প্রতিবেদন
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:৩৪ পিএম
উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ২০০০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি ডলার (১ দশমিক ৩৪ ট্রিলিয়ন) ঋণ দিয়েছে চীন। ২০১৩ সালে শুরু হওয়া ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ বা বিআরআই প্রকল্পের আওতায় চীনের পাওনার পরিমাণ এখন এক ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি- যা দেশটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঋণ সংগ্রাহকে পরিণত করেছে।
গেল সোমবার ৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ অব উইলিয়াম অ্যান্ড মেরির গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘এইডডাটা’র প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ ছাড়া মোট ঋণের প্রায় ৮০ শতাংশ আর্থিক সংকটে থাকা বিভিন্ন দেশ পেয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
চীন বলছে, দেড়শর বেশি দেশ বিআরআই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে৷ আর ১৬৫ এরও বেশি দেশে প্রায় ২১ হাজার প্রকল্পে চীনা অর্থায়নের খবর পেয়েছে এইডডাটা। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে সেতু, বন্দর, মহাসড়কসহ নানান অবকাঠামো তৈরিতে ঋণ দিয়েছে তারা।
এইডডাটা বলছে, ২০১৬ সালে প্রায় ১৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল চীন। আর ২০২১ সালে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের বিভিন্ন দেশকে ঋণ ও সহায়তা হিসেবে প্রায় ৮ হাজার কোটি ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল চীন। অন্যদিকে, একই খাতে যুক্তরাষ্ট্র এক বছরে ৬ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছে। বিপুল পরিমাণ ঋণ সহায়তা দেওয়ার কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো চীনের মিত্র হয়ে উঠেছে। তবে একই সময়ে পশ্চিমা বিশ্বসহ শ্রীলঙ্কা, জাম্বিয়ার মতো ঋণগ্রহীতা কিছু দেশ চীনের এ কৌশলের সমালোচনাও করেছে। তাদের দাবি, চীনের অর্থায়ন বিভিন্ন দেশের ওপর এমন ঋণের বোঝা চাপিয়েছে, যা তারা পরিশোধ করতে সক্ষম নয়।
এইডডাটার গবেষকরা বলছেন, চীনের ঋণ দেওয়ার পরিমাণ যেমন বেড়েছে, তেমনি প্রকল্প বাস্তবায়ন স্থগিত, এমনকি বাতিল হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও বেড়েছে। সে কারণে ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে বেইজিং চিন্তিত হয়ে পড়েছিল।
ঝুঁকি কমাতে চীনের নীতিনির্ধারকেরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে একটি হলো, অবকাঠামো খাতে দেওয়া ঋণের পরিমাণ কমিয়ে জরুরি সহায়তা হিসেবে ঋণ দেওয়ার পরিমাণ বাড়ানো। সে কারণে ২০১৫ সালে মোট ঋণের ৬০ শতাংশের বেশি অবকাঠামো খাতে দেওয়া হলেও ২০২১ সালে সেটি ৩০ শতাংশে নেমে আসে।
চীনা ঋণের গন্তব্য
২০১৮ সালের চীনের দেওয়া মোট ঋণের ৩১ শতাংশ পেয়েছিল আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশ। ২০২১ সালে সেটি ১২ শতাংশে নেমে যায়। আর ২০২১ সালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে চীনের ঋণের পরিমাণ চার গুণ বেড়েছে, যা এখন মোট ঋণের ২৩ শতাংশ। অর্থাৎ ইউরোপে অধিক ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতে নতুন মিত্র সৃষ্টি করতে আগ্রহী চীন।