× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গাজায় বোমার চেয়ে রোগেই বেশি মানুষ মারা যেতে পারে : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৫০ পিএম

আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৩১ পিএম

গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল আশ-শিফায় তাণ্ডব চালানোর পর তা দখলে নেয় ইসরায়েলি সেনারা। হাসপাতালটির পাশে খোলাস্থানে চিকিৎসা বর্জ্য। ছবি : সংগৃহীত

গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল আশ-শিফায় তাণ্ডব চালানোর পর তা দখলে নেয় ইসরায়েলি সেনারা। হাসপাতালটির পাশে খোলাস্থানে চিকিৎসা বর্জ্য। ছবি : সংগৃহীত

ইসরায়েলি হামলায় গাজার হাসপাতাল ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। বিধ্বস্ত ভবনের নিচে পচছে মরদেহ। এ অবস্থায় হাসপাতাল ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা না গেলে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে বোমার চেয়ে রোগে বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মঙ্গলবার এই সতর্কবার্তা দিয়েছে।

গাজায় ইতোমধ্যে ডায়রিয়া ও শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। শিশুদের মধ্যে এ প্রকোপ বেশি। নভেম্বরের শুরুর দিকে গাজায় স্বাভাবিকের চাইতে ১০০ গুণ বেশি মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। 

গাজায় ইতোমধ্যে ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ ডায়রিয়া ও ৭০ হাজারের বেশি মানুষ শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি বলে মনে করে সংস্থাটি। 

ডায়রিয়া ও শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যার পাশাপাশি গাজায় কলেরা বা ওলাউঠা রোগ বাড়তে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছে ডব্লিউএইচও। 

গাজায় ইতোমধ্যে প্রায় ১৮ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে। উপত্যকাটির মোট জনসংখ্যা ২৩-২৪ লাখ। অর্থাৎ মৃত্যুপুরীটির দুই-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে স্থানচ্যুত হয়েছে। 

স্থানচ্যুত মানুষের মধ্যে জাতিসংঘের কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিয়ে আছে প্রায় ১১ লাখ মানুষ। এসব কেন্দ্রে জ্বালানি ও পানিসহ অন্য নিত্যপণ্যে তীব্র সংকট চলছে। একটি টয়লেট ১০০ জনকে ব্যবহার করতে হচ্ছে। গোসল করার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। 

জাতিসংঘের হিসাবমতে, গাজার উত্তরাঞ্চলে মাত্র ৫টি হাসপাতাল আংশিক সচল আছে। গাজার উত্তরের এই এলাকায় ইসরায়েলের স্থলঅভিযান চলছে।

আর গাজার দক্ষিণাঞ্চলে সচল আছে ১১ টি হাসপাতালের মধ্যে ৮টি হাসপাতাল। 

দক্ষিণের হাসপাতালগুলোর মধ্যে কেবল মাত্র একটি হাসপাতালেই গুরুতর ট্রমা রোগীদের চিকিৎসা এবং জটিল অস্ত্রোপচার করার সক্ষমতা আছে।

ডব্লিউএইচও এর মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আমরা গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পুনরায় সচল করে তুলতে না পারলে এর পরিণামে বোমা হামলায় আমরা যত মানুষকে মরতে দেখছি, তার চেয়েও আরও বেশি মানুষকে রোগে ভুগে মরতে দেখব।

৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলের প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। আহত হয় প্রায় ৪ হাজার। হামাস জিম্মি করে নিয়ে আসে ২৪০ জনকে।

জবাবে গাজায় নির্বিচারে বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র, গোলা ও ড্রোন হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৪৮ দিনে ১৪ হাজার ৮৫৪ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে শিশু ৬ হাজার ১৫০। নারী ৪ হাজারের বেশি। একই সময়ে আহত হয়েছে ৩৬ হাজার।

হামলার পর থেকে গাজায় প্রায় ৭ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। এর মধ্যে শিশু ৪ হাজার ৭০০। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজার পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরেও হামলা ও ধরপাকড় বাড়িয়েছে ইসরায়েল। ৭ অক্টোবরের পর থেকে সেখানে অন্তত ২৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে শিশু প্রায় ৫৩। আহত হয়েছে প্রায় ১ হাজার। গ্রেপ্তার হয়েছে আরও প্রায় ৩ হাজার।

কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের মধ্যস্থতায় ২২ নভেম্বর চার দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল ও হামসা। ২৪ নভেম্বর থেকে তা কার্যকর। ২৭ নভেম্বর তা আরও দুদিন বাড়ানো হয়। আজ ষষ্ঠ ও শেষ দিনে যুদ্ধবিরতে আরও বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। 

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) পর্যন্ত পঞ্চম দিন বন্দিবিনিময়ের মধ্য দিয়ে হামাস মোট ৬০ ইসরায়েলিকে মুক্তি দিল। একই সময়ে বিদেশি মুক্তি দিয়েছে ২১ জন। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে ১৮০ ফিলিস্তিনি। উভয় পক্ষে মুক্তদের সবাই নারী ও শিশু।

এখনও হামাসের হাতে প্রায় ১৮০ জন জিম্মি রয়েছে। ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি রয়েছে প্রায় ১০ হাজার ফিলিস্তিনি।

যুদ্ধবিরতি চলার মধ্যেই অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় ২৫ ও ২৬ নভেম্বর ভোরে অন্তত ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে একজন ডাক্তার ও একটি শিশু রয়েছে। একই সময়ে আহত হয়েছে আরও ছয়জন।

যুদ্ধবিরতির ষষ্ঠ দিনেও ইসরায়েলি নৌবাহিনী দক্ষিণ গাজায় হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস ও বাব আল-বালাহে বুধবার সকালে গানবোট থেকে এ হামলা চালানো হয়েছে।

এদিকে যুদ্ধবিরতি বাড়াতে আলোচনা করতে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানেরা মঙ্গলবার কাতার গেছেন। ইসরায়েল ও হামাস এখন পর্যন্ত কোনো পুরুষ বা সেনাকে মুক্তি দেয়নি। এখন এসব বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসির এক প্রতিবেদনে।  

সূত্র : রয়টার্স, আলজাজিরা, বিবিসি




শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা