নাইজারে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সুযোগ মেলেনি বাজুমকে দেখার

নাইজারে গণতান্ত্রিক শাসন পুনরুদ্ধার করতে অভ্যুত্থানকারী সেনা কর্মকর্তাদের চাপ দিতে সেখানে সফরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক।

গত ২৬ জুলাই দেশটির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের কোনো জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক হিসেবে প্রথম ভারপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড নাইজারের রাজধানী নিয়ামে সফর করেছেন।

তিনি সোমবার (৭ আগস্ট) জানিয়েছেন, সামরিক নেতা মুসা সালাউ বারমুসহ আরও তিন কর্নেল পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে তার অকপট ও কঠিন আলোচনা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের অভিজ্ঞ এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা কীভাবে এগিয়ে যেতে চান, সে সম্পর্কে তাদের অবস্থান বেশ দৃঢ় এবং এটি নাইজারের সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’

নাইজারের সেনা কর্মকর্তাদের কাছে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির আলোচনামূলক সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন নুল্যান্ড। তাদের জানিয়েছেন, যদি অভ্যুত্থানকারী নেতারা নাইজারের সাংবিধানিক আদেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক হন, তার দেশ এতে সহায়তা করবে।

যদিও নুল্যান্ড পদচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাজুম এবং বর্তমানে দেশটির সামরিক জান্তা প্রধান আবদুর রাহমানে চিয়ানির সঙ্গেও দেখা করতে চেয়েছিলেন। তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়।

এর আগে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ থেকে অভ্যুত্থানকারী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছিল।

বিভাগের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানান, সামরিক নেতাদের সরে যেতে বলা হয়েছে এবং বাজুমকে ফিরিয়ে এনে সংবিধান পুনর্বহালের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে তাদের জানানো হয়েছে।

যদিও নাইজারের অভ্যুত্থানকারী সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে আপসের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উল্টো যেকোনো সামরিক হুমকি মোকাবিলায় তারা রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধাগোষ্ঠী ওয়াগনারের সহায়তা চেয়েছে। ওয়াগনারও তাদের সহায়তার বিষয়টি বিবেচনা করছে।

এদিকে পশ্চিম আফ্রিকার ১৫টি দেশের জোট ইকোওয়াসের দেওয়া বাজুমকে মুক্তির সময়সীমা শেষ হয়েছে। এখন জোটটি কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে, তা ঠিক করতে বৃহস্পতিবার জোটভুক্ত দেশের নেতারা আলোচনা করবেন।

ফ্রান্স আগেই জানিয়েছিল, ইকোওয়াস যদি কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয়, দেশটি তাতে সমর্থন করবে।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজার একসময় ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। এখনও দেশটিতে প্রায় ১ হাজার ফরাসি সেনা মোতায়েন রয়েছে। সেখান থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিলেও প্যারিস সাফ জানিয়ে দিয়েছে, সেনা সরানোর কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।

এদিকে অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো বাজুমের সঙ্গে বাইরের দেশের কোনো প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাৎ বা যোগাযোগের সুযোগ দিচ্ছে না জান্তা কর্তৃপক্ষ। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি প্রেসিডেন্ট প্রাসাদেই সপরিবারে গৃহবন্দি রয়েছেন।

সূত্র : আলজাজিরা