প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:১৮ পিএম
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:০৭ পিএম
ইমরান খান (বাঁয়ে) ও নওয়াজ শরিফ। ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ১০৭টি আসনের বেসরকারি ফল পাওয়া গেছে। এতে ৪২টি আসনে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) স্বতন্ত্র সদস্যরা জয় পেয়েছেন। ৩৪টি আসন নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ। ২০টি আসন নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।
কারাবন্দি ইমরান খান নওয়াজ শরিফকে পরাজয় মেনে নিতে আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে নওয়াজ শরিফ বিজয় ভাষণ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
সমাজমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে নওয়াজ বলেছেন, আমরা একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছি। আমাদের এতটা সমর্থন করায় জনগণকে ধন্যবাদ।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট বিকাল ৫টায় শেষ হয়। এবার দেশটিতে প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ ভোটার। এর প্রায় অর্ধেকের বয়স ৩৫-এর নিচে।
প্রার্থী ৫ হাজারের বেশি। নারী ৩১৩ জন। ৯০ হাজার ৬৭৫ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলে।
২৬৬ আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য পেতে হবে ১৬৯ আসন। নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৬০ আসন। জাতিগত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত ১০ আসন।
বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার প্রায় ৯ ঘণ্টা পর শুক্রবার ভোরে প্রথম ফল ঘোষণা করা হয়। ইতোমধ্যে ভোটগ্রহণের ১৬ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও ফল আসছে অস্বাভাবিক ধীরগতিতে। ফল ঘোষণায় দেরি হওয়ায় কারচুপির অভিযোগ এনেছে পিটিআই।
তবে যত বেশি আসনের ফল আসছে তত এগিয়ে যাচ্ছে নওয়াজের মুসলিম লীগ। মুসলিম লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত পাঞ্জাব প্রদেশের আসন সংখ্যা ১৪১টি, যা দেশটির মোট আসনের অর্ধেকের চেয়ে বেশি।
ভোটগ্রহণ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে মোবাইল সেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। নানা মানবাধিকার সংস্থা ও অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এটার সমালোচনা করেছে। এটা নির্বাচনের স্বচ্চতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা।
শুক্রবার মোবাইলসেবা চালু হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভোটের দিন মোবাইলসেবা বন্ধ থাকলেও ওয়াইফাই চালু ছিল।
এবারের নির্বাচনে কারাগার থেকেই অংশ নিয়েছেন ইমরান খান। তার পার্টির প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট বাতিল করা হয়েছে। এ অবস্থায় তার পার্টির সদস্যরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ইমরানের পার্টির সদস্যরা বিপুল ভোট পেয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানের এবারের নির্বাচনে তিনটি বিষয় ঘটতে চলেছে। এক. ইমরানের ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। তিন. কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। তিন. নওয়াজের মুসলিম লীগ ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) যৌথভাবে সরকার গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ছোট দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়েও সরকার গঠন করতে পারেন নওয়াজ শরিফ। সে ক্ষেত্রে পিপিপি প্রধান বিরোধী দল হবে।
বিবিসি জানায়, নওয়াজের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক একসময় খারাপ থাকলেও এখন ভালো। তারা নওয়াজকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চাচ্ছে।
সেনাবাহিনীর এ চাওয়ার সঙ্গে বিদেশি কোনো শক্তি, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পর্ক আছে কি না এখনও কেউ সরাসরি বলেনি।
সূত্র : দ্য ডন, আলজাজিরা