ইহুদিবিদ্বেষ ইস্যুতে চাপ
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:০৫ পিএম
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:০৮ পিএম
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এলিজাবেথ ম্যাগিল। ৫ ডিসেম্বর কংগ্রেসের শুনানিতে। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এলিজাবেথ ম্যাগিল পদত্যাগ করেছেন। ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ বাড়া নিয়ে চাপে পড়ে তিনি শনিবার (৯ ডিসেম্বর) পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ বাড়ার বিষয়ে শুনতে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এলিজাবেথ ম্যাগিল, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ক্লডিন গে এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির প্রেসিডেন্ট স্যালি কর্নব্লুথকে ডেকে পাঠায় যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট। এ প্রক্রিয়াটা কংগ্রেস শুনানি হিসেবে পরিচিত। এতে ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ বাড়া নিয়ে আইনপ্রেণেতারা তাদের নানা প্রশ্ন করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের উল্লিখিত বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তিন প্রেসিডেন্টের কেউ আইনপ্রণেতাদের প্রশ্নের জবাবে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বোধক কোনো উত্তর দেননি। বরং তারা ইহুদিবিদ্বেষ, মুসলিম বিদ্বেষ, প্রেক্ষাপট, নেতানিয়াহু সরকারের যুদ্ধনীতি ইত্যাদি ব্যাখ্যা করেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা খেপে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা অনুদান দেন তারাও বিষয়টি ভালোভাবে নেননি।
পার্লামেন্টে নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা এলিস স্টেফানিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসিডেন্টদের বেশি জেরা করেন। স্টেফানিক নিজের মনের মতো সুনির্দিষ্ট উত্তর চাচ্ছিলেন।
এ আইনপ্রণেতার একটি প্রশ্নের জবাবে ম্যাগিল বলেন, ইহুদিবিদ্বেষ বিষয়টি প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করে। ক্যাম্পাসের কোনো শিক্ষার্থী, অধ্যাপক বা কর্মচারী কোন বিষয়টা কীভাবে বলছেন, তা বিচ্ছিন্নভাবে নয়, বরং ওই ব্যক্তির পুরো বক্তব্য বা মন্তব্যকে ধরে বোঝতে হবে। তখন কোনো বক্তৃতা ইহুদিবিদ্বেষী মনে হলে আমরা সেটাকে হয়রানি বলে ধরে নেব।
ম্যাগিলের এ ধরনের যুক্তিনিষ্ঠ মন্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্যাটিক ও রিপাবলিকান উভয় পার্টির আইনপ্রণেতা ও দাতারা তার তীব্র সমালোচনা করেন। এ অবস্থায় বুধবার পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ার স্কট বকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তা শনিবার গ্রহণ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ম্যাগিল পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। তাছাড়া আইন বিভাগের অধ্যাপক পদে কর্মরত থাকবেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ইহুদিবিদ্বেষ ও উগ্রজতীয়তাবাদি ইহুদি রাষ্ট্রের ধারণা (অ্যান্টি-জায়োনিজম) অভিন্ন বলে এক প্রস্তাব পাস করা হয়। এটা নিয়ে বিশ্বে সমালোচনার ঝড় ওঠেছে। কারণ খোদ যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের নানা দেশের ইহুদিদের একটা বড় অংশ জায়োনিজম বা উগ্রজতীয়তাবাদি ইহুদি রাষ্ট্রের বিরোধী।
এদিকে অ্যান্টি-ডিফ্যামেশন লীগের তথ্যমতে, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিবিদ্বেষ প্রায় ৪০০ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের তথ্যমতে, ৭ অক্টোবরের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমবিদ্বেষ, ফিলিস্তিনিবিদ্বেষ বা আরববিদ্বেষ প্রায় ১৭২ শতাংশ বেড়েছে।
সূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স