× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গাজায় ইসরায়েলি হামলা

ফাঁকা বুলিতেই শেষ মুসলমান নেতাদের সম্মেলন

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৩২ পিএম

আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৩০ পিএম

সারিবদ্ধভাবে ওআইসি ও আরব লীগের নেতারা। ১১ নভেম্বর সৌদি আরবের রিয়াদে। ছবি : সংগৃহীত

সারিবদ্ধভাবে ওআইসি ও আরব লীগের নেতারা। ১১ নভেম্বর সৌদি আরবের রিয়াদে। ছবি : সংগৃহীত

ইসরায়েলের গাজা হামলা নিয়ে শনিবার সৌদি আরবের রিয়াদে বৈঠকে বসেছিলেন ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও আরব লিগের নেতারা। কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়াই তা শেষ হয়েছে। 

তবে সম্মেলন শেষে একটি যৌথ ঘোষণা এসেছে। এতে আত্মরক্ষার নামে ইসরায়েলের গাজায় হামলার সমালোচনা করা হয়েছে। যুদ্ধ বন্ধ করতে ও গাজায় ত্রাণ ঢুকতে দিতে ইসরায়েলকে চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। যুদ্ধ শেষে গাজাকে ফিলিস্তিনের অন্য অংশ পশ্চিম তীর থেকে আলাদা করার সম্ভাবনাকে নাকচ করা হয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের পরবর্তী বৈঠকে একটি প্রস্তাব পাস এবং ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ না করতে আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। 

যৌথ ঘোষণার আগে সম্মেলনে সৌদি যুবরাজ ইসরায়েলের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। এসব অপরাধের দায়ভার দখলদারদের (ইসরায়েল) নিতে হবে। যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। হামাস ও ইসলামিক জিহাদকে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে। তা ছাড়া ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ না করতে আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এবারের ওআইসি সম্মেলনে ১১ বছর পর ইরানের কোনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইব্রাহিম রাইসিও যোগ দিয়েছিলেন। ইসরায়েল সেনাবাহিনীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, চলতি যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রও একটি পক্ষ। এ বিষয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে যে পরিমাণ সহায়তা দিচ্ছে তা নজিরবিহীন। তাই চলতি অপরাধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রও পুরোপুরি দায়ী।  

প্রায় এক দশক বহিষ্কৃত থাকার পর চলতি বছরের শুরুতে আরব লিগে ফেরা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদও শনিবার রিয়াদ সম্মেলনে বক্তৃতা রাখেন। আসাদ গভীর শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ইসরায়েলকে চাপ দেওয়ার জন্য আমাদের নিজেদের যদি প্রকৃত কোনো ম্যাকানিজম না থাকে, তাহলে আমাদের ফাঁকা বুলির কোনো অর্থ নেই। 

তাই আসাদের পরামর্শ ছিল, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হলে ইসরায়েলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর কোনো ধরনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা বা বজায় রাখা ঠিক হবে না। 

রিয়াদ সম্মেলনে ইসরায়েলের ওপর জ্বালানি তেল ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল আলজেরিয়া ও লেবাননসহ আরও কিছু দেশ। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), বাহরাইনসহ আরও কিছু দেশ এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

২০২০ সালে ইউএই, বাহরাইন ও মরক্কো যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। সুদানও একই ঘোষণা দেয়। কিন্তু অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপের কারণে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি এখনও তা কার্যকর করতে পারেনি। 

যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ইসরায়েলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার তথা মিনা অঞ্চলের দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার এ প্রক্রিয়ার নাম ইব্রাহিম চুক্তি। ৭ আক্টোবর যুদ্ধ শুরুর আগে সৌদি আরবও এ চুক্তিতে নাম লেখানোর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। যুদ্ধের কারণে তা হিমাগারে চলে গেছে বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু তা বাতিল হয়নি। 

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতিরক্ষা গ্যারিন্টি চায় সৌদি আরব। অর্থাৎ প্রতিবেশী কোনো দেশ আক্রমণ করলে সর্বাত্মক সামরিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র। প্রয়োজনে সেনা পাঠাবে। 

যেসব মুসলিম বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক রয়েছে যুদ্ধ শুরুর পর সেগুলোর মধ্যে মাত্র দুটি তেল-আবিব থেকে নিজেদের কূটনীতিক প্রত্যাহার করেছে। দেশ দুটি হলো জর্ডান ও তুরস্ক। 

শনিবারের সম্মেলনে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো মানবাধিকার ও স্বাধীনতার কথা বলে থাকে। কিন্তু গাজায় হত্যাযজ্ঞ চললেও তারা চুপ করে রয়েছে। এটা অত্যন্ত লজ্জার। 

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির সঙ্গে মৈত্রী করে তৎকালীন ওসমানি সাম্রাজ্য। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন মিত্রবাহিনীর হাতে জার্মান শিবির পরাস্ত হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ স্বাধীনতা পায়। একই সময়ে লেবানন নদীর পশ্চিম তীর ও গাজাসহ ফিলিস্তিন হিসেবে পরিচিত ভূখণ্ডের দখল নেয় যুক্তরাজ্য। ওই ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের কিছু অংশ নিয়ে ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আজকের ইসরায়েল। 

১৯৬৭ সালের ছয়দিনের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর পশ্চিম তীর ও গাজা দখল করে ইসরায়েল। ২০০৫ সালে গাজা থেকে সম্পূর্ণ ফিরে এলেও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের দখলদারি এখনও অব্যাহত রয়েছে। 

কিন্তু ইসরায়েলের হত্যা, নিপীড়ন, দখলদারি ইত্যাদি উপেক্ষা করে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অনড় রয়েছে ফিলিস্তিনিরা। ১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তিতেও এ কথা বলা হয়েছে। এক সময় আরব দেশগুলো এ কথা জোর দিয়ে বললে এখন আর এত উচ্চকণ্ঠে তারা তা বলে না। 

ইতোমধ্যে জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু পশ্চিমা দেশ তার স্বীকৃতি দিলেও বিশ্বের অধিকাংশ দেশ দেয়নি।

চলতি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সৌদি আরব মৃদুস্বরে ১৯৬৭ সাল পূর্ব সীমান্ত অনুযায়ী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে। কিন্তু তা বাস্তবায়নের জন্য কোনো বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ওআইসি ও আরব লীগের শনিবারের যৌথ সম্মেলনেও সৌদি ও অন্য আরব দেশকে স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে যথাপূর্ব নীরব থাকতে দেখা গেছে। 

সূত্র : আলজাজিরা, মিডলইস্টআই, এএফপি

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা