প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:১১ পিএম
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:২৫ পিএম
ইমরান খান ও নওয়াজ শরিফ। ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানের সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনের সব আসনের ফলাফল এখনও আসেনি। যান্ত্রিক গোলযোগ ও ইন্টারনেট না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে এখন পর্যন্ত অন্তত আটটি আসনের ফল ঘোষণা হয়নি বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ইমরান খান ও মুসলিম লীগের নওয়াজ শরিফ নিজ নিজ দলকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন। এ পরিস্থিতিতে সরকার গঠনের জন্য নানা ধরনের তৎপরতা শুরু করেছে এ দুই দল।
কারাবন্দি ইমরান খানের দলের চেয়ারম্যান গওহর খান রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন।
আগের দিন শনিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে জনরায় মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। শনিবার রাতের মধ্যে সব আসনের ফল ঘোষণা করা না হলে আমরা সারা দেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করব।
পিটিআইয়ের পাশাপাশি দেশটির জামায়েত ইসলাম (জেআই), জামায়েত উলামায়ে ইসলাম এফসহ (জেইউআই-এফ) আরও কিছু ছোট দল দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে।
অন্যদিকে সরকার গঠনের জন্য বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। দলটির তথ্য সচিব মরিয়ম আওরঙ্গজেব একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নওয়াজ শরিফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সাক্ষাৎ থেকে দল গঠন সম্পর্কিত ঘোষণা আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এ পর্যন্ত ঘোষিত ফলে ইমরানের পিটিআই পেয়েছে ১০১টি আসন। পিএমএল-এন পেয়েছে ৭৩টি আসন। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপিপি পেয়েছে ৫৪টি। লাহোরে কারচুপির অভিযোগ এনেছে পিপিপি।
দেশটির জাতীয় পরিষদের মোট আসন ২৬৬টি। এককভাবে সরকার গঠনের জন্য দরকার ১৩৪টি। সেই হিসাবে এবার কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পিপিপির সঙ্গে জোটে পিএমএল-এন সরকার গঠন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু দুটি দল মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আসন পেয়েছে ১২৭টি।
ফল ঘোষণা বাকি ৮টির। একটি আসনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। তাই সরকার গঠন করতে হলে পিএমএল-এনকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও টানতে হবে।
অন্যদিকে পিএমএল-এনের সঙ্গে জোটে সরকার গঠন নিয়ে এখনও কিছু বলেনি পিপিপি।
কয়েকটি সূত্র বলেছে, পিপিপি নাটকীয়ভাবে পিটিআইয়ের সঙ্গেও সরকার গঠন করতে পারে। তা ছাড়া পিটিআই জেআই, জেইউআই-এফ ও অন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে জোটে সরকার গঠনের আলোচনা শুরু করেছে।
তবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবার পিএমএল-এনকে সমর্থন করছে বলে শোনা যাচ্ছে। দেশটির রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত শক্তিশালী।
শনিবার দেশটির সেনাপ্রধান অসিম মুনির বলেছেন, আমাদের নির্ভরযোগ্য নেতা দরকার। রাজনৈতিক নৈরাজ্য থেকে বের হওয়ার জন্য দরকার একটি জাদুকরী ছোঁয়া অতিপ্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
এদিকে নির্বাচনে কারচুপি ও জালিয়াতির অভিযোগ খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তা ছাড়া দেশটির প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের কিছু সদস্য এখনই পাকিস্তানের কোনো সরকারকে স্বীকৃতি না দিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট বিকাল ৫টায় শেষ হয়। এবার দেশটিতে প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ ভোটার। এর প্রায় অর্ধেকের বয়স ৩৫-এর নিচে।
প্রার্থী ৫ হাজারের বেশি। নারী ৩১৩ জন। ৯০ হাজার ৬৭৫ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলে।
বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার প্রায় ৯ ঘণ্টা পর শুক্রবার ভোরে প্রথম ফল ঘোষণা করা হয়। ফল ঘোষণায় দেরি হওয়ায় কারচুপি ও জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠছে।
সূত্র : দ্য ডন, বিবিসি, এনডিটিভি