× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জলবায়ু সম্মেলনের পর্দা উঠল, প্রত্যাশা পূরণ নিয়ে শঙ্কা

প্রবা ডেস্ক

প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২২ ১৭:১৭ পিএম

আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২২ ১৮:০২ পিএম

পাকিস্তান চলতি বছর ভয়াবহ বন্যার মুখে পড়েছে। এবারের নজিরবিহীন বন্যায় দেশটির এক-তৃতীয়াংশ প্লাবিত হয়েছে। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের জলমগ্ন একটি রাস্তা। গত আগস্টে। ছবি : সংগৃহীত

পাকিস্তান চলতি বছর ভয়াবহ বন্যার মুখে পড়েছে। এবারের নজিরবিহীন বন্যায় দেশটির এক-তৃতীয়াংশ প্লাবিত হয়েছে। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের জলমগ্ন একটি রাস্তা। গত আগস্টে। ছবি : সংগৃহীত

জলবায়ু পরিবর্তন চলতি শতাব্দীর প্রধান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোর অত্যতম। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব যখন আরও বেশি বিপর্যস্ত, ঠিক এমন একটি সময়ে আজ (৬ নভেম্বর) মিসরে শুরু হলো ২৭তম জলবায়ু সম্মেলন বা কপ-২৭। বিশ্ব জ্বালানি ও খাদ্য সংকটের মধ্যে শুরু হওয়া এবারের দুই সপ্তাহব্যাপী কপ-২৭ গত বছর গ্লাসগোয় অনুষ্ঠিত কপ-২৬-এর চেয়ে অনেক বেশি চাপা পড়ে গেছে। তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও এবারের সম্মেলন কতটা সফল হবে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে।

বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আজ শুরু হওয়া কপ-২৭ শেষ হবে ১৮ নভেম্বর। রবিবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেবেন জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা বিষয়ক প্রধান ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ গ্রানাডার সাবেক সরকারি কর্মকর্তা সাইমন স্টিয়েল, মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কপ-২৭-এর প্রেসিডেন্ট সামেহ শউকরি এবং জাতিসংঘের ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) প্রধান হোয়েসুং লিসহ অন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। মিসরের স্থানীয় সময় বিকাল ৩টায় কপ-২৭-এর উদ্বোধন হবে, যা বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টা পর্যন্ত হয়নি।

লোহিত সাগরের তীরবর্তী পর্যটন শহর শারম এল শেখে শুরু হওয়া এবারের কপ-২৭-এ বিশ্বের প্রায় ১২০ দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের যোগদানের কথা রয়েছে। সোম ও মঙ্গলবার (৭ ও ৮ নভেম্বর) মূলত রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের জন্য নির্ধারিত। প্রতিজন ৫ মিনিট কথা বলতে পারবেন।

বুধবার (৯ নভেম্বর) শুরু হবে নানা ধরনের সেশন। এতে নানা ইস্যুতে তর্কবিতর্ক করবেন বিশ্বের নানা দেশের প্রায় ৩০ হাজার বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞ, জলবায়ু ও পরিবেশ কর্মী, নানা কোম্পানির প্রতিনিধি, সাংবাদিক, এনজিও কর্মকর্তাসহ সমাজের নানা অংশের ব্যক্তিবর্গ।

গত বছরের কপ-২৬-এর মতো কপ-২৭-এ অনেক বেশি এজেন্ডা না থাকলেও, এবার জলবায়ু তহবিল, ক্ষয়ক্ষতি (লস অ্যান্ড ড্যামেজ) তহবিল ও গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোসহ কিছু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। বিশেষত অনেক বেশি আলোচিত কিন্তু অবহেলিত জলবায়ু ও ক্ষয়ক্ষতি তহবিল বাস্তবায়নের পদ্ধতিসংক্রান্ত কিছু বিষয় চূড়ান্ত করা এবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা।

এসব বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করে কপ-২৭-কে ‘জলবায়ু বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বিশ্বের জন্য অগ্নিপরীক্ষা’ বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কপ-২৭-এর প্রেসিডেন্ট সামেহ শউকরি। এবারের সম্মেলনে চলতি শতাব্দীতে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি শিল্পবিপ্লব যুগের আগের তুলনায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া না গেলে ‘বিশ্ব মৃত্যুদণ্ডের মধ্যে’ পড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বারবাডোজের প্রধানমন্ত্রী মিয়া মোটলি। অন্যদিকে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি যেভাবে অব্যাহত রয়েছে, তাতে ‘ধ্বংসযজ্ঞের দিকে’ এগিয়ে যাচ্ছে বলে শনিবার মন্তব্য করছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। 

উনিশ শতকের শিল্পবিপ্লবের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা বর্তমানে ১ দশমকি ১ বা ২ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৫ সালে প্যারিসের কপ-২১-এ চলতি শতাব্দীতে উঞ্চতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে আটকে রাখতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে সম্মত হয় প্রায় ২০০ দেশ। কিন্তু এর পরও গত বছর বন্যা, অতিবৃষ্টি, খরা, দাবদাহ, বরফ গলা রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। এসব দুর্যোগ বিশ্বের বিশেষ কোনো অঞ্চলে নয়, বরং ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়াসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে নানা ধরনে দেখা গেছে। এ অবস্থায় ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি মেনে চললেও চলতি শতাব্দীতে বিশ্বের উষ্ণতা ২ ডিগ্রির বেশি বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে আইপিসিসির সর্বশেষ প্রতিবেদনে।

কিন্তু এসব উদ্বেগজনক পূর্বাভাস সত্ত্বেও পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি কমাতে কপ-২৭ গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। প্যারিসভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর সাসটেইনবল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনসের পরিচালক সেবাস্টিয়ান ট্রেয়ার। ট্রেয়ার বলেন, ‘কপ-২৭-এ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত না হওয়ার শঙ্কার পেছনের প্রধান কারণ, আগের রেকর্ড। কপ-২৬-এ অনেক চুক্তি হলেও সব দেশের অংশগ্রহণে সুদির্নিষ্ট কোনো চুক্তি হয়নি। আর যেসব সিদ্ধান্ত বা চুক্তি হয়েছিল, সেগুলো বাস্তবায়নের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

অন্যদিকে, এবারের অন্যতম প্রধান এজেন্ডা হওয়া সত্ত্বেও জলবায়ু তহবিল নিয়েও এবার কোনো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি ও রূপরেখা প্রণয়ন সম্ভব হবে না বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। জলবায়ুবিষয়ক এনজিও গ্রিনপিসের শীর্ষ কর্মকর্তা ক্লেমেন্ট সেনেচাল মনে করেন, জলবায়ু এবং ক্ষয়ক্ষতি তহবিল বাস্তবায়নের শঙ্কা আরও বেড়েছে। এর দুটি কারণ আছে। এক, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা এখন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ব্যস্ত। তারা সেখানেই প্রচুর অর্থ ব্যয় করছে। তাই জলবায়ু তহবিল শিগগির বাস্তবায়ন হবে কি না নিশ্চিত নয়।

অন্যদিকে, ক্ষয়ক্ষতি তহবিল নিয়ে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে অন্য মাথাব্যথা আছে। তারা মনে করে, একবার এ তহবিল দেওয়া হলে, জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো উন্নত দেশগুলোর কাছে আইনিভাবে ক্ষতিপূরণ দাবি করে বসতে পারে।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ২০২০ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জলবায়ুবিষয়ক সংকট মোকাবিলায় প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার তহবিল দেবে উন্নত দেশগুলো। তিন বছর পেরিয়ে গেলেও তা সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৩ সাল থেকে তা সম্ভব হতে পারে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা