প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:২৮ পিএম
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:২৪ পিএম
ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের হামলার পরবর্তী দৃশ্য। ১১ জানুয়ারি রাতে। ছবি : সংগৃহীত
ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিমান হামলা নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, লোহিত সাগরে পরিচালিত সামরিক অভিযান নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগে রয়েছে সৌদি আরব। প্রজাতন্ত্রী ইয়েমেনের একাধিক স্থানে বিমান হামলা নিয়ে আমরা সত্যি উৎকণ্ঠিত। আমরা সংযম দেখাতে ও উত্তেজনা কমাতে সব পক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি। লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বজায় রাখা ও স্থিতিশীল থাকা একান্ত জরুরি বলে মনে করে সৌদি আরব।
ইয়েমেনে হুতিদের সামরিক স্থাপনায় বৃহস্পতিবার রাতে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। ১৬টি স্থানের ৬০টির বেশি লক্ষ্যে হামলা চালানো হয়েছে। এতে করে ইরানের সহায়তাপুষ্ট গোষ্ঠীটির রাডার ও অস্ত্রাগার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হুতিরা পাল্টা হামলার হুমকি দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো পাল্টা হামলা হয়নি বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ ধরনের হামলা মোকাবিলার সব প্রস্তুত নিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। অন্যদিকে ইসরায়েল হামলা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। তবে দেশটিও সবদিকে নজর রাখছে।
হামলায় অংশ না নিলেও সম্মতি জানিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা এবং নেদারল্যান্ডস।
বৃহস্পতিবার রাত ২টা ৩০ মিনিটে হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। ইয়েমেনের রাজধানী সানা, হুদাইদাহ ও ধামার শহরে হুতিদের নিয়ন্ত্রিত লোহিত সাগরের দুটি বন্দর এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে গোষ্ঠীটির শক্তিশালী ঘাঁটি সাদাতে হামলা চালানো হয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরু হওয়ার পর নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা শুরু করে হুতিরা। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) পর্যন্ত লোহিত সাগরে তারা ৮০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত মাত্র তিনটি কার্গো জাহাজে হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে তারা।
হুতি হামলা মোকাবিলায় ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ১০টি দেশ নিয়ে লোহিত সাগরে একটি সামরিক জোট করে যুক্তরাষ্ট্র। ‘ওপারেশন প্রসপারিটি গার্ডিয়ান’ নামের জোটটি গঠনের পরই হামলা অব্যাহত রেখেছে হুতিরা।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির দাবি, গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাদের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। গোষ্ঠীটির আরও দাবি, তারা সব বাণিজ্যিক কার্গো জাহাজে নয়, শুধু ইসরায়েলি মালিকানাধীন জাহাজে হামলা চালাচ্ছে।
ইয়েমেনে হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামলার আগে বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
২০১৫ সালে সৌদি ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে হুতিরা। এরপর থেকে সেখানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন একটি জোট ক্ষমতাচ্যুত সরকারের পক্ষে হুতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। সৌদি আরবের পক্ষ নিয়ে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রও হুতিদের ঘাঁটিতে সরাসরি বিমান হামলা চালায়। অন্যদিকে হুতিদের সার্বিকভাবে সহায়তা দিতে থাকে ইরান।
৯ বছর পেরিয়ে গেলেও হুতিদের দুর্বল করা যায়নি। উল্টো রাজধানী সানাসহ মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার মধ্যবর্তী দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করেছে হুতিরা।
সম্প্রতি হুতিদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। এক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করছে ইরান। সূত্র : আরব নিউজ, আলমনিটর