প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৩ ১৩:৪৪ পিএম
আপডেট : ১২ জুন ২০২৩ ১৪:০২ পিএম
খার্তুমে গোলাবর্ষণের কারণে ভবন থেকে কালো ধোঁয়া উড়ছে। ছবি : সংগৃহীত
২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর রবিবার (১১ জুন) সুদানে ফের ভয়াবহ লড়াই শুরু হয়েছে।
দেশটিতে প্রায় আট সপ্তাহ আগে সেনাবাহিনী এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) ক্ষমতা দখলের লড়াই শুরু হয়।
রবিবার সকালে যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে সুদানের বিভিন্ন অংশে বিমান হামলা, আর্টিলারি গোলাবর্ষণ ও মেশিনগানের আওয়াজ শুনতে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সুদানের আলজাজিরার প্রতিবেদক হিবা মর্গান।
রবিবার ফের লড়াই শুরুর কারণে খার্তুমে ৭ বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রবিবার শুরু হওয়া লড়াই বেশ তীব্র হয়েছে বলে জানা গেছে। কারণ সুদানের সেনাবাহিনী আরএসএফ ঘাঁটির বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করেছে।
হিবা মর্গান জানিয়েছেন, যেসব এলাকায় লড়াই চলছে সেসব এলাকার বাসিন্দারা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওমদুরমানের উত্তরে, চাদের সীমান্তের কাছে এল-জেনিনায় এবং খার্তুমের দক্ষিণ-পশ্চিমে উত্তর কোর্দোফান রাজ্যের রাজধানী এল-ওবেইদে ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি জারি করা হয়েছিল, যাতে সারা দেশে অত্যাবশ্যকীয় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো সহজতর হয়। এটিও আশা করা হয়েছিল যে, এই যুদ্ধবিরতি চলমান লড়াই থামিয়ে দেবে।
মর্গান বলেন, ২৪ ঘণ্টা যুদ্ধবিরতি চলাকালীন কিছু সাহায্য গোষ্ঠী অভাবীদের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু রাজধানীর উত্তরাঞ্চলে সহায়তাহীন মানুষ আটকা পড়ে আছে।
অন্যদিকে পশ্চিম দারফুরের পরিস্থিতিকে ‘বিপর্যয়কর’ হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে।
বিশেষ করে, এল-জেনিনা কয়েক সপ্তাহ ধরে যোগাযোগ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে। সেখানে আরএসএফের সঙ্গে লড়াইয়ে যোগ দিয়েছে আরব যাযাবর উপজাতিরা।
মর্গান বলেন, এই উপজাতি মিলিশিয়ারা বেসামরিক মানুষকে টার্গেট করছে। পশ্চিম দারফুর ডাক্তারদের সিন্ডিকেট এই হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যার সমান বলেছে।
সুদানের সীমান্তে চাদিয়ান শহর আদ্রেতে আলজাজিরার প্রতিবেদক জেইন বসরাভির মতে, সহিংসতার কারণে গত সপ্তাহে লোকেরা প্রতিবেশী চাদে পালিয়েছে। এটি ছিল কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা।
এল-জেনিনা থেকে আদ্রেতে পালিয়ে আসা আব্দুল করিম হারুন বলেন, তাকে মারধর করা হয়েছিল এবং ওই যাত্রায় তিনি তার ভাইকে হারিয়েছেন।
দারফুরের প্রধান রুট এল-ওবেইদ অবরোধের মধ্যে রয়েছে বলে জানা গেছে।
বাসিন্দারা বলছেন খাদ্য ও ওষুধের সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে।
উত্তর কোর্দোফানের বাসিন্দা মোহাম্মদ সালমান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘পরিস্থিতি কঠিন। আরএসএফ গ্রামের মাঝখানে রাস্তায় ছড়িয়ে আছে এবং তারা লুটপাট করছে। তাই জায়গা বদল করা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। জানি না আমরা কীভাবে এই পরিস্থিতিতে বাস করব।’
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার অনুমান অনুসারে, সুদানে ১৪ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৮০০ মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে।
সূত্র : আলজাজিরা