প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:৪৬ পিএম
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:০৭ পিএম
ভারতের পার্লামেন্ট ভবন। ছবি : সংগৃহীত
ভারতে পার্লামেন্ট থেকে আরও ৪৯ জন আইনপ্রণেতাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আগের দিন সোমবার লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে ৭৮ জন বিরোধী সংসদ সদস্যকে সাসপেন্ড করা হয়।
১৪ ডিসেম্বর বরখাস্ত করা হয়েছিল ১৪ জনকে। সব মিলিয়ে তিন দিনে সাসপেন্ড হলেন ভারতের পার্লামেন্টের ১৪১ জন বিরোধী সংসদ সদস্য। ভারতের ইতিহাসে এত বেশি আইনপ্রণেতাকে বরখাস্ত করার ঘটনা এটাই প্রথম।
মঙ্গলবার বরখাস্তদের মধ্যে শশী থারুর, মালা রায়, মনীশ তিওয়ারি, কার্তি চিদম্বরম, সুপ্রিয়া সুলে, ফারুক আবদুল্লাহ, ডিম্পল যাদব, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যতম।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) পার্লামেন্টের নিরাপত্তা বিঘ্নের বিষয়ে বিরোধীদের বিক্ষোভ সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় শীতকালীন অধিবেশনের বাকি দিনগুলোর জন্য তৃণমূলের এমপি ডেরেক ও’ব্রায়েনকে সাসপেন্ড করেন। ওই দিন লোকসভায় সাসপেন্ড করা হয় ১৪ বিরোধী এমপিকে। পরে দেখা যায়, তাদের মধ্যে একজন সভাতে হাজির না থাকে সত্ত্বেও শাস্তির কবলে পড়েছেন। এরপর শুক্রবারও বিরোধীদের প্রবল প্রতিবাদের জেরে রবিবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছিল দুই কক্ষের চলমান অধিবেশন। গতকাল অধিবেশন শুরু হলেই বিরোধীরা পার্লামেন্টের নিরাপত্তা ইস্যুতে সরকারের অবহেলার বিষয়ে আলোচনা দাবি করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তার জেরে নিম্নকক্ষের স্পিকার ওম বিড়লা এবং উচ্চকক্ষের চেয়ারম্যান দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ধনখড় বিক্ষোভকারী এমপিদের বরখাস্ত করেন।
সাসপেন্ড হওয়া এমপিদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ক্ষমতাসীন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের অনেকে রয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল মণ্ডল, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রতিমা মণ্ডল, অসিত মাল, শতাব্দী রায়। ডিএমকের তিন এমপি টিআর বালু, এ রাজা ও দয়ানিধি মারানও বরখাস্ত হয়েছেন।
অধীর চৌধুরী বলেন, ’পার্লামেন্টে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা। তাই সংসদে পেশিশক্তি দেখাচ্ছে। সংসদকে বিজেপি ও আরএসএসের কার্যালয়ে পরিণত করতে চাইছে।’
লোকসভায় কংগ্রেস নেতা আরও বলেন, ‘সংসদের নিরাপত্তা যেভাবে ভেঙে পড়েছে, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করা হয়েছিল। তারা বাইরে অনেক কথা বললেও সংসদে কিছু বলছেন না। সেই প্রশ্ন তুললেই পার্লামেন্টে বিরোধীদের ওপর আক্রমণ নেমে আসে।’
২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংসদের বর্তমান শীতকালীন অধিবেশন চলার কথা। বর্তমান পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদি সরকার কার্যত বিরোধীশূন্য সংসদের অধিবেশন চালিয়ে যাবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা।
মঙ্গলবার বিরোধী দলগুলোর ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক আছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের ডাকা বৈঠকে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ বিরোধী নেতারা যোগ দেবেন।
বৈঠকে ২০২৪ সালে অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনে একসঙ্গে লড়াই করা, আসন সমঝোতা নিয়ে যেমন কথা হবে, তেমনই আলোচনা হবে সংসদ থেকে এতজন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করে দেওয়া নিয়েও।
সূত্র : এনডিটিভি, স্ত্রলডটইন