প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৫১ এএম
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৩৬ পিএম
বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে জর্ডানের দ্বিতীয় বাদশা আব্দুল্লাহ (বাঁয়ে) ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ১২ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে। ছবি : সংগৃহীত
জর্ডানের দ্বিতীয় বাদশা আব্দুল্লাহ গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের ব্যবস্থা নিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তা ছাড়া মিসর সীমান্তের রাফা ক্রসিংয়ে ইসরায়েলের স্থল অভিযান মহাবিপর্যয় ডেকে আনবে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের রাফাহ অভিযান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাইডেন। কিন্তু যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে কোনো কিছু বলেননি।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করেন জর্ডানের বাদশা। ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কোনো আরব নেতার এটাই প্রথম হোয়াইট হাউস সফর।
বৈঠক জর্ডানের বাদশা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে বলেন, রাফায় ইসরায়েল হামলা চালালে তা আমরা সামাল দিতে পারব না। এতে করে আরেকটি মানবিক মহাবিপর্যয় তৈরি হবে। রাফায় ইতোমধ্যে স্থানচ্যুত ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে।
জবাবে বাইডেন বলেন, আমি জানি গাজায় বিপুল মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছে। অনেকে একাধিকবার স্থানচ্যুত হয়েছে। স্থানচ্যুতদের একটা বড় অংশ রাফায় আশ্রয় নিয়েছে। এখন তারা ঝুঁকিতে পড়েছে।
আগের দিন রবিবার রাফাহ অভিযান নিয়ে বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেছেন। নেতানিয়াহুকে বাইডেন বলেছেন, রাফায় স্থল অভিযানের জন্য বিশ্বাসযোগ্য পরিকল্পনা থাকা দরকার। যাতে সাধারণ মানুষের প্রাণহানি এড়ানো যায়।
জবাবে নেতানিয়াহু বলেছেন, পরিকল্পনা প্রস্তুত। এখন তা বাস্তবায়িত হবে।
বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা, রাফায় স্থল অভিযান শুরু হলে নতুন করে লাশের বন্যা তৈরি হবে। প্রতিবেশী মিসরে নামতে পারে শরণার্থীর ঢল।
রাফাহ অভিযান নিয়ে মিসরকে ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে ইসরায়েল। গোপনে তাদের মধ্যে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে প্রকাশ্যে দেশটি রাফায় স্থল অভিযানের বিরোধিতা করেছে।
ইসরায়েলি হামলায় গাজার ২৩ থেকে ২৪ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ বা ২০ লাখ স্থানচ্যুত হয়েছে। স্থানচ্যুতের প্রায় ১৫ লাখ মিসর সীমান্তের রাফাহ অঞ্চলে অবস্থান নিয়েছে। তাই এখানে স্থল অভিযান চালালে বেঘোরে মানুষ মরতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ।
দক্ষিণ গাজার মিসরের সীমান্তবর্তী রাফাহ অঞ্চলে রবিবার রাতভর বিমান ও গোলা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অনেকে। এখান থেকে দুই জিম্মিকে উদ্ধারের দাবি করেছে ইসরায়েল।
সোমবার রাতে গাজার দক্ষিণের খান ইউনিসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
তথ্যমতে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় গাজায় আরও ১১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত আরও ১৫২ জন।
৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ২৮ হাজার ৬৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে শিশু ও নারী ৭০ শতাংশের বেশি। একই সময়ে আহত হয়েছে ৬৭ হাজার ৬১১ জন।
ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত গাজার ৭০ শতাংশের বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। উপত্যকাটির ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ৮৫ শতাংশ বা প্রায় ২০ লাখ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি