প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:৪৪ এএম
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:১৮ এএম
যুক্তরাষ্ট্র বি-১ বোমারু বিমান দিয়ে হামলা চালায়। ছবি : বিবিসি
ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) এ হামলা চালানো হয়। তবে এসব হামলায় কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়নি। দেশটির দুজন কর্মকর্তা বিবিসি নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত রবিবার সিরিয়া সীমান্তের কাছে জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে এ হামলাকে। সামরিক ঘাঁটিতে ওই হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হন এবং আহত হন ৪১ জন।
ওই হামলার জন্য ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দায়ী করে আসছিল ওয়াশিংটন।
এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া ও ইরাকে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালানোর পরিকল্পনায় অনুমোদন দেয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আজ আমাদের প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমাদের সময়মতো এবং পছন্দের জায়গায় এ হামলা চলতে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য বা বিশ্বের অন্য কোথাও সংঘাত চায় না। তবে যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায় তাদের সবাইকে এটি জানতে দিন, কেউ যদি কোনো আমেরিকানের ক্ষতি করে তবে আমরা তার প্রতিক্রিয়া জানাব।’
শুক্রবারের এ হামলায় দূরপাল্লার বি-১ বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে ইরানের ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা চালায়নি মার্কিন বাহিনী।
হোয়াইট হাউস বলেছে, ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের লক্ষ্যবস্তুতে চালানো যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় সময় লেগেছে ৩০ মিনিট। আর এ হামলা স্পষ্টতই সফল।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসসি) মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিমান উড়িয়ে নিয়ে এ হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে বি-১ বোমারু বিমানও ছিল। এসব বিমানে ১২৫টির বেশি নির্ভুল নির্দেশিত যুদ্ধাস্ত্র বহন করা হয়।
এদিকে শুক্রবারের হামলার পর মার্কিন সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাতটি স্থানে ৮৫টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে একযোগে হামলা চালানো হয়েছে। ইরাকে তিনটি ও সিরিয়ায় চারটি স্থানে এসব হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র, সামরিক রসদভান্ডার এবং ড্রোন স্টোরেজ ইউনিট। কোনো পক্ষই এসব হামলায় হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির হিসাব দেয়নি।
এদিকে নিজেদের ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা চালানোকে ‘আমেরিকান আগ্রাসন’ বলেছে সিরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গতকাল জানায়, সিরিয়া-ইরাক সীমান্ত এলাকায় মরুভূমিতে হামলা চালানো হয়েছে।
ইরাকের সামরিক বাহিনীও কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এ হামলাকে সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন উল্লেখ করে ইরাকের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহইয়া রসুল বলেছেন, সীমান্ত এলাকায় হামলার ফলে বাগদাদ ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দিতে পারে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের তরফে বলা হয়েছে, ইরাককে জানিয়েই দেশটির বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানো হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত শুরুর পর থেকে ইরাক, সিরিয়া ও জর্ডানে ১৬৫ বারের বেশি হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী।
এ পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, ইরাক ও সিরিয়ায় নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কারণে চার মাস ধরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের জেরে আগে থেকেই উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য দীর্ঘমেয়াদে অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।