প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:২০ পিএম
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:২৩ পিএম
প্রতীকী ছবি
পাকিস্তানের
পাঞ্জাব রাজ্যে ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ২১ হাজার ৯০০ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
এর মানে হলো- প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১২ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এবং প্রতি দুই ঘণ্টায়
এক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
শনিবার
(৯ সেপ্টেম্বর) ওয়ার এগেনস্ট রেপ (ডব্লিউ এ আর) নামে একটি অ্যাডভোকেসি সংস্থার প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ওয়ার এগেনস্ট রেপের প্রতিবেদনে পাঞ্জাবের স্বরাষ্ট্র
বিভাগ ও মানবাধিকার মন্ত্রণালয় হতে ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত নেওয়া তথ্য উল্লেখ
করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে
বলা হয়, ২০১৭ সালে প্রায় ৩ হাজার ৩২৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ২০১৮ সালে এটি বেড়ে দাঁড়ায়
৪ হাজারে। এ ছাড়া ২০১৯ সালে ৪ হাজার ৫৭৩টি। ২০২০ সালে ৪ হাজার ৪৭৮টি ও ২০২১ সালে ৫
হাজার ১৬৯টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
পাকিস্তানে
যৌন সহিংসতার ঘটনায় দোষীদের সাজার পরিমাণ কম হওয়ার হার ও বিচারের ত্রুটির কারণে নারী
ও শিশুদের নিরাপত্তা গুরুতর হুমকির মুখে দাঁড়িয়েছে। ধর্ষণের শিকার নারীরা মানসিক
ও শারীরিকভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে না।
পাকিস্তান
পেনাল কোডের ধারা ৫০৯, ৩৫৪এ, ও ২৯৪ এর মতো বিদ্যমান আইন থাকা সত্ত্বেও দেশটিতে যৌন
সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। অনেক ভুক্তভোগী বিচার চাইতে গিয়ে ভয়ঙ্কর বাধার সম্মুখীন হয়।
যার মধ্যে কলঙ্ক, ভয়, ভিকটিম-অভিযোগ ও বিচার ব্যবস্থায় পদ্ধতিগত পক্ষপাত।
বাল্যবিবাহ
ও জোরপূর্বক বিবাহ পাকিস্তানে একটি উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র। দেশটি এখনও
প্রায় ১৯০ লাখ বাল্যবধূ রয়েছে। বিয়ের জন্য ন্যূনতম আইনি বয়স প্রদেশ ভেদে পরিবর্তিত
হয়। সিন্ধু প্রদেশে ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্য ১৮ বছর নির্ধারণ করা হলেও অন্য প্রদেশে
মেয়েদের মাত্র ১৬ বছর বয়সে বিয়ে করার অনুমতি রয়েছে।
করাচির অবস্থা :
ওয়ার
পরিসংখ্যান বলছে, যৌন সহিংসতা করাচিকেও জর্জরিত করে রেখেছে। ২০২২ সালে শুধু শহরের পুলিশ
সার্জনের অফিসে ৩ হাজার ৬৪৯টি মামলার রিপোর্ট করা হয়েছে। আর ২০২২ সালের জুলাই থেকে
২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত যৌন সহিংসতার ৬৬টি মামলা তদন্ত করেছে পুলিশ সার্জনের অফিস।
এ
মামলাগুলোর মধ্যে যৌন সহিংসতার ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ৪৪ শিশুর বয়স ১৮ বছরের কম। যাদের
বয়স ৪ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। আর সবচেয়ে কম বয়সি বেঁচে যাওয়া শিশুর বয়স মাত্র চার
বছর।
মোট
৬৬টি মামলার মধ্যে ৩৫টি ধর্ষণের ঘটনা, ১১টি গণধর্ষণ মামলা, আরও ১১টি ধর্ষণের চেষ্টা
ও নয়টি অত্যাচারের ঘটনা রয়েছে। ১০টি ক্ষেত্রে ছেলেরা শিকার হয়েছে ও দুঃখজনকভাবে ১২টি
শিশুকে যৌন সহিংসতার পরে হত্যা করা হয়েছে। যার মধ্যে নয়টি মেয়ে ও তিনটি ছেলে রয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে হয়রানি :
প্রতিবেদনে দেশব্যাপী যৌন হয়রানির ঘটনা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। ফেডারেল
ওমবুডসম্যান সেক্রেটারিয়েট ফর প্রোটেকশন অ্যাগেইনস্ট হ্যারাসমেন্টের (এফওএসপিএএইচ)
তথ্য মতে, ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে সরকারি অফিসগুলো থেকে দুই হাজারের বেশি
অভিযোগ এসেছে এবং বেসরকারি অফিসগুলো থেকে প্রায় এক হাজার ৪০০টি, যার মধ্যে পুরুষ ও
নারী উভয়ই জড়িত। হয়রানির
কারণে বিপুল সংখ্যক অভিযোগকারী চাকরিও ছেড়েছেন।
সূত্র: জিও নিউজ