প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:০৭ পিএম
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:০০ পিএম
আলজাজিরার গাজার আরবি বিভাগের ব্যুরোপ্রধান ওয়ায়েল দাহদুহ। ২৫ অক্টোবর আল-আকসা মার্টারস হাসপাতালের বারান্দায়। ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলি বিমান হামলায় আলজাজিরার গাজা উপত্যকার আরবি বিভাগের ব্যুরোপ্রধান ওয়ায়েল দাহদুহর স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও এক নাতি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে তার পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েল বিমান হামলা চালালে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। শরণার্থী শিবিরটার অবস্থান ওয়াদি গাজার দক্ষিণে। ওয়াদি গাজা উপত্যকার মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর উত্তর দিকের গাজা সিটি থেকে সরে দাহদুহর পরিবার সেখানে আশ্রয় গ্রহণ করে। তবে দাহদুহ নিজে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গাজা সিটিতে থেকে যান।
পরিবারের সদস্যরা নিহত হওয়ার খবর পেয়ে দ্বার আল-বালাহ অঞ্চলের আল-আকসা মার্টারস হাসপাতালে ছুটে যান দাহদুহ। হাসপাতালের মর্গে স্ত্রী-পুত্র ও কন্যার মরদেহ জড়িয়ে তাকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়।
দাহদুহর নিহত ১৫ বছর বয়সি পুত্রের নাম মাহমুদ। মাহমুদ বড় হয়ে বাবার মতো সাংবাদিক হতে চেয়েছিল।
নিহত কন্যার নাম শাম। তার বয়স সাত।
নিহত নাতির নাম আদম। তার বয়স নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আহত হওয়ার দুই ঘণ্টা পর তার মৃত্যু হয়।
হামলায় দাহদুহর দুগ্ধপোষ্য এক নাতনিও আহত হয়। তবে সে বেঁচে গেছে।
দাহদুহর আরেক পুত্র ইয়াহিয়াও হামলায় গুরুতর আহত হয়। তার মাথায় হাসপাতালের বারান্দায় জরুরি অস্ত্রোপচার হয়। প্রয়োজনীয় সুই-সুতা ও যন্ত্রপাতির অভাবে কোনো মতে তার অস্ত্রোপচার শেষ করা হয়। নন-সার্জিক্যাল সুতা দিয়েই তার মাথায় সেলাই দেওয়া হয়।
বিমর্ষ দাহদুহ আল-জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েল শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে হত্যা করছে। এটাই তারই আরেকটা প্রমাণ। ইসরায়েলের কথা মতো আমার পরিবারকে নিরাপদ স্থানে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু নিরাপদ স্থানের এ দশা। আসলে গাজাবাসী কোথাও নিরাপদ নয়।
৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর উত্তর গাজা থেকে ১১ লাখ বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। অন্যথায় স্থানীয়দের হামাসের সহযোগী গণ্য করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের টানা ঘোষণায় সেখানে থেকে কয়েক লাখ মানুষ দক্ষিণ দিকে সরে গেছে। কিন্তু দক্ষিণেও নির্বিচারে বোমা, গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ অবস্থায় দক্ষিণ থেকে অনেকে ফের উত্তরে নিজেদের ঘরে ধ্বংসস্তূপে ফিরে যাচ্ছে।
সূত্র : আলজাজিরা