প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৩ ২১:৪৪ পিএম
আপডেট : ২০ জুন ২০২৩ ২১:৫৭ পিএম
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি : সংগৃহীত
চলতি সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্র সফরের কথা রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদির। এ সফরের আগে রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান দ্বন্দ্বে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট
করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে তিনি বলেছেন, চলমান
দ্বন্দ্বে ভারত শান্তির পক্ষে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে রওনা দেওয়ার আগে নয়াদিল্লিতে নিজের বাসভবনে ডব্লিউএসজেকে
তিনি বলেন, ‘অনেকে বলে আমরা নিরপেক্ষ। আদপে আমরা নিরপেক্ষ
নই। আমরা শান্তির পাশে আছি। আমি মনে করি, ভারতের অবস্থান সারা বিশ্বে সুপরিচিত এবং ভালোভাবে
বোঝা যায়। বিশ্বের পূর্ণ আস্থা রয়েছে যে ভারতের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার শান্তি।’
তিনি সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, ’সব দেশের উচিত আন্তর্জাতিক আইন ও দেশের
সার্বভৌমত্বকে সম্মান করা, যুদ্ধ নয়, কূটনীতি ও সংলাপের মাধ্যমে বিরোধের সমাধান করা।’
ভারত যদিও এ আক্রমণের নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘে ভোটদানে বিরত ছিল।
সাক্ষাৎকারে নরেন্দ্র মোদি আরও জানিয়েছেন, ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান
শুরুর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির
সঙ্গে কয়েকবার কথা বলেছেন। গত মে মাসে জাপানে অনুষ্ঠিত গ্রুপ অব সেভেনের শীর্ষ সম্মেলনেও
তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘ভারত যা করতে পারে তা করবে। সংঘাতের
অবসান ঘটাতে এবং স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য প্রকৃত প্রচেষ্টাকে
সমর্থন জানাবে।’
সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের অভূতপূর্ব আস্থার সম্পর্কের
কথা বলেছেন মোদি। তিনি দুদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে সম্পর্কের
ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ আখ্যা দিয়েছেন।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক
সম্পর্কের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। দুই দেশের
মধ্যে বাণিজ্য ২০২২ সালে রেকর্ড ১৯১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম
বাণিজ্য অংশীদার এখন ভারত।
ভারত একই সময়ে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ক্রেমলিন
এখনও অস্ত্র, গোলাবারুদ, ট্যাংক, জেট ফাইটার ও এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ
দেশের সামরিক সরঞ্জামের প্রায় ৫০ শতাংশ সরবরাহ করে।
এদিকে চলতি সপ্তাহে মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরে সামরিক খাত, জটিল ও স্পর্শকাতর
প্রযুক্তি খাত বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে।
তার এ সফরেই যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রনিক ভারতে ফাইটার জেটের ইঞ্জিন তৈরির ঘোষণা
দিতে পারে। ভারতের জন্য এটা হবে একটা মাইলফলক।
তা ছাড়া জেনারেল অ্যাটমিকসের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলার মূল্যের ৩১টি
সি-গার্ডিয়ান ড্রোন কেনারও ঘোষণা আসতে পারে। বাইডেন প্রশাসনের বাধার কারণে এসব চুক্তি
ইতঃপূর্বে করা সম্ভব হয়নি।
ভারতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ’মোদির এ সফরে সেমিকন্ডাক্টর,
সাইবারস্পেস, অ্যারোস্পেস, কৌশলগত অবকাঠামো ও যোগাযোগ, বাণিজ্যিক মহাশূন্য প্রকল্প,
কোয়ান্টাম কম্পিউটিংসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে চুক্তি
হবে।’
অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো এবারই ন্যানো প্রযুক্তিসহ কিছু
অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়ে ভারতের সঙ্গে লেনদেন বা বিনিময় করতে যাচ্ছে। ওয়াশিংটন সাধারণত
তার সামরিক মিত্রদের সঙ্গেই এসব বিষয়ে লেনদেন করে থাকে।
সূত্র : এনডিটিভি