিরে আসেনি এবং যুদ্ধবিরতি আলোচনাতেও অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। ইসরায়েল হামাসের শক্ত ঘাঁটি রাফাহতে ঢোকার হুমকি দিচ্ছেÑ যা ত্রাণ সংস্থার প্রধান ও বিশ্ব নেতারা বলছেন আরেকটি মানবিক বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

পুরো অঞ্চলে ইরানের প্রক্সি নেটওয়ার্ক আছে যাকে বলা হয় ‘এক্সিস অব রেসিসট্যান্স’। লেবাননের হিজবুল্লাহ থেকে শুরু করে ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেনের হুতি- সবাই প্রস্তুত। প্রতিদিনই হামলা করছে। গত কয়েক সপ্তাহে অঞ্চলটির গভীর অন্ধকার বিপজ্জনক সময়েও তার কোনো পরিবর্তন হয়নি। সূত্র : বিবিসি

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা