প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:২৮ পিএম
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:২৮ পিএম
২০২৩ সালের আগস্টে বিচারের শুরুতে আসামি এবং আইনজীবীরা। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের তৈরি কাশির সিরাপ পান করে ৬৮ শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ২৩ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছে উজবেকিস্তান। ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির রাজধানী তাসখন্দের আদালত এ রায় দিয়েছেন।
এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি, নিম্নমানের বা নকল ওষুধ বিক্রি, অফিসের অপব্যবহার, অবহেলা, জালিয়াতি এবং ঘুষের অভিযোগে প্রমাণিত হয়েছে। তাদের দুই থেকে ২০ বছর পর্যন্ত সাজা দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় ওষুধ কোম্পানি ম্যারিয়ন বায়োটেকের কফ সিরাপ আমদানি ও বিপণনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তাদের এই দণ্ড দেওয়া হয়।
২০২২ সালে ম্যারিয়ন বায়োটেকের প্রস্তুত করা ডক-১ কফ সিরাপ সেবনের পর উজবেকিস্তানে শ্বাসকষ্টে ভুগে মৃত্যু হয় ৬৮ শিশুর। পরে পরীক্ষা করে সিরাপে ইথিলিন গ্লাইকোল নামের একটি রাসায়নিকের অতিমাত্রায় উপস্থিতি শনাক্ত করে উজবেকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শিশুদের মৃত্যুর জন্য ইথিলিন গ্লাইকোল রাসায়নিকটির অতিমাত্রায় উপস্থিতি দায়ী বলে জানানো হয়। চিকিৎসার কাজে এর প্রয়োগ নিষিদ্ধ বলে দাবি করে উজবেকিস্তান প্রশাসন।
ডক-১ সিরাপটি আমদানি করেছিল উজবেকিস্তানভিত্তিক কোম্পানি কুয়ারাম্যাক্স মেডিকেল এলএলসি। উজবেকিস্তানের হলেও কুয়ারাম্যাক্স মেডিকেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একজন ভারতীয়।
কুরম্যাক্স মেডিকেলের নির্বাহী পরিচালক রাঘবেন্দ্র প্রতাপকে ২০ বছরের জেল দেওয়া হয়েছে।
গত জানুয়ারিতে ১৮ উজবেকিস্তানি শিশু মারা যাওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ম্যারিয়ন বায়োটেকের দুটি সিরাপকে ‘নিম্নমানের’ বলে উল্লেখ করে। সংস্থাটি জানায় অ্যামব্রোনল ও ডক-১ ম্যাক্স সিরাপ দুটিতে অগ্রহণযোগ্য মাত্রায় দূষকের বিদ্যমান রয়েছে।
ম্যারিয়ন বায়োটেক এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বিবিসিকে বলেছিল তারা এই ফলাফলের সঙ্গে ‘একমত’ না।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর উৎপাদন স্থগিত করে দেয়। উত্তর প্রদেশে অবস্থিত মূল কোম্পানিটি। সেখানের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগ প্রথমদিকে কোম্পানিটির লাইসেন্স স্থগিত করে দেয়। পরবর্তীতে গত বছরের মার্চে এর উৎপাদনের লাইসেন্স স্থায়ীভাবে বাতিল করে দেওয়া হয়।
আদালতের রায় অনুযায়ী, মৃত ৬৮ শিশুর প্রত্যেকের পরিবারকে ৮০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কাশির সিরাপ পান করে যে চার শিশু বিকলাঙ্গ হয়ে গেছে তাদের পরিবারকেও একই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হবে।
সূত্র : বিবিসি