× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ফিলিস্তিনে গণহত্যা

গাজায় খাবার নিতে গিয়ে গুলিতে নিহত ১০৪

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:০২ পিএম

আপডেট : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:০০ পিএম

গাজায় খাবার নিতে গিয়ে গুলিতে নিহত ১০৪

গাজা শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের আল-রাশিদ সড়কে ত্রাণবাহী ট্রাকের কাছে খাদ্যসহায়তা নিতে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি সেনাদের নির্বিচার গুলিবর্ষণে নিহত হয়েছে ১০৪ জন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৭৬০ ফিলিস্তিনি। 

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল নাগাদ এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। 

খাদ্যসহায়তা নিতে আসা ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর নারকীয় এই হত্যাযজ্ঞের বিষয়ে ফিলিস্তিন সরকার বলছে, ইসরায়েলি সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঠান্ডা মাথায় এটি ঘটিয়েছে। এটা নিশ্চিত গণহত্যা ছাড়া আর কিছু নয়।

এ ঘটনার বিষয়ে হামাসের পক্ষ থেকেও একটি শোক বিবৃতিতে দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে হামাস বলেছে, এটি জঘন্য গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। এই হামলা ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে সম্পূর্ণভাবে বাস্তুচ্যুত করার এবং তাদের সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করতে ইসরায়েলের প্রচেষ্টার একটি অংশ। এদিকে এই হামলার বিরোধিতা করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কয়েকটি দেশ।

এ ঘটনায় ত্রাণ বিতরণ করতে আসা ট্রাকগুলো প্রাথমিক অবস্থায় আহতদের নিয়ে নিকটস্থ হাসপাতালগুলোয় নিয়ে যায়। আহতদের প্রথমে আল-শিফা হাসপাতাল ও কামাল আদওয়ান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে এই সংখ্যা বাড়তে থাকায় তাদের আহলি হাসপাতাল ও জর্দানিয়ান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও হাসপাতালগুলো আগে থেকেই লোকবল ও ওষুধের অভাবে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। 

এদিকে গাজা শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে খাদ্যসহায়তা নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, এমন কিছু ঘটেনি। খোঁজ নিয়ে জানানো হবে। পরে দেশটির সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টের মাধ্যমে জানান, ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিরা ওই এলাকায় নিয়োজিত ইসরায়েলি সেনাদের ‘ভয়ংকরভাবে’ ঘিরে ধরে, তাদের আক্রমণ করতে উদ্যত হয় এবং তারা ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো লুটে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। ওই অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জড়ো হওয়া মানুষের ওপর গুলি চালানো হয়।

টাইমস অব ইসরায়েলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র এ ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছেন, যা ঘটেছে এটা সত্যিই দুঃখজনক। তবে আসলেই ওই স্থানে কী ঘটেছে, সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত না হয়ে কিছু বলতে পারছি না।

সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে আহত এবং স্থানীয় কয়েকজনের বরাতে জানানো হয়, খাদ্যসহায়তা বহনকারী ট্রাকের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত মানুষকে ইসরায়েলি সেনারা গুলি করে। শুধু ওই স্থানে থাকা সেনারাই নয়, আক্রমণে ব্যবহার করা হয় ড্রোন। আশপাশে নৌবাহিনী ও সাঁজোয়া যান থেকেও গুলি চালানো হয়।

আলজাজিরার সংবাদের তথ্য অনুসারে, নিহতের সংখ্যা এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১০৪ হলেও সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এখনও অসংখ্য আহত মানুষ রাস্তায় পড়ে আছে। প্যারামেডিকস, সিভিল ডিফেন্স ক্রু ও স্বেচ্ছাসেবকরা আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও গাজার যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় দুর্ঘটনাস্থল পর্যন্ত অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পৌঁছতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। 

এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসারয়েলি বাহিনী পরিচালিত সকালের এই হামলা একটি কুৎসিত গণহত্যা। খাবারের আশায় থাকা বিপুলসংখ্যক নিরীহ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে দখলদার সরকারের গণহত্যামূলক যুদ্ধের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

এই হামলার সময় ওই স্থানে উপস্থিত ছিলেন ফিলিস্তিনি ঔপন্যাসিক, শিক্ষক ও ডাক্তার ইউসরি আল-ঘৌল। তিনি আলজাজিরাকে বলেন, ‘ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও আমরা ওই স্থানে খাবারের সন্ধানে যাই। কারণ আমরা ক্ষুধার্ত। প্রায় দুই মাস ধরে আমরা খাবারের অভাবে আছি। পশুখাদ্যও জুটছে না আমাদের জন্য। আমাদের শিশুরা অনাহারে আছে। আজ সকালে কী ঘটেছে সেটা আমি দেখেছি। সাহায্যের আশায় আমিও হাজারো ফিলিস্তিনির মতো ওই এলাকায় গিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা ইসরায়েলিদের হামলার শিকার হয়ে শহীদদের সঙ্গে ফিরে এসেছি। আমার চোখের সামনেই স্নাইপারের গুলিতে দশজনকে মরতে দেখেছি। তারা তাদের মাথা, পা ও হাত লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে। আমাদের রক্তের হয়তো কোনো দাম নেই।’

সম্প্রতি জাতিসংঘ হুঁশিয়ারি করে বলেছে, গাজার ৫ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ শিগগিরই দুর্ভিক্ষের মুখে পড়তে যাচ্ছে। গাজার জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ দুর্ভিক্ষ থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে আছে। জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া না হলে তারা দুর্ভিক্ষে পড়বে। এ অবস্থায় খাদ্যসহায়তার জন্য আসা নিরীহ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

এদিকে পাঁচ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় বুধবার রাতভর হামলায় অন্তত ৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা