হরিয়ানায় সহিংসতা
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৩ ১৫:৫১ পিএম
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৩ ১৬:২১ পিএম
হরিয়ানার নুহ অঞ্চলের সহিংসতার প্রতিবাদে বুধবার, ২ আগস্ট দিল্লিতে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের হরিয়ানার সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল রাজধানী নয়াদিল্লির প্রায় ৩০টি স্থানে বুধবার বিক্ষোভ করেছে। এতে করে রাজধানীতেও সহিংসতা দেখা দিতে পারে এমন শঙ্কা থেকে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েত করতে এবং পর্যাপ্ত সিসিটিভি বসাতে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
বুধবার (২ আগস্ট) ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক নির্দেশনায় বলেন, দিল্লিতে যাতে কোনো ধরনের সহিংসতা না ঘটে, কোনো ঘৃণামূলক বক্তৃতা ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তা নিশ্চিত করতে দয়া করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করুন। পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসান, যাতে করে সবকিছু রেকর্ড থাকে।
সোমবার (৩১ জুলাই) দিল্লির পার্শ্ববর্তী হরিয়ানা রাজ্যের মুসলিম অধ্যুষিত নুহ অঞ্চলের মধ্য দিয়ে হিন্দুদের একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রা যাচ্ছিল। এ অবস্থায় সংঘাতের সূত্রপাত হয়। পরে তা অন্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে।
নুহ অঞ্চলের পর সোমবার রাতেই সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে পাশের জেলা গুরুগ্রামে। সেখানে একটি মসজিদে আগুন দেওয়া হয়। এতে মসজিদের এক সহকারী ইমাম নিহত হন।
হরিয়ানার সহিংসতায় বুধবার পর্যন্ত অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে। নিহতদের দুজন আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য। ইমাম ছাড়া বাকিদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
গুরুগ্রাম ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এখানে গুগল, ডেলয়েট এবং আমেরিকান এক্সপ্রেসসহ অনেক বিখ্যাত বহুজাতিক কোম্পানির কার্যালয় রয়েছে।
বুধবার হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর বলেছেন, নুহ অঞ্চলে যারা সংঘাতের নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের সবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মসজিদে আগুন দেওয়ার ঘটনার পর গুরুগ্রাম ও নুহ অঞ্চলে কারফিউ জারি করা হয়। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সব স্কুল-কলেজ এবং ২ আগস্ট পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
বুধবার স্কুল-কলেজ খুললেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে গুরুগ্রাম ও নুহ অঞ্চলে। অনেক স্কুল-কলেজ সরাসরির পরিবর্তে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে। দোকানপাটও ঠিকঠাকমতো খোলেনি।
গুরুগ্রাম ও নুহ অঞ্চলে কারফিউ অব্যাহত রয়েছে। দিল্লির মতো সেখানেও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল যাতে বিক্ষোভ করতে না পারে সে জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুরুগ্রাম পুলিশের মুখপাত্র সুভাষ বোকেন।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন। বজরং দল পরিষদের ইয়ুথ ফোরাম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও এই দুই সংগঠনের মতাদর্শ প্রায় অভিন্ন।
সূত্র : রয়টার্স, এনডিটিভি, স্ক্রল.ইন