ভারতে জি-২০ সম্মেলন
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৪৬ পিএম
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:০৭ পিএম
জি-২০-এর মিডিয়া সেন্টার। ৭ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে। ছবি : এএফপি
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) থেকে দুই দিনব্যাপী জি-২০-এর শীর্ষ সম্মেলন শুরু হচ্ছে। এতে সদস্য ১৯টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতা ও প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। পাশাপাশি অন্য দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং প্রতিনিধিরাও অংশ নেবেন। এবারের সম্মেলনকে উন্নয়নশীল দেশের প্রতিনিধিত্বমূলক সম্মেলন বলে কয়েক মাস ধরে প্রচার করে আসছে দিল্লি।
কিন্তু এবারের সম্মেলনে যৌথ ইশতেহার প্রকাশ করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে ভারত এখন পর্যন্ত মনে করে এটা সম্ভব হবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা না হওয়ার যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে। যদি না হয়, তা হবে রেকর্ড। কারণ ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জি-২০-এর ইতিহাসে এমনটি আর কখনও হয়নি।
সমস্যার নেপথ্যে
যৌথ ইশতেহার প্রকাশ না হওয়ার শঙ্কার মূলে রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ যুদ্ধ নিয়ে ইশতেহারে কী ধরনের কথা থাকবে, তা নিয়ে পশ্চিমা দেশ এবং রাশিয়া-চীনের মধ্যে মৌলিক মতবিরোধ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা চায় ইশতেহারে রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার কঠিন সমালোচনা করা হোক এবং ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে সব রুশ সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হোক।
অন্যদিকে রাশিয়া চায়, ইশতেহারে তাদের অবস্থানের প্রতিফলন থাকতে হবে। এ রকম না থাকলে তারা যৌথ ইশতেহারে সই করবে না। ১ সেপ্টেম্বর রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এটা স্পষ্ট করে বলেছেন।
অন্যদিকে চীনের দাবি ইশতেহারে ভূরাজনৈতিক কোনো বিষয় থাকা চলবে না। কারণ জি-২০ অর্থনীতিবিষয়ক জোট। এতে অর্থনীতিবিষয়ক এজেন্ডার কথাই শুধু থাকবে।
অনমনীয় রাশিয়া
ইউক্রেন হামলার পর গত বছর ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০-এর সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তখনও যৌথ ইশতেহার নিয়ে বেশ হইচই হয়। তবে শেষ পর্যন্ত ইউক্রেন হামলার মৃদু সমালোচনা মেনে নিতে সম্মত হয় মস্কো। ফলে বাদ পড়তে পড়তেও তখন যৌথ ইশতেহার সম্ভব হয়।
তার আগে ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয়। তখনও জি-২০-এর শীর্ষ সম্মেলনে যৌথ ইশতেহার নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা-ও সম্ভব হয়েছিল।
কিন্তু ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের অবস্থান বদলেছে রাশিয়া। মস্কোর দাবি, ইশতেহারে যুদ্ধের প্রকৃত পটভূমি থাকতে হবে।
দিল্লি কী বলে
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর গত দুয়েক মাসে যৌথ ইশতেহার নিয়ে বেশ কয়েকবার মন্তব্য করেছেন। সর্বশেষ বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভারতের এক গণামধ্যমকে জয়শঙ্কর বলেন, ’এবারের সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট থাকছেন না। তার পরিবর্তে দেশটির প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। এতে করে আমাদের যৌথ ইশতেহার ঘোষণায় কোনো সমস্যা হবে না।’
বিশেষজ্ঞদের মত
এবারের সম্মেলনে যৌথ ইশতেহার বিষয়ে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ট্রিস্টান নেইলর বলেন, ’যৌথ ইশতেহার নিয়ে ভারতের বিশেষ কিছু করার নেই। কারণ জোটের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো ইউক্রেন যুদ্ধের মতো কিছু মৌলিক বিষয়ে একমত হতে পারছে না।’
সূত্র : এনডিটিভি, স্ক্রলডটইন, আলজাজিরা।