প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২২ ২২:০৮ পিএম
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২২ ১৩:২৫ পিএম
কংগ্রেসের নতুন সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। ছবি : সংগৃহীত
আট বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে উপমহাদেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল ভারতের জাতীয় কংগ্রেস। ২০২৪ সালের লোকসভা বা সাধারণ নির্বাচন। এ নির্বাচন সামনে রেখেই কংগ্রেস এবার তাদের সভাপতি নির্বাচন করেছে। নতুন সভাপতি হয়েছেন দলটির ৮০ বছরের প্রবীণ রাজনীতিবিদ মল্লিকার্জুন খাড়গে।
কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মধুসূদন মিস্ত্রীর বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, সোমবার (১৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত ভোটে কংগ্রেসের সারা দেশের ৯ হাজার ৩৮৫ জন সদস্য ভোট দিয়েছেন। বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টায় শুরু হয়ে দুপুর ১টায় ভোট গণনা শেষ হয়। এতে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে মল্লিকার্জুন খাড়গে পেয়েছেন ৭ হাজার ৮৯৭ ভোট। আর তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী শশী থারুর পেয়েছেন ১ হাজার ৭২ ভোট। ভোট বাতিল হয়েছে ৪১৬টি। ২৬ অক্টোবর বর্তমান সভাপতি সোনীয়া গান্ধী থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পার্টির ক্ষমতা গ্রহণ করবেন কর্ণাটকের ঝানু রাজনীতিবিদ মল্লিকার্জুন খাড়গে ।
আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার পর বুধবার বিকালে শুভেচ্ছা জানাতে খাড়গের নয়াদিল্লির বাসায় যান সোনিয়া গান্ধী ও শশী থারুর। তাদের সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদরে।
খাড়গের বাসা থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের শশী থারুর বলেন, ‘কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবন শুরু হয়েছে। গঠনমূলক আলোচনা অব্যাহত থাকলে পার্টি আগামীতে ভালো করবে।’
বিজয়ী ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে খাড়গে বলেন, ‘কংগ্রেসের সব কর্মী সমান। এখানে বড়-ছোট নেই। বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে আমাদের মিলেমিশে কাজ করতে হবে। গণতন্ত্র ও সংবিধান বাঁচাতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই।’
ফল ঘোষণার আগেই কংগ্রেসের খণ্ডকালীন সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাহুল গান্ধী অন্ধ্রপ্রদেশে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব কী তা বলার এখতিয়ার আমার নেই। জনাব খাড়গেই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। পার্টিতে আমার দায়িত্ব কী হবে তা তিনিই ঠিক করবেন।’
প্রাথমিক ফল ঘোষণার পরপরই থারুরশিবির থেকে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ আনা হয়। শিবিরটির নেতা সালমান সজ বলেন, ‘নির্বাচন কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা অনিয়মের অভিযোগ এনেছি। তারা আমাদের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’ কিন্তু পরে এ নিয়ে কেউ তেমন একটা কথা বলননি।
১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত কংগ্রেসের ১৩৭ বছরের ইতিহাসে মাত্র ছয়জন গান্ধী পরিবারের বাইরে দলটির সভাপতি হয়েছেন। সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে শারদ পাওয়ার ও রাজেশ পাইলটকে হারিয়ে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন সীতারাম কেশরী।
এর পর থেকে বলতে গেলে সোনিয়া গান্ধীই দলটির কাণ্ডারির ভূমিকায় রয়েছেন। ২০১৭ ও ২০১৯ সালে সভাপতি হন রাহুল গান্ধী। কিন্তু ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে হারার পর দায়ভার মাথায় নিয়ে সভাপতির পদ ছাড়েন তিনি। এর পর থেকে রাহুল গান্ধীর মা সোনিয়া গান্ধীই সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
চরম সংকট মুহূর্তে ২৪ বছর পর গান্ধী পরিবারের বাইরে মল্লিকার্জুন খাড়গে এবার কংগ্রেসের হাল ধরলেও তিনি মূলত সোনিয়া গান্ধীর ‘ধামাধরা’ বলে মনে করেন বিশ্লেষকদের বড় একটা অংশ। তবে কেউ কেউ মনে করেন, এই অভিজ্ঞ রাজনীতিক কিছুটা হলেও কংগ্রেসে প্রাণ সঞ্চার করতে পারবেন।
প্রবা/টিএ/জেও