যুক্তরাষ্ট্রকে চপেটাঘাত
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৫৪ এএম
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:১৪ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (বাঁয়ে) এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর তেলআবিবে। ছবি : সংগৃহীত
চলমান যুদ্ধ শেষ হলে ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হবে, এ ধারণার সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নিজের এ অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে তিনি স্পষ্ট করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু এসব কথা বলেছেন।
নেতানিয়াহু বলেন, জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর পুরোটার নিরাপত্তা ইসরায়েলের হাতে থাকবে। এটা ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্য অত্যাবশ্যকীয় শর্ত। তাই সার্বভৌম ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠা এই ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাহলে কী করতে হবে? যা করতে হবে তা আমি আমার যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুদের বলেছি। তাদের আমি এটাও বলেছি, আমাদের ওপর যাতে এমন কোনো বাস্তবতা চাপিয়ে না দেওয়া হয়, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর।
নেতানিয়াহুর কথামতো, জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরের পুরোটা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকলে অধিকাংশ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ইসরায়েলের কব্জায় থাকবে। ফলে কোনো দিনও স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে না।
ইসরায়েলসহ বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞদের বড় একটা অংশ মনে করে, স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠা না হলে ইসরায়েল কখনোই নিরাপদ থাকতে পারবে না। কারণ অন্য জনগোষ্ঠীকে পরাভূত রেখে অস্ত্র, সেনাবাহিনী, প্রযুক্তি দিয়ে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে না ইসরায়েল। তাই চলমান যুদ্ধই স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার বড় সুযোগ।
নেতানিয়াহুর বৃহস্পতিবারের মন্তব্য নতুন কোনো ঘটনা নয়। জায়োনিস্ট এ রাজনীতিবিদ আজীবন এ মনোভাব পোষণ করে এসেছেন।
কিন্তু ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর এ অবস্থান বাইডেন প্রশাসনের চলতি কূটনীতিতে একটা বড় আঘাত। কারণ চলমান যুদ্ধে চাপে পড়ে হলেও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা জোর দিয়ে বলছে যুক্তরাষ্ট্র।
নেতানিয়াহুর মন্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভ্যান বলেছেন, চলতি যুদ্ধের পর গাজাকে পুনরায় দখল করা যাবে না। দুই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অবিচল রয়েছে।
তবে একই দিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, পরিস্থিতি যাই হোক ইসরায়েলের প্রতি আমাদের সহায়তা লৌহদৃঢ় থাকবে।
গাজায় ইসরায়েলে হামলা শুক্রবার ১০৫ দিনে পড়েছে। ইসরায়েলি হামলায় সেখানে ইতোমধ্যে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৬১ হাজারে বেশি। স্থানচ্যুত হয়েছে ১৯ লাখের বেশি, যা উপত্যকাটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮৫ শতাংশ। এখনও যুদ্ধ থামার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বরং যুদ্ধ আরও কয়েক মাস থেকে এক বছর চলতে পারে বলে মন্তব্য করছেন ইসরায়েলের শীর্ষ রাজনীতিবিদরা।
সূত্র : গার্ডিয়ান, বিবিসি