প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৩ ১৯:০২ পিএম
আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৩৪ পিএম
বুধবার লোকসভায় রাহুল গান্ধী। ছবি : সংগৃহীত
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসন মণিপুর থেকে হরিয়ানা, তথা ভারতের সর্বত্র কেরোসিন ঢালছে আর আগুন লাগাচ্ছে। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) মণিপুরে ভারতমাতাকে হত্যা করেছে।
ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে একটি অনাস্থা ভোট উত্থাপন করে বিরোধীদের জোট ‘ইন্ডিয়া’। বুধবারও অনাস্থা ভোট নিয়ে আলোচনা হয়। এদিন বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনায় এসব মন্তব্য করেন তিনি।
রাহুল গান্ধী বলেন, ’জনগণের আওয়াজ শোনাই ভারতের কাজ। মণিপুরে সেই আওয়াজকে হত্যা করা হয়েছে। এর অর্থ হলো বিজেপি মণিপুরে ভারতমাতাকে হত্যা করেছে। মণিপুরের জনগণকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে ভারতমাতাকে হত্যা করা হয়েছে। বিজেপি দেশপ্রেমিক নয়, দেশদ্রোহী।’
সদ্য লোকসভার সদস্যপদ ফিরে পেয়েই এসব কঠোর মন্তব্য করলেন রাহুল গান্ধী। রাহুল গান্ধী বলেন, ’মণিপুরে এখনও সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। সহিংসতার পর এখন পর্যন্ত রাজ্যটিতে সফর করেননি নরেন্দ্র মোদি। বস্তুত মণিপুরকে তিনি ভারতের অংশ মনে করেন না।’
কংগ্রেসের সাবেক এই প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, মণিপুরের সহিংসতা সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এক দিনের মধ্যেই বন্ধ করা যেত। কিন্তু সরকার তা চায়নি। মণিপুর আজ ঠিক একটি রাজ্য নয়। এটি ইতোমধ্যে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বিজেপিই এটা করেছে।
মণিপুরের পর হরিয়ানাতেও বিজেপি একই ধরনের কাজ করতে চেষ্টা করেছে বলে মনে করেন কেরেলার ওয়ানাদ জেলা থেকে নির্বাচিত লোকসভার এমপি রাহুল গান্ধী। গান্ধীর অভিযোগ, মণিপুরের পর হরিয়ানাতেও একইভাবে সংঘাত উস্কে দিতে চেষ্টা করেছে বিজেপি সরকার। বিজেপি আজ সারা ভারতেই আগুন লাগাতে চেষ্টা করছে।
মণিপুরের ঘটনা নিয়ে প্রায় দুই মাস পর সম্প্রতি প্রথমবারের মতো মুখ খোলেন নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু তাতেও তিনি সারগর্ভ কিছু বলেননি। এ অবস্থায় দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় মোদিকে বাধ্য করতে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আনে বিরোধীদের জোট ইন্ডিয়া।
মঙ্গলবার লোকসভায় প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন কংগ্রেসের এমপি গৌরব গগৈ। রাহুলের মতো গগৈও অভিযোগ করেন, মোদি সরকার সারা ভারতকে পুড়িয়ে মারছে। আমরা চাই মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নীরবতার অবসান হোক।
স্থানীয় আদালতের একটি আদেশকে কেন্দ্র করে ৩ মে থেকে মণিপুরের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কুকি-জোদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। আদালতের আদেশে কুকি-জোদের মধ্যে মেইতিদেরও তফসিলি সম্প্রদায়ের মতো যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়।
কিন্তু কুকি-জোদের দাবি, মেইতিরা তো সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারা কেন বিশেষ সুবিধা পাবে।
সবচেয়ে বড় শঙ্কা ছিল, বিশেষ সুবিধা দেওয়া হলে কুকি-জো অধ্যুষিত অঞ্চলে মেইতিরাও জায়গা কিনতে পারবে।
সংঘাতে রাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮৭ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে কুকি ১১৫ জন, মেইতি ৬৫ জন। স্থানচ্যুত হয় আরও প্রায় ৬০ হাজার।
অন্যদিকে হরিয়ানার সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় এক ইমামসহ অন্তত সাতজন প্রাণ হারান। জ্বালিয়ে ও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় অনেক দোকান।
সূত্র : স্ক্রলডটইন, আল-জাজিরা।