প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৩ ১৫:৪৭ পিএম
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৩ ১৬:৪৪ পিএম
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমায় বিস্ফোরিত ‘লিটল বয়’ পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ক্ষমতা ছিল ১৫ কিলোটন। ছবি : প্রতীকী
পশ্চিমা দেশগুলো পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, এমনটাই দাবি করেছেন
খোদ রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। একই সঙ্গে রাশিয়া যে দায়িত্বশীল রাষ্ট্র
হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো মিত্রদের পারমাণবিক বিপদ সম্পর্কে অবগত করছে, তাও এক
সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ম্যাগাজিন দ্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সে
দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন ল্যাভরভ। এ সাক্ষাৎকারটি শনিবার (১৯ আগস্ট) রুশ
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।
ল্যাভরভ সেই সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার ন্যাটো মিত্রদেশগুলো
পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘাতের শঙ্কার ঝুঁকি এড়িয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন,
‘আমরা মনে করি
এই ধরনের পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব। এই জন্য পারমাণবিক সংঘাতের সামরিক ও রাজনৈতিক ঝুঁকির
বিষয়ে প্রতিপক্ষকে মনে করিয়ে দিতে হবে।’
তবে ল্যাভরভ প্রথম কোনো নেতা নন যিনি চলমান ইউক্রেনে সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে পারমাণবিক সংঘাতের কথা বললেন।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ সেনারা।
এ সময় দেশটির রাজধানী কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হলেও ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল তারা দখল করে।
সম্প্রতি পশ্চিমা অস্ত্র সহায়তার ওপর ভিত্তি করে রাশিয়ার দখলকৃত স্থান পুনরুদ্ধারে
পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইউক্রেনীয় সেনারা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত রাশিয়ার সাবেক
প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছিলেন, রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ
সফল হলে মস্কোকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে হবে।
তবে ন্যাটোর পক্ষ থেকে গত সপ্তাহেই জানানো হয়েছে, ক্রেমলিন পারমাণবিক
অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন কোনো লক্ষণ নেই।
এদিকে রাশিয়ার মিত্র দেশ বেলারুশের সঙ্গেও ন্যাটোভুক্ত দেশের সীমান্ত
সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। চলতি বছরে রাশিয়াও বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক
অস্ত্র মোতায়েন করেছে। লুকাশেঙ্কো বলেছেন, তার দেশ আক্রান্ত হলে বেলারুশ পারমাণবিক
অস্ত্র ব্যবহার করবে।
এ ছাড়া গত বছরও খোদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শঙ্কা প্রকাশ
করে বলেছিলেন, রাশিয়া কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। একই শঙ্কা প্রকাশ
করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কিও।
কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র আসলে কী
পারমাণবিক বোমা প্রকৃত অর্থে একটি ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্র। কিন্তু
যুদ্ধক্ষেত্রে সামরিক কমান্ডারদের সুবিধা দিতে আরও নমনীয়, অপেক্ষাকৃত ছোট থার্মোনিউক্লিয়ার
বোমা তৈরি ও পরীক্ষা শুরু হয় ১৯৫০-এর মাঝামাঝি সময় থেকে।
একবিংশ শতাব্দীতে এসে পরমাণু ওয়ারহেডগুলো আরও আধুনিক হয়েছে। যেখানে
একজন অপারেটর একটি পারমাণবিক বোমার ধ্বংস ক্ষমতা নির্দিষ্ট করে দিতে পারবে। যেখানে
একটি কৌশলগত পারমাণবিক বোমা ১ কিলোটনের ভগ্নাংশ থেকে ৫০ কিলোটন পর্যন্ত হতে পারে। এক
কিলোটনের বিস্ফোরণ ক্ষমতা ১ হাজার টন টিএনটির সমান।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমায় বিস্ফোরিত ‘লিটল বয়’ পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ক্ষমতা ছিল ১৫ কিলোটন।
সূত্র : আলজাজিরা