প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৫৪ পিএম
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:০৭ পিএম
ভূমিকম্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার দৃশ্য। ছবি : সংগৃহীত
জাপানে নতুন বছরের প্রথম দিনে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২। আহত হয়েছে আরও অন্তত ৩০০ জন। আহতদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা গুরুতর।
ক্ষতিগ্রস্ত ইশিকাওয়া আঞ্চলিক প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ভূমিকম্পের ফলে ভূমিধস, ভারী বৃষ্টি, ক্রমাগত আফটারশক ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এতে করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার (১ জানুয়ারি) জাপানের প্রধান দ্বীপ হোনশুর নোটো প্রদেশ সুজুর উত্তর উপকূলে স্থানীয় সময় ৪টা ১০ মিনিটে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের ১০ মিনিটের মধ্যে হোনশুর ইশিকাওয়ার ওয়াজিমা শহরে ১ দশমিক ২ মিটার (প্রায় ৪ ফুট) উচ্চতার ঢেউ আঘাত হানে। জারি করা হয় সুনামির সতর্কতা। কয়েক ঘণ্টা পর তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
ভূমিকম্পের কারণে সুজুতে অনেক বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়ে যায়। আগুন লাগে ওয়াজিমা শহরে। এ পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে ৩১ হাজার ৮০০-র বেশি মানুষ ।
সুজু শহরের মেয়র মাসুহিরো ইজুমিয়ার জানান, ভূমিকম্পে শহরটির প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। অবশিষ্ট ৩৪ হাজার বাড়িঘরে নেই কোনো বিদ্যুৎ। পুরো শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়। ভূমিধস ও ভারী বৃষ্টির কারণে ত্রাণ কার্যক্রম ও উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করছেন। এতে করে ভূমিধসের ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এক জরুরি টাস্কফোর্স মিটিংয়ে বলেন, ভূমিকম্প বিপর্যস্ত এলাকার রাস্তাগুলো প্রায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার জাহাজের মাধ্যমে নোটো উপদ্বীপের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলোতে সাহায্য পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্বের চারটি টেকটোনিক প্লেটের মিলনস্থল জাপানে। এ কারণে দেশটি বিশেষ ভূমিকম্পপ্রবণ। প্রতিবছর শতাধিক ভূমিকম্প হয় জাপানে। তবে শক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থার দরুন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পায় পূর্ব এশিয়ার দেশটি।
জাপান সরকারের গত বছরের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সাল থেকে নোটো উপদ্বীপে ভূমিকম্পের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।
২০১১ সালে জাপানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের রেকর্ড করা হয়। সমুদ্রের তলদেশে হওয়া ৯ মাত্রার ভূমিকম্পটি প্রলয়ংকরী সুনামিতে রূপ নেয়। সুনামির ফলে, ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্রে বিপর্যয় ঘটে। নিহত হয় প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ মানুষ।
সূত্র : আলজাজিরা