প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০০:১৭ এএম
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৪১ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের প্রভাবশালী সদস্য বব মেনেন্দেজ। ছবি : সংগৃহীত
ঘুষের মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের প্রভাবশালী সদস্য বব মেনেন্দেজ। মিসরে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ও গণতন্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ার ধারাবাহিক ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সামরিক সহায়তা পাইয়ে দিতে ভূমিকা রাখার জন্য ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
তবে স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার মেনেন্দেজ গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় সব অভিযোগ অস্বীকার করে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে অভিযোগ ওঠার পর নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর ও আইনপ্রণেতাদের অব্যাহত চাপের মুখে গত শুক্রবার সিনেট থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এখন চলছে আইনি লড়াই।
২০০৬ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি রাজ্যের সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন মেনেন্দেজ। সর্বশেষ তিনি সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। বিশ্বের যে কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, সে বিষয়ে মূল্যায়ন করে সরকারকে পরামর্শ দেয় এই কমিটি। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির গতিবিধি নির্ধারণে কমিটির চেয়ারম্যানের গুরুত্বপূর্ণ থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি আইনজীবীরা মেনেন্দেজের সঙ্গে তার স্ত্রী নাদিন মেনেন্দেজের বিরুদ্ধেও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। তদন্তের অংশ হিসেবে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) তাদের দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছেÑ তারা মিসর সরকারের কাছ থেকে তিনজন ব্যবসায়ীর মাধ্যমে হাজার হাজার ডলার ঘুষ নিয়েছেন। ঘুষ হিসেবে তারা নদগ অর্থ, স্বর্ণ, বাড়ি, দামি গাড়ি ও মূল্যবান আরও জিনিসপত্র নিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, যে তিনজনের মাধ্যমে মেনেন্দেজ ঘুষ নিয়েছেন, তাদের একজন ২০১৮ সালে মেনেন্দেজের সঙ্গে মিসরের কর্মকর্তাদের বৈঠক করিয়ে দেন। বৈঠকে মিসরীয় কর্মকর্তারা মেনেন্দেজের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার বিষয়ে জানতে পারেন। মিসরে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কায়রোকে দেওয়া সামরিক সহায়তার একটি অংশ আটকে দেন। আটকে দেওয়া এই সহায়তা ছাড় হবে কিনা, সে বিষয়ে কর্মকর্তাদের সর্বশেষ তথ্য দেন এই সিনেটর।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় মেনেন্দেজকে এসব বিষয়ে প্রশ্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কৌঁসুলিরা। তারা আরও অভিযোগ করেছেন, মেনেন্দেজ মিসরীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করার সময় যুক্তরাষ্ট্রের স্পর্শকাতর ও গোপনীয় তথ্য বিনিময় করেছেন। এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে সিনেটর মেনেন্দেজের কঠোর সাজা হতে পারে।
মেনেন্দেজ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, তাতে তিনটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলোÑ ষড়যন্ত্র করে ঘুষ গ্রহণ, পেশার সততার সঙ্গে প্রতারণা, দাপ্তরিক ভাবমূর্তি কাজে লাগিয়ে অন্যায্য অর্থ গ্রহণ। এসব ধারার মধ্যে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘনের বিষয়টি যুক্ত রয়েছে।
সিনেটর মেনেন্দেজ গণমাধ্যমকে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে নোংরা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তিনি এর শিকার হয়েছেন। মিসর ইস্যুতে তার রেকর্ড পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে মেনেন্দেজে নিউ জার্সির সিনেট আসন থেকে এরই মধ্যে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য অ্যান্ডি কিম।
সূত্র : আলজাজিরা