প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য চুক্তি
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৩ ১৮:২৮ পিএম
আপডেট : ২২ জুন ২০২৩ ১৮:৪২ পিএম
নৈশভোজের আগে জো বাইডেন এবং জিল বাইডেনের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্কের সূচনা করার লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য খাতে একাধিক চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন।
ওই চুক্তির নেপথ্যের কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলেছেন, চীনের বৈশ্বিক প্রভাব মোকাবিলার চেষ্টা করছে ওয়াশিংটন।
বুধবার রাতে ওভাল অফিসের আলোচনার পর হোয়াইট হাউসে দুই নেতা একটি ব্যক্তিগত ও অন্তরঙ্গ নৈশভোজের পর বৃহস্পতিবার সকালে হোয়াইট হাউসের রঙিন সাউথ লনে মোদিকে ফের স্বাগত জানান বাইডেন।
কারণ মোদি বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে বাইডেনের সঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে সম্মত হয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ওয়াশিংটন চায় এশিয়ায় চীনের কৌশলগত পাল্টা শক্তি হয়ে উঠুক ভারত। এ ছাড়াও ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখে তারা।
এদিকে প্রতিবেশী চীনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বে প্রভাব বাড়াতে চাচ্ছেন মোদি।
বাইডেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, খনিজ, প্রযুক্তি, মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং আমদানি-রপ্তানি বিষয়ে ঘোষণা করা সুইপিং চুক্তি দুটি দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা করবে।
চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে সরবরাহ চেইনের বৈচিত্র্য আনার লক্ষ্যেও কিছু চুক্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলা করারও চেষ্টা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানিকে ভারতীয় সামরিক বিমানকে শক্তি দিতে ভারতে জেট ইঞ্জিন তৈরি করার একটি চুক্তিতেও দুই নেতা স্বাক্ষর করবেন বলে জানা গেছে। এই চুক্তিকে এক মার্কিন কর্মকর্তা ‘ট্রেলব্লাজিং’ চুক্তি বলে অভিহিত করেছেন।
এ ছাড়াও অন্য একটি চুক্তির আওতায় এই অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজগুলো দুই সরকারের মধ্যে সমঝোতা সামুদ্রিক চুক্তির অধীনে মেরামতের জন্য ভারতীয় শিপইয়ার্ডগুলোতে থামতে সক্ষম হবে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এমকিউ-৯বি সি-গার্ডিয়ান ড্রোন কেনার জন্য ভারতের পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করবেন মোদি।
এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা এখন সত্যিই একটি পরবর্তী প্রজন্মের প্রতিরক্ষা অংশীদারত্বে প্রবেশ করেছি।’
চুক্তিগুলোর মধ্যে মার্কিন চিপ মেকার মাইক্রোন টেকনোলজির একটি নতুন সেমিকন্ডাক্টর টেস্টিং এবং প্যাকেজিং ইউনিটের জন্য ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা মোদির নিজ রাজ্য গুজরাটে নির্মিত হবে।
কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোতে উন্নত আরও অনেক কিছুর চুক্তির সঙ্গে মিলিত মোদির এ সফর আরও বেশিসংখ্যক আমেরিকান সংস্থাগুলোকে ভারতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করতে পারে৷
একই সময়ে বাইডেন ভারতে গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে মোদির সঙ্গে মানবাধিকারের উদ্বেগ উত্থাপন করার পরিকল্পনা করেছেন।
সাংবাদিকদের ব্রিফ করা মার্কিন কর্মকর্তাদের একজন বলেছেন, বাইডেন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করবেন। তবে সেটা সম্মানজনক উপায়ে।
বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের দ্বারা মোদিকে মানবাধিকার ইস্যুতে আলোচনা করার জন্য চাপের মধ্যে রয়েছেন।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে মোদি পাঁচবার যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। তবে সম্পূর্ণ কূটনৈতিক মর্যাদার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সফর এটিই প্রথম।
মঙ্গলবার (২০ জুন) তিনি নিউইয়র্কে টেসলার প্রধান ইলন মাস্কের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
সূত্র : রয়টার্স