প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:২৪ এএম
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:৫১ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। ছবি : সংগৃহীত
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ভুয়া সংবাদ ও ভিডিও বানিয়ে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক জনমত বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বিরোধীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত আওয়ামী লীগের এসব প্রচারণা নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। তবে ৭ জানুয়ারির ভোটের আগে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ বা কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই দেশটির।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেছেন।
এক সাংবাদিক মিলারের কাছে জানত চান, দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচন সামনে রেখে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভুয়া সংবাদ ও ভিডিও বানিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ প্রতিবেদন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কী?
উত্তরে মিলার বলেন, আমরা বাংলাদেশে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো সম্পর্কিত ওই প্রতিবেদনটি দেখেছি। বিশ্বজুড়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত ও ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) এ ধরনের ব্যবহার বেড়েছে। এটা উদ্বেগজনক।
দ্বিতীয় প্রশ্নে একই সাংবাদিক বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক ছয় সংগঠনের উদ্বেগ প্রকাশ সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। ওই সাংবাদিকের জিজ্ঞাসা, বাংলাদেশে মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা বিশ্বসম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কারণ নির্বাচন সামনে রেখে সমগ্র বাংলাদেশকে কারাগারে রূপান্তরিত করেছে ক্ষমতাসীন সরকার। ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনী প্রচারণা ছাড়া সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অন্যদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দাবি করেছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ম্যানেজ করে ফেলবেন। নতুন সরকার গঠন করার পর যুক্তরাষ্ট্র সেই সরকারকে স্বীকৃতি দেবে বলেও তারা দাবি করেছেন। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য কী?
জবাবে মিলার বলেন, বাংলাদেশে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গণগ্রেপ্তার এবং কারাগারে নির্যাতনের খবরে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন এবং সহিংসতা এড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে সব অংশীদারের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি যেখানে সবাই সহিংসতা বা প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই প্রাকনির্বাচন এবং নির্বাচনী পরিবেশে অবাধে অংশগ্রহণ করতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি, সুস্থ গণতান্ত্রিক ধারায় ভিন্নমতের কথা বলার স্বাধীনতা, সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে উপকৃত হওয়া যায়।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনের একেবারে শেষে আরেক সংবাদিক নির্বাচনের আগেই বাংলাদেশের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কি না জানতে চান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করছেন। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো নতুন খবর আছে কি?
এ প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, আমার কাছে ঘোষণা করার মতো এ মুহূর্তে নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কোনো দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে আমরা তা প্রকাশ করি না। এটাই আমাদের দীর্ঘদিনের রীতি।