বিপদ পিছু ছাড়ছে না জাপানের
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:২৭ পিএম
আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:০২ পিএম
সংঘর্ষের পর জাপান এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ আগুন লেগে পুড়ে যায়। ছবি : সংগৃহীত
বিপদ পিছু ছাড়ছে না পূর্ব-এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র জাপানের। শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে প্রাণহানির সংখ্যা বৃদ্ধির মধ্যেই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার খবর পেল দেশটি।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) হানিদা বিমানবন্দরে দুটি উড়োজাহাজের মধ্যে সংঘর্ষের পর একটিতে আগুন ধরে যায়। তবে ‘অলৌকিকভাবে’ প্রাণে বেঁচে গেছে দাউ দাউ করে পুড়তে থাকা জাপান এয়ারলাইনসের এয়ারবাস-৩৫০-এর ৩৭৯ জন যাত্রীর সবাই। অক্ষত আছেন এর ক্রুরাও। তবে সংঘর্ষের কারণে উড্ডয়নের মুখে থাকা কোস্ট গার্ডের বিমানের অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। কোস্ট গার্ড বলছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ নিয়ে তাদের বিমানটি দেশটির পশ্চিম উপকূলের নিগাটা বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিল।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড জানিয়েছে, কোস্ট গার্ডের বিমানের ছয় ক্রুর মধ্যে পাঁচজন মারা গেছেন। তবে এর আগে কোস্ট গার্ডের এক মুখপাত্র জানান, পাঁচ ক্রুর হদিস মিলছে না। ক্যাপ্টেন ক্ষতিগ্রস্ত বিমান থেকে বের হতে সক্ষম হয়েছেন।
জাপানের ব্যস্ততম বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে হানিদা অন্যতম। কিন্তু দুর্ঘটনার পর বিমানবন্দরটিতে উড্ডয়ন-অবতরণ বন্ধ রয়েছে।
এনএইচকের সরাসরি সম্প্রচারে দেখা যায়, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে জাপান এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটি আগুনে পুড়ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে উদ্ধারকর্মীদের জোর চেষ্টার পরও দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ছে। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন কেবিন থেকে ভেসে আসছে আতঙ্কগ্রস্ত যাত্রীদের চিৎকার।
বিমানের এক যাত্রী বলে, ‘আমার মনে হলো কিছু একটা আঘাত হানল এবং অবতরণের মুহূর্তে বড় ঝাঁকি অনুভূত হলো। আমি জানালার পাশে আগুনের শিখা দেখলাম এবং কেবিন গ্যাস ও ধোঁয়ায় ভরে উঠছিল।’
জাপান এয়ারলাইনসের এক মুখপাত্র জানান, তাদের বিমানটি হোকাইডোর উত্তরের শিনো-চিয়াতোস এয়ারপোর্ট থেকে ছেড়ে আসে। এ দুর্ঘটনা নিয়ে তাৎক্ষণিক মন্তব্য করতে রাজি হননি দেশটির অ্যাভিয়েশন বিশ্লেষকরা।
অ্যালেক্স মাচেরাস আলজারিরাকে বলেন, ’প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে তার সঙ্গে ব্যাপক পার্থক্য হতে পারে প্রথম কয়েক মিনিট বা ঘণ্টায় আমরা যা প্রত্যক্ষ করেছি। তদন্ত শেষেই একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরই যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও দপ্তরগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।
সোমবার জাপানের প্রধান দ্বীপ হোনশুতে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেকে আটকে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিখোঁজদের সন্ধানে কাজ করছে প্রায় ১ হাজার উদ্ধারকর্মী।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, ‘নতুন বছরে জাপানের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানা ভূমিকম্পে অসংখ্য হতাহত ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকার এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সেলফ ডিফেন্স বাহিনী পাঠিয়েছে। আটকে পড়াদের উদ্ধার ও সার্বিক পুনর্বাসনে সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সার্বিকভাবে জাপানের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।