দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৫৯ পিএম
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:২৩ পিএম
বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১০ সেপ্টেম্বর দিল্লির গান্ধী মেমোরিয়ালে। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সদ্যসমাপ্ত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন থেকে যৌথ ইশতেহার প্রকাশ করা যাবে কি না, তা নিয়ে মাসখানেক ধরে কথা হচ্ছিল। অনেকে এটা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সম্মেলনের প্রথম দিন শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর সব পক্ষকে রাজি করিয়ে যৌথ ইশতেহার প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে ভারত।
বহুল প্রতীক্ষিত এবারের যৌথ ইশতেহারের বিষয়গুলো একনজরে জেনে নেওয়া যাক।
ইউক্রেন
ইউক্রেন ইস্যুকে যৌথ ইশতেহারে কীভাবে বর্ণনা করা হবে, তা নিয়ে রাশিয়া-চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে চরম মতবিরোধ দেখা দেয়। মূলত এই কারণে এবারের সম্মেলন থেকে যৌথ ইশতেহার প্রকাশ করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল।
এ অবস্থায় ভারত মধ্যমপন্থা অবলম্বন করে। ইশতেহারে ইউক্রেন যুদ্ধের সরাসরি কোনো সমালোচনা করা হয়নি। ঘোষণায় সাধারণভাবে বলা হয়, কোনো দেশ অন্য দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত করবে না, তাদের ভূখণ্ড দখল করবে না। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
যৌথ ঘোষণায় এটাও বলা হয়, জি-২০ ভূরাজনীতি ও নিরাপত্তাবিষয়ক সমস্যা সমাধানের কোনো মঞ্চ নয়। এটা অর্থনীতি ও উন্নয়নবিষয়ক একটি ফোরাম।
টেকসই প্রবৃদ্ধি
ইশতেহারে বলা হয়, প্রবৃদ্ধি বাড়াতে, দেশে দেশে অসমতা কমাতে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে জি-২০-কে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। এ জন্য বিশ্বের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার করতে হবে।
তা ছাড়া উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণ পরিশোধের শর্তও ঢেলে সাজাতে আহ্বান জানানো হয়েছে জি-২০ এর এবারের ইশতেহারে।
জলবায়ু
ইশতেহারে ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি পূর্ণ ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে। প্যারিস চুক্তিতে চলতি শতাব্দীর মধ্যে বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধি যেন ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম না করে সে জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওযার কথা বলা হয়েছে।
দিল্লির ইশতেহারে প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য অর্থবহ পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। যেসব দেশ বা কোম্পানি বেশি কার্বন নিঃসরণ করে সেগুলোর ওপর বড় ধরনের কর আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে। ক্রমান্বয়ে জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে সরকারি ভর্তুকি এবং কয়লার ব্যবহার বন্ধেরও আহ্বান জানানো হয়েছে।
বহুকেন্দ্রিক বিশ্ব
জি-২০ এর এবারের ইশতেহারে পরোক্ষভাবে বহুকেন্দ্রিক বিশ্বেরও আহ্বান জানিয়েছে ভারত। ইশতেহারে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ও অস্থায়ী সদস্য বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার জন্য চেষ্টা করছে।
ইশতেহারে বলা হয়, জাতিসংঘকে সব সদস্যদের প্রতি আরও বেশি জবাবদিহিমূলক হতে হবে। সংঘের প্রতিষ্ঠাকালীন উদ্দেশ্য ও চার্টারের মূলনীতির প্রতি অনুগত থাকতে হবে। এতে করে প্রতিষ্ঠানটি আরও বেশি আন্তর্ভুক্তি ও প্রতিনিধিত্বমূলক হবে।
সূত্র : আলজাজিরা, আরটি, বিবিসি