কপ-২৭
প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২২ ১৬:৫৭ পিএম
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২২ ১৭:১৩ পিএম
মিসরের শারমুল শেখ পর্যটন নগরীতে চলছে ২৭তম জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৭। সম্মেলন এলাকায় এক জলবায়ু কর্মীর প্রতিবাদ। ৭ নভেম্বর তোলা। ছবি : সংগৃহীত
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ২০৩০ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বছরে প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলারের তহবিল দরকার হবে। এ অর্থের এক ট্রিলিয়ন ডলারের জোগান ধনী দেশ, বিনিয়োগকারী ও বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংকগুলোকেই দিতে হবে। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি সম্পর্কে দ্য গার্ডিয়ান ও আলজাজিরা জানিয়েছে, গত বছরের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬-এর আয়োজক যুক্তরাজ্য ও চলতি কপ-২৭-এর আয়োজক মিসর বছরখানেক আগেই ‘ফাইন্যান্স ফর ক্লাইমেট অ্যাকশন’ নামের একটি প্রতিবেদন তৈরির কাজ শুরু করে। জাতিসংঘের সহযোগিতায় তৈরি প্রতিবেদনটি মিসরে চলমান কপ-২৭-এর তৃতীয় দিন মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়।
নতুন প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, নানা ধরনের গ্রিনহাউস গ্যাসসহ যাবতীয় কার্বন নিঃসরণ কমাতে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ২০৩০ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বছরে প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলারের তহবিল দরকার হবে।
২ ট্রিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের জোগান দিতে হবে উন্নত দেশ, বিভিন্ন বিনিয়োগাকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংককে। আর বাকি ১ ট্রিলিয়ন ডলার আসবে ক্ষতিগ্রস্ত বা তহবিল গ্রহণকারী দেশগুলোর সরকারি ও বেসরকরি খাত থেকে।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ২০৩০ সাল থেকে বছরে ২ ট্রিলিয়ন ডলারের যে তহবিলের কথা বলা হচ্ছে, তা কম সুদে ঋণ, জ্বালানিবান্ধব বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ ইত্যাদির মাধ্যমে আসতে পারে।
আর উন্নয়নশীল দেশের এ গ্রুপটিতে চীনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। চীনকে বাদ দেওয়ার অন্যতম কারণ, গড় আয়ের হিসাবে উন্নয়নশীল দেশ হলেও চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২ ট্রিলিয়ন ডলার মোটাদাগে তিনটি খাতে ব্যয় বা বিনিয়োগ করা হবে। খাতগুলো হলো : এক. গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমানো বা প্রশমন খাত। দুই. তীব্র খরা, দাবদাহ বা বন্যার মতো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের কারণে যে ক্ষয়ক্ষতি (লস অ্যান্ড ড্যামেজ) হয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠা বা অভিযোজন। তিন. যেসব গরিব দেশ ইতোমধ্যে এমন ভয়াবহ ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে, যা কোনো মতেই আর আগের অবস্থায় ফেরত আনা অসম্ভব, তাদের ‘লোকসান ও ক্ষতি’ প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
জাতিসংঘের নতুন এ প্রতিবদেনটির সঙ্গে কাজ করেছেন ভেরা সংওয়ে। প্রতিবেদনটি সম্পর্কে ভেরা সংওয়ে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত যেসব চ্যালেঞ্জ এরই মধ্যে আমাদের কাবু করে ফেলেছে, তা মোকাবিলায় টেকসই জলবায়ু তহবিলের কোনো বিকল্প নেই। তবে মনে রাখতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় শুধু তহবিল গঠনই মূল কথা নয়। এ জন্য সঠিক (পরিবেশবান্ধব) যন্ত্রপাতির ব্যবহার ও কার্যকর নীতিও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
প্রসঙ্গত, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ২০২০ সাল থেকে উন্নত দেশগুলোর বছরে ১০০ কোটি ডলারের তহবিল দেওয়ার কথা। ২০০৯ সালেই এ সিদ্ধান্ত হয়। তখন থেকে তহবিল গঠনের কাজ শুরু হয়। কিন্তু তিন বছর পেরিয়ে গেলেও ২০২৩ সালের আগে এ তহবিল বাস্তবায়নের সম্ভাবনা নেই।
তবে, মিসরের পর্যটন নগরী শারমুল শেখে চলমান কপ-২৭-এ খাদ্য নিরাপত্তা, জল ব্যবস্থাপনার মতো ইস্যুর সঙ্গে জলবায়ু এবং লোকসান ও ক্ষতি তহবিল বাস্তবায়নের একটি পদ্ধতি ও রূপরেখা তৈরিও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা।