× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গাজায় সেনা পাঠাবে না কোনো আরব দেশ : জর্ডান

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:০০ পিএম

আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:২২ পিএম

নিরাপত্তাবিষয়ক সম্মেলন আইআইএসএস ডায়ালগে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি। ১৮ নভেম্বর বাহরাইনের রাজধানী মানামায়। ছবি : সংগৃহীত

নিরাপত্তাবিষয়ক সম্মেলন আইআইএসএস ডায়ালগে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি। ১৮ নভেম্বর বাহরাইনের রাজধানী মানামায়। ছবি : সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শেষ হলে বিধ্বংস উপত্যকাটির শাসনভার বা পুনর্গঠনের দায়ভার কোনো আরব দেশ নেবে না। কোনো আরব দেশ সেখানে সেনা পাঠাবে না। জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি শনিবার (১৮ নভেম্বর) এসব অভিমত ব্যক্ত করেছেন। 

শনিবার বাহরাইনের রাজধানীতে নিরাপত্তাবিষয়ক আইআইএসএস মানামা ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্যদের মধ্যে আরব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যোগ দেন। অনুষ্ঠানটিতে বক্তৃতায় আয়মান সাফাদি উল্লিখিত মতামত দেন। 

গাজায় ইসরায়েলের অভিযান শুরু হওয়ার পরপরই যুদ্ধপরবর্তী সময়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া উপত্যকাটির দায়িত্বভার কে নেবে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা চলছে। 

২৮ অক্টোবর গাজায় স্থল অভিযান শুরুর দিন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামি নেতানিয়াহু বলেছিলেন, যতদিন দরকার গাজার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে ইসরায়েল। 

কিন্তু প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় দেশগুলোও ইসরায়েলের এ মনোভাবের বিরোধীতা করছে। নেতানিয়াহুর মন্তব্যের আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ইসরায়েলের গাজা পুনর্দখল করা হবে বড় ভুল। 

১৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন নিজেদের অবস্থান ফের ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, গাজাকে পুনরায় দখল বা অবরোধ করা যাবে না। অন্যদিকে উপত্যকাটি সন্ত্রাসবাদ বা অন্য কোনো ধরনের হামলার সূতিকাগারও হতে পারবে না। 

শনিবার রাতে যুদ্ধপরবর্তী গাজা পশ্চিম তীরের সঙ্গে একীভূত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাইডেন। পাশ্চিম তীরের পাশাপাশি গাজাও শাসন করবে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ (পিএ)। 

হামাসের প্রধানবিরোধী রাজনৈতিক দল ফিলিস্তিন মুক্তি আন্দোলন বা পিএলও পশ্চিম তীর শাসন করে। তাদের প্রশাসনের নাম ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। ২০০৭ সালে হামাস গাজার শাসক নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত পিএ উপত্যকাটিও শাসন করত। কিন্তু বর্তমানে গাজাসহ পশ্চিম তীরেও পিএর জনপ্রিয়তা কমেছে। 

অন্যদিকে নেতানিয়াহু বাইডেনের এ প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছেন। শনিবার তেল-আবিবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমাদের যুদ্ধের পর পিএর বর্তমান নেতৃত্ব গাজায় শাসনের ভার নিতে পারবে বলে আমার মনে হয় না। অল্প কথায় বলতে গেলে এটা হতে দেওয়া যাবে না। 

১৩ নভেম্বর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিদেশবিষয়ক শীর্ষ কূটনীতিক জোসেফ বোরেল প্রস্তাব করেন, যুদ্ধপরবর্তী গাজা শাসনের জন্য জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব রাষ্ট্রগুলো নেতৃত্ব দেবে।   

এদিকে গাজায় ইসরায়েল তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে কি না, তা নিয়েও বাহরাইনের নিরাপত্তা সম্মেলনে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জর্ডানের শীর্ষ এ কূটনীতিক বলেন, ইসরায়েল বলছে তারা হামাসকে নিমূর্ল করবে। এ জন্য তারা গাজায় নজিরবিহীনভাবে বোমা ফেলছে। কিন্তু ইসরায়েল গাজাকে কীভাবে হামাসমুক্ত করবে তা আমার বুঝে আসে না।

সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফায়সাল বিনা ফারহান বলেন, গাজায় রোজ সাধারণ মানুষ মরছে। তাই আগামীকাল নয়, আজই আমরা যুদ্ধবিরতি চাই। 

গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য আরব ও মুসলিম দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সোমবার (২০ নভেম্বর) চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে একটি জরুরি সম্মেলনে বসবেন বলেও জানিয়েছেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গুরুত্বপূর্ণ দেশের রাজধানীতে এ ধরনের সম্মেলন আরও অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি। 

মানানা নিরাপত্তা সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক শীর্ষ উপদেষ্টা ব্রেট ম্যাকগ্রুক যোগ দিয়েছিলেন। ম্যাকগ্রুক বেলেন, হামাস জিম্মি মুক্তি দিলে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ সহজ হবে। ইসরায়েল বড় ধরনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে পারে। 

শনিবার ওয়াশিংটন পোস্ট দাবি করে, কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল, হামাস ও যুক্তরাষ্ট্র একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। এতে অন্তত ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে হামাস। বিনিময়ে গাজার সর্বত্র পাঁচ দিন যুদ্ধ বন্ধ রাখবে ইসরায়েল। 

পরবর্তীতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। 

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ১২ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে শিশু ৫ হাজারের বেশি। নারী অন্তত ৩ হাজার ৩০০। একই সময়ে আহত হয়েছে ৩০ হাজারের বেশি। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার (১৮ নভেম্বর) এসব তথ্য জানিয়েছে। অবরুদ্ধ উপত্যকাটির প্রায় সব হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাহতের পরিসংখ্যান ঠিক মতো রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে ইতঃপূর্বে জানিয়েছিল মন্ত্রণালয়টি। 

গাজায় ইসরায়েলি হামলা রবিবার (১৯ নভেম্বর) ৪৫তম দিনে প্রবেশ করেছে। আগের দিন শনিবার থেকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজায় স্থল অভিযান উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকেও বিস্তৃত করা শুরু করেছে। তারই অংশ হিসেবে দক্ষিণের জাবালিয়া শরণার্থী শিবির ও একই অঞ্চলের শহর খান ইউনিসে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। উভয় হামলায় অন্তত ১০৬ জন নিহত হয়। নিহতদের একটা বড় অংশ শিশু। 

৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিতে হামলা চালায় হামাস। এতে ইসরায়েল প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। আহত হয় প্রায় চার হাজার। হামাস ধরে নিয়ে আসে প্রায় ২৪০ জন। হামাসের হামলার জবাবে গাজায় বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট, গোলা ও ড্রোন হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু হয় স্থল অভিযান। এর মধ্যে আইডিএফ উত্তর গাজায় মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে। গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফায় ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান নিয়ে অভিযান চালিয়ে সেটার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। কিছু মুমূর্ষু রোগী ও চিকিৎসক ছাড়া সেখান থেকে সবাইকে তাড়িয়ে দিয়েছে।  

সূত্র : রয়টার্স, আরটি, আলজাজিরা


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা