প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৫৬ পিএম
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:০০ পিএম
ওয়াসিম মুশতাহারের চার সন্তান প্রায় দুই সপ্তাহ স্কুলে যাচ্ছে না। গণিত বা ভূগোলের পরিবর্তে তাদের শেখানো হচ্ছে কীভাবে সীমিত জল দিয়ে দিন পার করতে হয়।
‘প্রতিদিন আমি প্রত্যেককে একটি করে পানির বোতল দিয়ে বলি, আজ সারা দিন তোমাকে এ দিয়েই চলতে হবে। প্রথমে তাদের কষ্ট হতো। কিন্তু এখন তারা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শিখছে।’
সন্তানদের বয়স আট থেকে ১৫ বছর। ইসরায়েল গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ শুরু করলে সন্তানদের নিয়ে দক্ষিণের শহর খান ইউনিসে আত্মীয়বাড়ি আসেন ওয়াসিম মুশতাহার ও তার স্ত্রী।
অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অক্সফামের পানি ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা মুশতাহা বলেন, ‘আমি আমার চারপাশে মহাবিপর্যয়ের চিহ্ন দেখতে পাচ্ছি। মানুষ রাস্তায়, দোকানে, মসজিদে, গাড়িতে বা রাস্তায় ঘুমায়। আমার পরিবার ২০০ বর্গমিটারের একটি ঘরে প্রায় ১০০ জন লোকের সঙ্গে থাকার সুযোগ পেয়েছে। এটা আমাদের পরম সৌভাগ্য বলতে হবে।’
হামাসের আক্রমণের প্রতিশোধ হিসাবে ইসরায়েল গাজায় বোমাবর্ষণ শুরু করলে, গত ৭ অক্টোবর থেকে পানির দাম বেড়ে এখন পর্যন্ত দ্বিগুণ হয়েছে। মুশতাহা বলেন, ‘আমরা অন্ধকার চোখে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছি।’
পানি ও স্যানিটেশন পরিষেবার পতন
অক্সফাম ও জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, জল ও স্যানিটেশন পরিষেবার পতন কলেরা ও অন্যান্য মারাত্মক সংক্রামক রোগের জন্ম দেবে, যদি জরুরি মানবিক সহায়তা না দেওয়া হয়।
হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় পানির পাইপলাইন বন্ধ করে দেয়। এমনকি পানি ও পয়োনিষ্কাশন প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ করে দেয়। গাজার বেশির ভাগ পয়োনিষ্কাশন পাম্প স্টেশন এবং পাঁচটি বর্জ্য শোধনাগারের সব কটি বন্ধ হয়ে গেছে। অক্সফামের তথ্য অনুযায়ী, অপরিশোধিত পয়োবর্জ্য এখন সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। অনেক বর্জ্য রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ছে যেখানে লাশ পড়ে আছে কবর দেওয়ার অপেক্ষায়। এসব বর্জ্য খামারে যাচ্ছে এবং মানুষ খামারের পানি খেতে বাধ্য হচ্ছে।
জাতিসংঘ বলছে, গাজায় বর্তমানে পানীয়, ধোয়া, রান্না, টয়লেট ফ্লাশ করাসহ সমস্ত চাহিদা মেটাতে জনপ্রতি দিনে মাত্র তিন লিটার পানি পাওয়া যায়। এ অবস্থায় কলেরাসহ বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো। সূত্র : আল জাজিরা