প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:৫৯ পিএম
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:৪৫ পিএম
ভিসাকেন্দ্রে মিয়ানমার নাগরিকদের ভিড়। জানুয়ারিতে ইয়াঙ্গুনের একটি ভিসাকেন্দ্রে। ছবি : সংগৃহীত
গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত মিয়ানমারের তরুণ-তরুণীরা প্রতিবেশী থাইল্যান্ডে শ্রমিক হিসেবে দলে দলে প্রবেশ করছেন। বেশির ভাগই যাচ্ছেন অবৈধ উপায়ে। জান্তা সরকার সম্প্রতি সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করার পর দেশটির নাগরিকদের মধ্যে দেশ ছাড়ার প্রবণতা বেড়েছে। কারণ জান্তার অধীনে তারা যুদ্ধ করতে চান না।
তথ্যমতে, থাইল্যান্ডে বর্তমানে প্রায় ২৩ লাখ মিয়ানমারের শ্রমিক রয়েছে। বেশির ভাগই অবৈধ। তবে অনেকের শরণার্থী কার্ড রয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে থাইল্যাণ্ডে মিয়ানমারের শ্রমিকের সংখ্যা ৪০ লাখে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
থাই ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নিয়োগকর্তাদের কনফেডারেশনের (ইকোনথাই) ভাইস-চেয়ারম্যান তানিত সোরাত বলেন, আমাদের বিদেশি শ্রমিক দরকার। বিশেষ করে যেসব কাজ আমাদের নাগরিকেরা করতে চান না, তা করার জন্য এসব শ্রমিক দরকার।
মিয়ানমারের নাগরিকেরা থাইল্যান্ডে সাধারণত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ইলেকট্রনিক্স, অটো যন্ত্রাংশ, টায়ার, গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল, মৎস্য, আখ, রাবার এবং নির্মাণ খাতে কাজ করেন।
মিয়ানমার জান্তা সরকার ১০ জানুয়ারি সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করেছে। এখন থেকে দেশটির ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সি পুরুষ ও ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সি নারীদের বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে দুই বছর কাজ করতে হবে।
জান্তা মুখপাত্র জ মিন তুন রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দেশের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব শুধু সেনাদের মধ্যে সীমিত না রেখে তা সব নাগরিকের মধ্যে বিস্তৃত করে দিতে হবে। তাই আমি সবাইকে বলতে চাই, তারা যেন গর্বের সঙ্গে জনগণের সামরিকসেবা আইন অনুসরণ করে।
নিয়মিত সেনা সদস্যের বাহিরে সামরিক বাহিনীতে চিকিৎসক ও বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের যোগদানও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এসব যোগ্যতাসম্পন্ন ৪৫ বছর বয়সি ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে তিন বছর থাকতে হবে। চলমান রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় এ নিয়োগ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
২০২১ সালে অং সান সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। প্রতিবাদে দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই বছরের মে থেকে দেশটির জান্তাবিরোধীরা প্রতিক্ষামূলক সশস্ত্র আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। বর্তমানে তা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
গত ২৭ অক্টোবর থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স (থ্রিবিএইচ) বাংলাদেশ সীমান্তের রাখাইন ও চীন সীমান্তের শান রাজ্যে ‘অপারেশন ১০২৭’শুরু করে। থ্রিবিএইচের মধ্যে রয়েছে মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), দ্য টা'আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) ও দ্য আরাকান আর্মি (এএ)। তারা বেশ সফলভাবে জান্তার কবল থেকে একটির পর একটি প্রশাসনিক অঞ্চল ও সামরিক ঘাঁটি দখলে নিচ্ছে।
বর্তমানে রাখাইন রাজ্যের মংডুতে জান্তার বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে তীব্র সংঘাত চলছে। টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে নিয়মিত ভারী গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
সূত্র : রয়টার্স, ভয়েস অব আমেরিকা