প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৩ ১২:৪৭ পিএম
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৩ ১৩:০৬ পিএম
‘মিরর গ্রুপ অব নিউজপেপারস’ নামক সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন যুবরাজ হ্যারি। ছবি : সংগৃহীত
ব্রিটেনের স্বনামধন্য ‘মিরর গ্রুপ অব নিউজপেপারস’ নামক সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে খবর প্রচার করা ও ফোনে আড়ি পাতার মামলা করেছিলেন যুবরাজ হ্যারি।
ওই মামলায় সোমবার (৫ জুন) ব্রিটেনের হাইকোর্টে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল হ্যারির। কিন্তু মামলার প্রথম দিনের শুনানিতেই আদালতে উপস্থিত হননি তিনি। হ্যারির এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েছেন বিচারক।
হ্যারির আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন, মেয়ের জন্মদিন নিয়ে ব্যস্ত হ্যারি, তাই আদালতে আসতে পারেননি।
তার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, রবিবার রাতে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে বেরিয়েছেন হ্যারি। কিন্তু সোমবার দুপুরের মধ্যে কিছুতেই আদালতে পৌঁছাতে পারেননি তিনি।
কিন্তু এ ধরনের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় কোর্ট। আদালতের পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছিল, মঙ্গলবার (৬ জুন) বিকাল ৩টার মধ্যে কোর্টে উপস্থিত হতে হবে হ্যারিকে। এরপর শুরু হবে মামলার শুনানি।
মঙ্গলবার হ্যারির কাছে থাকা প্রমাণ আদালতে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজকুমারের অনুপস্থিতিতে পুরো বিষয়টিই আর এগোয়নি।
বিচারপতি ফ্যানকোর্ট প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ না করলেও বলেছেন, ‘আমি একটু বিস্মিত হয়েছি।’
মিরর গ্রুপের আইনজীবী অ্যান্ড্রু গ্রিন বলেন, ‘বিরল ব্যাপার। হ্যারির নিজের করা মামলার শুনানিতে উনি নিজেই থাকতে পারছেন না।’
বেশ কয়েকজন সেলিব্রেটির পাশাপাশি হ্যারিও মিরর গ্রুপের বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে খবর সংগ্রহের মামলা করেছিলেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছিল, ১৯৯৫ থেকে ২০১১ সালÑ এই সময়ে সংবাদ সংস্থাটি আইন ভেঙে যুবরাজ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছিল। তার ফোনে আড়ি পেতেছিল নিয়মিত এবং সে কথা সংস্থাটির সম্পাদক ও অন্য শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা সবাই জানতেন।
অনৈতিকভাবে সংগ্রহ করা খবরের ভিত্তিতে লেখা ১৫০টি প্রতিবেদনের বিষয়ে আদালতকে জানিয়েছেন হ্যারির আইনজীবী। ডেইলি মিরর, সানডে মিরর ও দ্য পিপলে প্রকাশিত ৩৩টি প্রতিবেদন পরীক্ষা করে দেখবেন বিচাররক।
খবরগুলোর বেশিরভাগই হ্যারির ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে। বড় ভাই উইলিয়ামের সঙ্গে তার প্রাক্তন প্রেমিকার ঝগড়া, হ্যারির পার্টি করা ইত্যাদি।
মিররের একটি প্রবন্ধের বিষয় ছিল, ১৯৯৬ সালে হ্যারির ১২ বছরের জন্মদিনে তার মা রাজকুমারী ডায়ানা মাত্র ২০ মিনিট সময় কাটিয়েছিলেন ছেলের সঙ্গে।
২০০০ সালের নভেম্বরের একটি প্রতিবেদনের বিষয় ছিল, ফুটবল খেলতে গিয়ে চোট লেগেছে হ্যারির। তার জন্য ছোট একটি অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে হাতে। তবে সবচেয়ে আলোচিত প্রতিবেদনের বিষয়ই ছিল, হ্যারির প্রেম, প্রাক্তন প্রেমিকা চেলসি ডেভির সঙ্গে তার সম্পর্ক ও বিতর্ক বিষয়ক।
এ মামলার সূত্রে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের কোনো সদস্য প্রথম কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য দেবেন। মামলা লড়তে মিরর গ্রুপও তাবড় আইনজীবীদের নিয়োগ করেছে।
অনেকেরই আশঙ্কা, রীতিমতো অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে হ্যারিকে। কারণ অনেক বিতর্কিত বিষয়েই লেখা হয়েছিল মিররে। যেমন একবার পার্টিতে নাৎসি পোশাক পরে গিয়েছিলেন হ্যারি, মাদক নেওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন নিজের মুখে। সেসব প্রসঙ্গ ফের উঠে আসবে।
এ মামলা নিয়ে রাজ পরিবারও কিছুটা আতঙ্কে রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে রাজ পরিবারের সঙ্গে হ্যারির সম্পর্ক মোটেই সহজ নেই। কোন গোপন বিষয় সামনে চলে আসবে, তা নিয়ে চিন্তায় তারা।
তবে অস্বস্তি এড়াতে আদালতের বাইরে মামলার নিষ্পত্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল হ্যারিকে। তিনি নিজেই কোর্টের রাস্তা বেছে নিয়েছেন।
সূত্র : নিউইয়র্ক পোস্ট