প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩ ১৩:২৯ পিএম
আপডেট : ০৩ জুন ২০২৩ ১৪:১৩ পিএম
সিআইএ-প্রধান উইলিয়াম বার্নস। ছবি : সংগৃহীত
বেইজিং এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে যোগাযোগ উন্নত করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র প্রধান উইলিয়াম বার্নস গত মাসে গোপনে চীন সফর করেছেন বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা ওই গোপন সফরের খবর নিশ্চিত করেছেন।
মে মাসে বেইজিং সফরে বার্নস চীনা প্রতিপক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে।
ওই সফর সম্পর্কে প্রথম প্রতিবেদনে দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছিল, চলমান উত্তেজনা শীতল করার লক্ষ্যে এবং দুই বৈশ্বিক শক্তির মধ্যে ভুল যোগাযোগ দুর্ঘটনাক্রমে সংঘর্ষে পরিণত হতে পারে এমন আশঙ্কার মধ্যে যোগাযোগের পথ পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় বার্নস ওই সফর করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের বিভিন্ন শীর্ষ কর্মকর্তার মধ্যে যোগাযোগ এবং সময়সূচি বৈঠক পুনরুদ্ধারের জন্য চাপ দেওয়ার পর সিআইএ-প্রধানের ওই চীন সফরের খবর প্রকাশ্যে আসে।
এক মার্কিন কর্মকর্তা শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘গত মাসে পরিচালক বার্নস বেইজিং ভ্রমণ করেছিলেন। সেখানে তিনি চীনা সমকক্ষদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং গোয়েন্দা চ্যানেলগুলোয় যোগাযোগের পথ উন্মুক্ত রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।’
বার্নস চীনা গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেও বেইজিংয়ের রাজনৈতিক বা পররাষ্ট্রনীতির কোনো নেতার সঙ্গে আলোচনা করেননি। এ সফরে তার সঙ্গে পরিচিত এক দ্বিতীয় ব্যক্তি ছিলেন। তবে তার নাম প্রকাশ করেননি ওয়াশিংটনের ওই কর্মকর্তা।
সিআইএ কখনোই এ ধরনের সফরের ঘোষণা দেয় না। তাই বার্নসের চীন সফরের প্রতিবেদনে মন্তব্য করতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে সংস্থাটি।
তাইওয়ান ও চীনের মানবাধিকার রেকর্ড থেকে শুরু করে দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান সামরিক তৎপরতা এবং রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়ে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বেইজিং এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্ক গুরুতর চাপের মধ্যে রয়েছে।
ইউক্রেনে আগ্রাসনের সমর্থনে মস্কোকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার কথা বিবেচনা করার জন্যও চীনকে অভিযুক্ত করেছে ওয়াশিংটন। যদিও চীন সেসব দাবি অস্বীকার করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ফেব্রুয়ারিতে একটি কূটনৈতিক ঝড়ের মধ্যে চীনে তার পরিকল্পিত সফর স্থগিত করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় কথিত চীনা গুপ্তচর বেলুনের প্রবেশ এবং ভূপাতিত করার ঘটনায় চীন সফর স্থগিত করেন ব্লিঙ্কেন।
এ ছাড়া শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন সিঙ্গাপুরে একটি নিরাপত্তা শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে চীনের জাতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শ্যাংফুর সঙ্গে করমর্দন করেছেন। তবে উভয়ের মধ্যে ‘মূল বিষয়ে ভাববিনিময় হয়নি’ বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
চীন এর আগে অস্টিন ও লি’র মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠক প্রত্যাখ্যান করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে যে, গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সঙ্গে যোগাযোগের লাইন সচল রাখা অপরিহার্য। আমরা যত বেশি কথা বলব, তত বেশি ভুল বোঝাবুঝি এবং ভুল হিসাব এড়াতে পারব। যোগাযোগ বন্ধ হলে পরিস্থিতি সংকট বা সংঘাতের দিকে যেতে পারে।’
পৃথকভাবে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান শুক্রবার বলেছেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে পূর্বশর্ত ছাড়াই চীনের সঙ্গে যুক্ত হতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বেইজিং অনিচ্ছুক।’
আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের একটি বক্তৃতায় সুলিভান আরও বলেন, ‘সোজা কথায় বলতে গেলে সম্পর্কের বিস্তৃত ইস্যুগুলো থেকে কৌশলগত স্থিতিশীলতাকে ভাগ করে নেওয়ার জন্য আমরা এখনো চীনের সদিচ্ছা দেখতে পাইনি। অথচ এটি পারমাণবিক এবং কৌশলগত সুরক্ষার ভিত্তি ছিল। আমরা দেখব বেইজিং কোন পথ বেছে নেয়।’
সূত্র : আলজাজিরা