প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৩ ০৮:৫২ এএম
আপডেট : ১৫ জুন ২০২৩ ১১:২৮ এএম
সার্বিয়ার হাতে আটক কসোভোর পুলিশ সদস্যদের হাত বেঁধে রাখা হয়েছে। ছবি : সার্বিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
কসোভো সীমান্তের কাছে নিজেদের দেশের অভ্যন্তরে তিন সশস্ত্র কসোভো পুলিশকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে সার্বিয়া কর্তৃপক্ষ। যদিও কসোভো কর্মকর্তারা বলছেন, এই তিন পুলিশকে সীমান্তে টহল দেওয়ার সময় অপহরণ করা হয়েছে।
কসোভোর প্রধানমন্ত্রী আলবিন কুর্তি পুলিশ সদস্যদের অপহরণের জন্য সার্বিয়াকে দায়ী করে বুধবার (১৪ জুন) তাদের মুক্তি দাবি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী কুর্তি জানান, সীমান্তের কাছে কসোভো অঞ্চলের ৩০০ মিটার ভেতর থেকে তাদের আটক করা হয়েছে।
ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে কুর্তি সার্বিয়া বাহিনীর কসোভোর ভেতরে প্রবেশকে আগ্রাসন হিসেবে উল্লেখ করেছেন; যার উদ্দেশ্য হচ্ছে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা।
কসোভোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হেলাল ভেকলা এ ঘটনাকে ‘অপহরণ’ উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন এবং এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছেন।
হেলাল ভেকলা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের পুলিশ কর্মকর্তাদের মুক্তিদান এবং সীমান্তে উস্কানি বন্ধ করার জন্য সার্বিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
এ গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়ায় কসোভোয় সার্ব নম্বরপ্লেটযুক্ত গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুসিক বলেছেন, তিন কসোভো পুলিশকে সার্বিয়ার গিনজিলিকা গ্রামের কাছে সার্ব অঞ্চলের ১.৮ কিলোমিটার ভেতরে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি কসোভোর প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হিংসা উস্কে দেওয়ারও অভিযোগ করেছেন।
একটি লাইভ টিভি সম্প্রচারে ভুসিক বলেন, ‘বলকান অঞ্চলে এমন একজন ব্যক্তি আছেন, যিনি যেকোনো মূল্যে সংঘাত উস্কে দিতে চান এবং তিনি হলেন আলবিন কুর্তি।’
সার্বিয়ার পুলিশ কসোভোয় প্রবেশ করেছে— আলবিন কুর্তির এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ভুসিক বলেন, ‘তারা সেখানে একটি পা-ও রাখেনি।’
সার্বিয়ার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, আটক অফিসাররা অস্ত্রশস্ত্র, অন্যান্য সরঞ্জামসহ সম্পূর্ণ সামরিক গিয়ারে সজ্জিত ছিল। তাদের কাছে জিপিএস ডিভাইস ও মানচিত্রও ছিল।
সার্বিয়ার পুলিশ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে মুখোশধারী সেনাদের আটক কসোভো পুলিশদের হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
ভুসিক জানিয়েছেন, এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তেও আপত্তি নেই তার। এ ছাড়া উত্তেজনা আর বাড়াতেও চাইছেন না বলে দাবি করেছেন তিনি। এরই মধ্যে উত্তেজনা কমিয়ে আনতে সীমান্ত অঞ্চলে মোতায়েন সার্ব সেনাদের একটি অংশকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
যদিও এই পুলিশ আটকের ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
সম্প্রতি কসোভোর সার্ব অধ্যুষিত চারটি পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে জাতিগত আলবেনীয় ও সার্বদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এর থেকে সৃষ্ট সংঘাতের ঘটনায় প্রায় ৩০ ন্যাটো সেনা আহতও হয়েছেন। এরই মধ্যে নতুন করে টার্কিশ কমান্ডো ইউনিটের একটি দলকেও কসোভোয় মোতায়েন করা হয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা