প্রতিদিনের বাংলাদেশ ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২২ ১৩:০৩ পিএম
তেহরানে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বৈঠক হয়
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যদি ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু নাও করতেন, সে ক্ষেত্রে ন্যাটোই ধীরে ধীরে যুদ্ধ শুরু করে দিত। এ সময় ন্যাটোকে বিপজ্জনক বলেও মন্তব্য করেন খামেনি। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার পুতিনের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথা বলেছেন তিনি। খবর আল–জাজিরার।
ইরানের রাজধানী তেহরানে পুতিনের সঙ্গে খামেনির বৈঠক হয়। এরপর খামেনির ওয়েবসাইটে দুই নেতার আলোচনার বিষয়বস্তু প্রকাশ করা হয়।
বৈঠকে খামেনি পুতিনকে বলেন, ‘যুদ্ধ এক সহিংস ও জটিল ইস্যু। বেসামরিক মানুষ সে যুদ্ধের কবলে পড়ুক, তা ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান কোনোভাবেই চায় না। তবে ইউক্রেন ইস্যুতে আপনারা যদি ব্যবস্থা না নিতেন, তবে অপর পক্ষ উদ্যোগ নিয়ে নিত এবং যুদ্ধ বাধিয়ে দিত।’
পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়াকে শক্তিশালী ও স্বনির্ভর হিসেবে দেখতে চায় না বলে উল্লেখ করেন খামেনি। তিনি বলেন, ‘ন্যাটোর সামনে সুযোগ থাকলে তারা কোনোভাবেই তা হাতছাড়া করত না। এটি (যুদ্ধ) যদি ইউক্রেনে গিয়ে না থামত, তবে তারা ক্রিমিয়াকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে একই যুদ্ধ শুরু করত।’
পুতিনকে উদ্ধৃত করে ওই ওয়েবসাইটের বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানিকে ‘বড় ট্র্যাজেডি’ বলে উল্লেখ করেছেন পুতিন। রাশিয়ার ‘প্রতিক্রিয়া’র জন্য পশ্চিমা বিশ্বকেই দায়ী করেছেন তিনি।
পুতিন বলেন, ‘কিছুসংখ্যক পশ্চিমা দেশ বলেছে, আমরা ন্যাটোতে ইউক্রেনের সদস্য পদ পাওয়ার বিরোধী, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের চাপে আমরা তা মেনে নিয়েছি। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, তাদের স্বাধীনতায় ঘাটতি আছে।’
পুতিন ও খামেনি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছেন। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ধীরে ধীরে মার্কিন ডলারের ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন তাঁরা।
গতকাল মঙ্গলবার তেহরানে ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন পুতিন। সিরিয়া ইস্যুতে ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনের আগে আগে এ বৈঠক হয়।
আয়াতুল্লা আলী খামেনির কার্যালয় থেকে তাঁর একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। ছবিতে দেখা গেছে, রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে করমর্দন করছেন খামেনি। করোনা মহামারির মধ্যে একে বিরল ঘটনা বলে উল্লেখ করেছে আল–জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সময়ের মধ্য শুধু সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের সঙ্গেই করমর্দন করেছিলেন খামেনি। গত মে মাসে আকস্মিক তেহরান সফর করেন ইরানের মিত্র আসাদ।
রাইসির সঙ্গে পুতিনের বৈঠকের একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নের প্রশংসা করছেন এবং অঞ্চলজুড়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বজায় রাখা নিয়ে কথা বলছেন।
পুতিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা আমাদের সহযোগিতা বাড়াব।’ সিরিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই দেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।