প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৩ ১৮:১০ পিএম
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৩ ১৮:১১ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২৯ জুলাই পেনসিলভানিয়া একটি সমাবেশে। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী ফল উল্টে দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন দেশটির স্পেশাল কাউন্সেল জ্যাক স্মিথ। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির একটি জেলা আদালতে তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়। এদিন ২০২০ সালের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট মামলায় তার বিরুদ্ধে মোট চারটা অভিযোগ আনা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আর কোনো প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে নির্বাচনী ফল উল্টে দেওয়ার অপচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়নি। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত যতগুলো অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে নতুন এসব অভিযোগ সবচেয়ে গুরুতর।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা চারটা অভিযোগ হলো: এক. যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতারণার ষড়যন্ত্র। দুই. একটা দাপ্তরিক কর্মপ্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়ার ষড়যন্ত্র। তিন. একটা দাপ্তরিক কর্মপ্রক্রিয়ায় বাধা এবং বাধা দেওয়ার চেষ্টা। চার. সাংবিধানিক অধিকার চর্চায় বাধা।
এ চার অভিযোগে ট্রাম্পে মোট ৫৫ বছর কারাদণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোঃপূর্বে দেশটির ফেডারেল আদালতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরও দুটি ফৌজদারি মামলায় বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব মামলায় তার কয়েক শত বছরের জেল হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতের এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে।
গুপ্তচরবৃত্তি আইনের অধীনে গত জুনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাতটি ফৌজদারি অভিযোগে আনেন জ্যাক স্মিথ ও তার সহকারীরা। ২০২১ সালে হোয়াইট হাউস ত্যাগের সময় নিজের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ল্যাসিফাইড নথিপত্র সঙ্গে নিয়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগে।
তার আগে গত মার্চে এক অভিনেত্রীকে অর্থ দিয়ে মুখা বন্ধ রাখার অভিযোগে অভিযুক্ত হন ট্রাম্প। ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে স্টর্মি ড্যানিয়েলস নামের ওই অভিনেত্রীকে মুখ বন্ধ রাখতে অর্থ দিয়েছিলেন রিপাবলিকান এই রাজনীতিবিদ।
গত মঙ্গলবার ৪৫ পাতার অভিযোগপত্রে অভিযোগগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন জ্যাক স্মিথ। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০২০ নালের নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজয়ের ফল মেনে পারছিলেন ট্রাম্প। তিনি নির্বাচন জালিয়াতির অভিযোগ আনে। কিন্তু নিজের দাবির পক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি তিনি।
এরপর ফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করেন ট্রাম্প। এ জন্য তিনি কিছু রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারি কর্মকর্তাদের অবৈধ বিভিন্ন জিনিস করার নিদের্শ দেন। এসব কিছুর মধ্য দিয়ে তিনি নির্বাচনী ফল উল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেন।
২০২০ সালের ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের পর থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এসব ষড়যন্ত্র করে ট্রম্প। এরপর নির্বাচনী ফল দেশটির পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদনের দিন ৬ জানুয়ারি জঘন্যতম কাজটি করেন ট্রাম্প। ওই দিন কংগ্রেসের বিশেষ ওই অধিবেশনের আগে ওয়াশিংটন ডিসিতে এক সমাবেশ করেন তিনি। সেখানে নিজ সমর্থকদের যে কোনো উপায়ে নির্বাচনী জালিয়াতি ঠেকানোর জন্য আহ্বান জানান ৭৭ বছর বয়সি এই রাজনীতিবিদ।
ওই দিন কংগ্রেস ভবন এলাকা ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকেরা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়েন। তারা দেওয়াল টপকে কংগ্রেস ভবনে ঢোকে পড়ে। আইন-শৃঙ্খলা এক ধরনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
এতগুলো ফৌজদারি মামলা সত্ত্বেও ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তিনিই শক্তিশালী প্রার্থী। ট্রাম্প ও তার সমর্থকদের অভিযোগ, আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখতেই এসব মামলা করছে বাইডেন প্রশাসন।
সূত্র : রয়টার্স, গার্ডিয়ান, সিএনএন