প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৩০ পিএম
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:৩২ পিএম
নাইজারের রাজধানী নিয়ামিতে ফরাসি সেনাদের একটি ঘাঁটি। ছবি : সংগৃহীত
ফ্রান্স নাইজার থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূত, অন্য দূতাবাস কর্মকর্তা ও দেশটিতে অবস্থানকারী সেনাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ এ ঘোষণা দিয়েছেন। ফ্রান্সের এ ঘোষণাকে নিজেদের সার্বভৌমত্বের জন্য একটি বড় বিজয় হিসেবে দেখছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি।
সাক্ষাৎকারে মাখোঁ বলেছেন, ফ্রান্স নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আমাদের রাষ্ট্রদূত ও অন্য দূতাবাস কর্মকর্তারা ফ্রান্সের উদ্দেশে নাইজার ত্যাগ করবেন।
আর নাইজারে অবস্থানকারী নিজেদের সেনাদের বিষয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, সেখানে আমাদের সামরিক সহযোগিতার প্রকল্পের ইতি টানা হয়েছে। দেশটিতে বর্তমানে আমাদের দেড় হাজার সেনা সদস্য রয়েছে। তারা ধীরে ধীরে দেশে ফিরে আসবেন। চলতি বছরের শেষ নাগাদ তারা সবাই ফিরে আসবেন।
ফরাসি সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে নাইজারের সামরিক শাসক। এক বিবৃতিতে জান্তা সরকার জানায়, এই রবিবার আমাদের সার্বভৌমত্বের জন্য একটা বিশেষ ঘটনা। এটা আমরা উদযাপন করছি। আজকের ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে নাইজারের জনগণ নতুন সংকল্প গ্রহণ করছে।
গত ২৬ জুলাই প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে গৃহবন্দি করে ক্ষমতা গ্রহণ করে প্রেসিডেন্টসিয়াল ফোর্স। সেনাবাহিনী তাদের সমর্থন জানায়।
এরপর থেকে ফরাসি সেনাদের নাইজার ছাড়তে আহ্বান জানাতে থাকে জান্তা সরকার। পাশাপাশি নাইজারের নাগরিকদের একটা বড় অংশও ফরাসি ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের জন্য বিক্ষোভ করতে থাকে।
প্রতিবেশী মালি ও বুরকিনা ফাসোতেও ফরাসি সেনা রয়েছে। এই দুই দেশও জান্তার অধীনে। তারাও সম্প্রতি ফরাসি সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর এই তিন দেশ একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে।
১৯০০ সাল থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত নাইজার ফরাসি উপনিবেশ ছিল। মালি ও বুরকিনা ফাসোও ফরাসি উপনিবেশ ছিল। এসব দেশে সাবেক সাম্রাজ্যবাদী ফ্রান্সের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ রয়েছে।
গত এক দশকে মালি, পশ্চিম বুরকিনা ফাসো ও উত্তর নাইজারে চরমপন্থা দানা বাঁধে। আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের অনেকগুলো গ্রুপের উত্থান ঘটে সেখানে। তিন দেশের ওই এলাকাটি সাহেল অঞ্চল নামে পরিচিত।
ওই সাহেল অঞ্চলে চরমপন্থা দমনের জন্য ফরাসি ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা সেখানে যাায়। কিন্তু এক দশকেও তারা সেখানে এই সমস্যার কোনো সমাধান করতে পারেনি। বরং সমস্যা আরও শাখা বিস্তার করেছে।
মালি ও বুরকিনা ফাসোতে চরমপন্থা মোকাবিলায় বর্তমানে রাশিয়ার প্রাইভেট সশস্ত্র বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ কাজ করছে। নাইজারও ওয়াগনারের সহযোগিতা চেয়েছে বলে জানা গেছে। জ্বালানি তেল, স্বর্ণ ও অন্য দামি পাথর সমৃদ্ধ এসব দেশে ওয়াগনার কতটা সফল হবে সেটা দেখার বিষয়।
সূত্র : আলজাজিরা