প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:২২ পিএম
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:৩৯ পিএম
শঙ্করাচার্যদের মতে অর্ধসমাপ্ত মন্দির উদ্বোধন করা যায় না। নির্মাণাধীন রামমন্দির। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের অযোধ্যার রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেননি দেশটির চার শঙ্করাচার্য। উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ, গুজরাটের দ্বারকা, ওড়িশার পুরী এবং কর্ণাটকের শ্রীঙ্গেরির শঙ্করাচার্যদের মতে অর্ধসমাপ্ত মন্দির উদ্বোধন করা যায় না।
উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিপীঠের ৪৬তম শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেস্বরানন্দ সরস্বতী সম্প্রতি জানান, সনাতন ধর্ম অনুযায়ী অর্ধসমাপ্ত মন্দিরের উদ্বোধন করা যায় না। রামমন্দিরের নির্মাণ এখনও শেষ হয়নি। তাই তিনি না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার এই সিদ্ধান্তকে মোদিবিরোধী বলে দেখা হতে পারে। কিন্তু এর সঙ্গে মোদি-বিরোধিতার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি শাস্ত্রবিরোধী হতে চান না বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অভিমুক্তেস্বরানন্দ বলেছেন, শঙ্করাচার্যদের দায়িত্ব হলো, ধর্মীয় শাস্ত্র অনুসরণ করা এবং দেখা যে, এই শাস্ত্র যাতে ঠিকভাবে অনুসরণ করা হয়। শাস্ত্রে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ না হলে তার উদ্বোধন করা যায় না। এতো তাড়াহুড়ো করার কোনো কারণ নেই। অসমাপ্ত মন্দিরে ঈশ্বরের মূর্তি স্থাপনের পরিকল্পনা ঠিক নয়। সবচয়ে বড় সমস্যা হলো, মন্দির অসমাপ্ত থাকা অবস্থায় প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
পুরীর শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতী জানিয়েছেন, তিনি তার পদের মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন। তিনি বলেছেন, আমি সেখানে গিয়ে কী করব? মোদিজি উদ্বোধন করবেন, মূর্তি ছোঁবেন, আর আমি সেখানে দাঁড়িয়ে হাততালি দেব? রামমন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠান পুরোটাই রাজনৈতিক শো হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গুজরাটের দ্বারকাপীঠের মন্ত্রী ব্রক্ষ্মচারী নরয়ানন্দ আউটলুককে বলেছেন, মন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে শঙ্করাচার্যর কোনো আপত্তি নেই, তিনি খুশি। তবে তাকে বেশকিছু প্রটোকল অনুসরণ করতে হয়। আর সে সময় তার আগে থেকে নির্ধারিত কিছু কাজ রয়েছে। তাই তিনি অযোধ্য়ায় যেতে পারবেন না।
ভারতের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ রামমন্দিরকে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করছে বিজেপি। কিন্তু তারা ধর্মকে বিভেদ নয়, বরং ঐক্যের জন্য ব্যবহার করতে চায়।
আমন্ত্রণ সত্ত্বেও আজকের রামমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। এ ছাড়া শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, তৃণমূল কংগ্রেসের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিও জানিয়ে দিয়েছেন, ওই অনুষ্ঠানে তারা যাবেন না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নির্মাণাধীন মন্দিরটির উদ্বোধন করেছেন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস, টাইসম অব ইন্ডিয়া, আউটলুক