প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ১০:৩১ এএম
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ১০:৫১ এএম
ওয়াহিদে মোহাম্মদিফার (বাঁয়ে) ও দারিয়ুশ মেহরজুই। ছবি : সংগৃহীত
ইরানের বিখ্যাত চিত্রপরিচালক দারিয়ুশ মেহরজুই ও তার স্ত্রী ওয়াহিদে মোহাম্মদিফার শনিবার সন্ধ্যায় তেহরানে নিজ বাসায় খুন হয়েছেন। ৮৩ বছর বয়সি এই পরিচালককে নিজেদের চলচ্চিত্রের একজন দিকপাল বলে মন্তব্য করেছে ইরানের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
এখন পর্যন্ত খুনির পরিচয় জানা যায়নি। থানায় ইতোমধ্যে মামলা করেছেন নিহত দম্পতির মেয়ে মোনা। চলছে তদন্ত।
জানা গেছে, ছুরিকাহত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মেহরজুই ও স্ত্রীর। তেহরানে নিজেদের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় এ দম্পতির ক্ষতবিক্ষত দেহ।
মেহরজুই ও তার স্ত্রীর গলায় ও ঘাড়ে ছুরির আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ দম্পতির মেয়ে মোনা মেহরজুই শনিবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাড়িতে এসে নিজের মা-বাবার মৃতদেহ দেখতে পান। তৎক্ষণাৎ তিনি পুলিশে খবর দেন।
মোনার অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয়েছে তদন্ত। ঠিক কোন আক্রোশ থেকে মেহরজুই ও তার স্ত্রীকে খুন করা হয়েছে, তার উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। এ দম্পতি সম্প্রতি বেশ কয়েকবার মৃত্যুর হুমকি পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
মেহরজুই ইরানের গত শতকের সত্তরের দশকের অন্যতম উল্লেখযোগ্য পরিচালক। দেশটির ছবিতে যারা রিয়েলিজম শুরু করেছিলেন তিনি তাদের অন্যতম।
আশির দশকে ইরানে বিপ্লবে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন মেহরজুই। ইসলামিস্ট নয় গণতান্ত্রিক ভাবধারার পক্ষেই ছিল তার অবস্থান। বামপন্থি ও অন্য গণতন্ত্রীরাও শাহের বিরুদ্ধে বিপ্লবে থাকলেও ফল তুলেছে এককভাবে কট্টরপন্থি ইসলামিস্টরা। নতুন সরকার গঠনের পর শিল্প ও শিল্পীদের স্বাধীনতায় তেমন একটা হস্তক্ষেপ করা না হলেও পরের দিকে পরিস্থিতি বদলে যায়।
আশির দশকের গোড়ার দিকে ইরান ছেড়ে প্যারিসে গিয়ে থাকতে শুরু করেছিলেন মেহরজুই। ফ্রান্সে ইরানি উদ্বাস্তুদের সঙ্গেও জীবনযাপন করেছেন তিনি। পরে দেশে ফিরে আসেন মেহরজুই।
তার পরিচালিত ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘হামুন’। তা ছাড়া মেহরজুইয়ের বানানো সেরা ছবির তালিকায় রয়েছে ‘লেইলা’, ‘দ্য কাউ’, ‘সনতুরি’র মতো ছবিও।
মেহরজুইয়ের চলচ্চিত্রকে অনেকে কবিতার সঙ্গে তুলনা করেন। তার ফ্রেম ও প্লটবিন্যাস অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তবে তার কবিতায় জার্মানির মার্কসবাদী দার্শনিক হার্বাট মারুকুসের প্রভাবও দেখা যায়।
সূত্র : গার্ডিয়ান