মার্কিন সাংবাদিককে পুতিন
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৫৬ পিএম
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৩৪ পিএম
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন মার্কিন সাংবাদিক টাকার কার্লসন। ৬ ফেব্রুয়ারি ক্রেমলিনে। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়াকে কৌশলগতভাবে পরাজিত করতে চেয়েছিল। কিন্তু পারেনি। বস্তুত এটা অসম্ভব। তারা বোঝে গেছে ইউক্রেন যুদ্ধ রণক্ষেত্রে রফাদফা করা সম্ভব নয়। এ যুদ্ধ চুক্তির মাধ্যমেই শেষ হবে। আমাদের আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আলোচিত সাংবাদিক ও টেলিভিশন উপস্থাপক টাকার কার্লসনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এসব কথা বলেছেন। রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ও বাসভবন ক্রেমলিনে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) নেওয়া সাক্ষাৎকারটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সম্প্রচার করা হয়েছে। টাকারকার্লসনডনকমে দুই ঘণ্টার বেশি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারটি যেকোনো সময় দেখা যাচ্ছে।
সাক্ষাৎকারে শুরুতে পুতিন ইউক্রেন ও প্রতিবেশী দেশগুলোর ইতিহাস নিয়ে অনেক্ষণ কথা বলেছেন। ইউক্রেন যুদ্ধে বিভিন্ন ধাপ, পশ্চিম ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে অনেক আলোচনা করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেছেন, পোল্যান্ড বা লাটভিয়ার মতো প্রতিবেশীদের আক্রমণ করার আমাদের কোনো উদ্দেশ্য নেই। কারণ এতে রাশিয়ার কোনো স্বার্থ নেই। তবে রাশিয়া আক্রন্ত হলে যেকোনো দেশেই অভিযান চালাবে মস্কো।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই রাশিয়া ও ইউক্রেন শান্তি আলোচনা শুরু করে। বেলারুশের পর তুরস্কেও দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়।
এসব শান্তি আলোচনার দিকে ইঙ্গিত করে পুতিন বলেন, ২০২২ সালের এপ্রিলে ইস্তাম্বুলে আমরা একটি শান্তিচুক্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলাম। কিন্তু কিয়েভের আশপাশ থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের পর শান্তিচুক্তির আলাপ বন্ধ করে দেয় ইউক্রেন।
যুদ্ধ কীভাবে শেষ হতে পারে এমন একটি প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, এ যুদ্ধকে প্রলম্বিত করে ইউক্রেনের কোনো লাভ নেই। লাভ আছে যুক্তরাষ্ট্রের। তারা সাময়িকভাবে নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা থেকে মনোযোগ অন্য দিকে সরিয়ে রাখতে পারছে। তবে তারাও বোঝে গেছে, নিজেদের স্বার্থের জন্য রাশিয়া শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবে। তাই চুক্তি ছাড়া কোনো গতি নাই। আজ হোক কাল হোক চুক্তি করতেই হবে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পুতিনের সঙ্গে সমঝোতা করতে এখনও প্রস্তুত নন। অন্তত প্রকাশ্যে এ রকম কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনকে এখন পর্যন্ত ১১ হাজার কোটি ডলারের বেশি সামরিক ও মানবিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনকে আরও ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলার তহবিল দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। এটা নিয়ে সিনেটে শিগগির আলোচনা হবে। বিরোধী রিপাবলিকানরা প্রস্তাবটির বিরোধিতা করার ইঙ্গিত দিয়েছে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কার্লসনের আগে আর কোনো মার্কিন সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দেননি পুতিন। ফক্স নিউজের সাবেক এ উপস্থাপক ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ। রক্ষণশীল হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে।
পুতিনের সাক্ষাৎকার নেওয়া প্রসঙ্গে কার্লসন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ইউক্রেনে বিপুল অর্থ ঢালছে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জানার অধিকার আছে, তাদের অর্থ কোথায় ঢালা হচ্ছে?
পশ্চিমা গণমাধ্যমের ইউক্রেন যুদ্ধবিষয় প্রতিবেদনকে একচোখা বলেও অভিযোগ করেছেন কার্লসন।
কার্লসনের পুতিনের সাক্ষাৎকারকে আক্ষরিকভাবে না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় উপদেষ্টার মুখপাত্র জন কিরবি।
সূত্র : রয়টার্স, আরটি